‘যেসব রোহিঙ্গা ফেরত আসতে চান তাদের শরণার্থী মর্যাদা যাচাইয়ে প্রস্তুত মিয়ানমার’
যেসব রোহিঙ্গা ফিরে যেতে চান তাদের শরণার্থী হিসেবে মর্যাদা (রিফিউজি স্ট্যাটাস) যাচাই করতে প্রস্তুত মিয়ানমার। নীরবতা ভেঙে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে এ কথা বলেছেন মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সুচি। জাতিসংঘ সহ সারাবিশ্ব রাখাইনে রোহিঙ্গা জাতি নিধনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার পর মঙ্গলবার নীরবতা ভেঙে এসব কথা বলেন তিনি। তার এ ভাষণ টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। বক্তব্যে দৃশ্যত তিনি রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তবে কতজনকে ফেরত নেবেন তা নিশ্চিত নয় এবং ফেরত নিলেও তাদেরকে দৃশ্যত নাগরিকত্ব দেয়া হবে না। কারণ, তিনি তাদের শরণার্থী হিসেবে মর্যাদা যাচাই করে দেখতে প্রস্তুতির কথা বলেছেন। অর্থাৎ ফেরত নিলেও রোহিঙ্গাদের নেয়া হতে পারে শরণার্থী হিসেবে।
তার দেয়া বক্তব্যের হাইলাইটস ও সময় উল্লেখ করে তুলে ধরেছে ভারতের অনলাইন দ্য হিন্দুস্তান টাইমস। এখানে তা তুলে ধরা হলো:
সকাল ৯টা ৬ মিনিট: মিয়ানমার একটি জটিল দেশ। যত কম সময়ে সম্ভব সব সমস্যা আমরা সমাধান করে ফেলি মানুষ তাই চায়।
সকাল ৯টা ৭ মিনিট: আমি আপনাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি যে, এমনকি ১৮ মাস আমাদের সরকার ক্ষমতায় ছিল না।
সকাল ৯টা ৮ মিনিট: আভ্যন্তরীণ সংঘাতের প্রায় ৭০ বছর পরে আমরা শান্তি ও স্থিতিশীলতা অর্জন করেছি।
সকাল ৯টা ৯ মিনিট: সব রকম মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং ওইসব কার্যকলাপ যাতে আইনের শাসন খর্ব হয়েছে তার নিন্দা জানাই আমরা।
সকাল ৯টা ১০ মিনিট: আন্তর্জাতিক স্ক্রুটিনিতে ভীত নয় মিয়ানমার। রাখাইন রাজ্যে টেকসই সমাধান প্রতিষ্ঠায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ মিয়ানমার।
সকাল ৯টা ১১ মিনিট: রাখাইনে সব গ্রুপের মানুষের দুর্ভোগের জন্য গভীরভাবে মর্মাহত মিয়ানমার। মুসলিমরা পালিয়ে বাংলাদেশে চলে গিয়েছেন তা জানতে পেরে উদ্বেগ প্রকাশ করছে।
সকাল ৯টা ১২ মিনিট: ২৫ শে আগস্ট পুলিশের ৩০টি পোস্টে হামলা হয়। এর প্রেক্ষিতে সরকার আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মিকে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ হিসেবে ঘোষণা দেয়।
সকাল ৯টা ১৩ মিনিট: কেন দলে দলে মানুষ দেশ ছেড়ে যাচ্ছে তার কারণ অনুসন্ধান করবো আমরা। যারা পালিয়ে গেছেন তাদের সঙ্গে কথা বলবো।
সকাল ৯টা ১৫ মিনিট: রাখাইনে বসবাসরত সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সম্প্রীতি ফেরাতে সরকার সব রকম প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
সকাল ৯টা ১৬ মিনিট: এখনও অনেক মুসলিম গ্রামবাসী (রাখাইনে) রয়ে গেছেন। সবাই পালিয়ে যান নি। (পরিস্থিতি দেখতে) আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সদস্যদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।
সকাল ৯টা ১৭ মিনিট: (রোহিঙ্গাদের) ফিরে আসায় সহযোগিতা করতে যেকোনো সময় তাদের শরণার্থী মর্যাদা যাচাই করতে প্রস্তুত মিয়ানমার।
সকাল ৯টা ১৮ মিনিট: আমরা রাখাইনে আইনের শাসন বাস্তবায়ন ও উন্নয়নে একটি কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করেছি।
সকাল ৯টা ১৯ মিনিট: অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ আছে। আমাদেরকে সবার কথা শুনতে হবে। ধর্মীয় পরিচয়ের বাইরে গিয়ে (দোষী) সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সকাল ৯টা ২০ মিনিট: সুচি বলেছেন, তিনি (জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব) কফি আনানকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন একটি কমিশনের নেতৃত্ব দিতে, যারা রাখাইনে দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত সমস্যা সমাধানে আমাদের সাহায্য করবে।
সকাল ৯টা ২১ মিনিট: গত বছরজুড়ে আমরা আমাদের উন্নয়নমূলক কর্মসূচি ও শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।
সকাল ৯টা ২২ মিনিট: বিশ্ব যেন আমাদেরকে একটি পূর্ণাঙ্গ দেশ হিসেবে দেখে আমরা এমনটাই প্রত্যাশা করি। তারা যেনো এটাকে দুর্দশাগ্রস্ত হিসেবে না দেখে।
সকাল ৯টা ২৪ মিনিট: আমি বিশ্বাস করি মূল দায়িত্ব হলো এ দেশের জনগণের ওপর। আমরা চাই আমাদের বন্ধুরা আমাদের সঙ্গে যোগ দিন অথবা সহায়তা করুন। আমরা আপনাদের নিরাপত্তা দেবো।
সকাল ৯টা ২৬ মিনিট: আমাদের বিশ্বে যন্ত্রণার সবচেয়ে বড় কারণ হলো ঘৃণা ও আতঙ্ক।
সকাল ৯টা ২৮ মিনিট: আমরা চাই না মিয়ানমারের জাতি ধর্মীয় বিশ্বাস বা জাতিগতভাবে বিভক্ত হয়ে পড়ুক।