পাঁচজনে একজন ব্রিটিশ পুরুষ যৌন হয়রানির শিকার
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ যুক্তরাজ্যে কর্মক্ষেত্রে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় অর্ধেক নারী যৌন হয়রানির শিকার হন। একই জায়গায় প্রতি পাঁচজনে একজন পুরুষ যৌন হয়রানির শিকার হন বলে বিবিসির এক জরিপে বলা হয়েছে।
আজ বুধবার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিবিসি সম্প্রতি ‘দ্য কমরেস পোল’ নামে যুক্তরাজ্যে নারী ও পুরুষদের যৌন হয়রানি নিয়ে এই জরিপ চালায়। বিবিসির রেডিও ফাইভের একটি লাইভ অনুষ্ঠানে ‘দ্য কমরেস পোলের’ অংশ হিসেবে দুই হাজারের বেশি মানুষের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলা হয়।
জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়, নারীরা স্বীকার করেছেন যে তাঁরা কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির শিকার হন। যৌন হয়রানির শিকার হওয়া ৬৩ শতাংশ নারী এ ব্যাপারে কারও কাছে অভিযোগ করেননি। আর একইভাবে যৌন হয়রানির শিকার হওয়া ৭৯ শতাংশ পুরুষ বিষয়টি একদম গোপন রেখেছেন।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিবিসির রেডিও ফাইভের জরিপে ২০৩১ জন প্রাপ্তবয়স্ক নারী ও পুরুষের সঙ্গে কথা বলা হয়। তাঁদের মধ্যে ৫৩ শতাংশ নারী ও ২০ শতাংশ পুরুষ জানিয়েছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে তাঁরা নানাভাবে যৌন নির্যাতনসহ হয়রানির শিকার হয়েছেন। জরিপে অংশ নেওয়া এক-চতুর্থাংশের বেশি নারী-পুরুষ ঠাট্টাচ্ছলে যৌন হয়রানির শিকার হন। আর প্রতি সাতজনে একজন বিরক্তিকর স্পর্শের মাধ্যমে হয়রানির শিকার হন।
জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়, অফিসের বস বা জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপকদের কাছে ৩০ শতাংশ নারী ও ১২ শতাংশ পুরুষ যৌন হয়রানির শিকার হন। আর হয়রানির শিকার হওয়া প্রতি ১০ জনে একজন নারী জানিয়েছেন, যৌন হয়রানি থেকে মুক্তি পেতে তাঁদের কর্মক্ষেত্র বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিবর্তন করতে হয়েছে।
কেমব্রিজের সারাহ কিলকোয়নে নামের এক নারী বলেছেন, তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুবার যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। প্রথমবার কিশোরী বয়সে স্কুলশিক্ষকের কাছে আর দ্বিতীয়বার কলেজের এক অধ্যাপক তাঁকে যৌন নির্যাতন করেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন পুরুষ বলেন, কর্মক্ষেত্রে একজন নারী বস তাঁকে যৌন নির্যাতন করেছেন। তিনি বলেন, ‘তিনি (নারী বস) নিয়মিত আমার প্রশংসা করতেন। পোশাক ও চেহারা নিয়ে কথা বলতেন। এটা দেখে অন্য নারী সহকর্মীরা হাসাহাসি করতেন। আর এ বিষয়টি নোংরা মনে হতো। আমি বিব্রতবোধ করতাম। আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছিলাম। যার কারণে উদ্বেগ আমাকে গ্রাস করেছিল।’
হলিউডের প্রযোজক হার্ভে ওয়েনস্টেইনের বিরুদ্ধে সম্প্রতি যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠার পর সারা বিশ্বে ঘটে যাওয়া যৌন হয়রানির ঘটনাগুলো সামনে চলে আসছে। যেসব নারী ও পুরুষ যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন তাঁরা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে হ্যাশট্যাগ ‘#মি টু’ দিয়ে সেই তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা প্রকাশ করছেন। নারীরা হার্ভে ওয়েনস্টেইনের বিরুদ্ধে ধর্ষণসহ যৌন হয়রানির দুই ডজনের বেশি অভিযোগ করেছেন। অভিযোগকারীদের মধ্যে অ্যাঞ্জেলিনা জোলি, গিনেথ প্যালট্রো ও রোজ ম্যাকগোয়ানের মতো তারকারা রয়েছেন।