‘প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ বাংলাদেশের জন্য অশনি সংকেত ‘
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃবাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা ছুটিতে থাকা অবস্থায় যেভাবে পদত্যাগ করে সরে গেলেন, তাকে এক ‘নজিরবিহীন’ ঘটনা বলে বর্ণনা করেছেন সাবেক একজন আইনমন্ত্রী।
আওয়ামী লীগেরই নেতৃত্বাধীন পূর্ববর্তী সরকারের আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে সামরিক শাসনের সময় একজন বিচারপতিতে সরিয়ে দিয়েছিলেন জেনারেল এরশাদ। এই একটি ইতিহাস আছে। কিন্তু তাছাড়া প্রধান বিচারপতি ছুটিতে গেলে পরবর্তীতে এভাবে পদত্যাগপত্র দাখিলের আর কোন নজির নেই।”
প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার এক মাসেরও বেশি সময়ের জন্য নেয়া ছুটির শেষদিনটি ছিল শুক্রবার। ফলে তিনি দেশে ফিরে কাজে যোগ দেবেন নাকি ছুটি আরো বাড়াবেন সে নিয়ে আলোচনার মাঝেই শনিবার জানা গেল রাষ্ট্রপতি বরাবরে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন তিনি।
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং সরকারের কাছ থেকে তীব্র চাপের মুখে বিচারপতি এস কে সিনহা দেশ ছেড়ে যান বলে অভিযোগ রয়েছে।
মূলত বিচারপতি সিনহা ও সরকারের সম্পর্কের টানাপড়েন শুরু হয় সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে। অসদাচরণ ও অযোগ্যতার কারণে সর্বোচ্চ আদালতের বিচারকদের বরখাস্ত করার ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে দেওয়ার বিষয়ে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল সংক্রান্ত হাই কোর্টের রায় বহাল রেখে আপিল বিভাগ রায় দেয় জুলাই মাসে। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয় গত পয়লা আগস্ট ।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশের রাজনীতি ও সংসদ সদস্যদের নিয়ে প্রধান বিচারপতির করা মন্তব্যকে ঘিরে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেন সরকারের মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতারা এবং তারা প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের দাবি তোলেন।
এদিকে প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের খবরে বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপির পক্ষ থেকে যে প্রতিক্রিয়া দেয়া হয়েছে তাতে একে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার ওপর আঘাত হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। বিএনপি নেতারা বলছেন সরকার বাধ্য করেছেন প্রধান বিচারপতিকে তার পদ থেকে সরে যেতে।