বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের দুর্দশা দেখলেন বরিস জনসন
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ মিয়ানমার সামরিক বাহিনী ও উগ্রপন্থি সশস্ত্র রাখাইন জনগোষ্ঠী কর্তৃক বর্বরোচিত ও লোমহর্ষক নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে নির্যাতিত রোহিঙ্গারা বলেন, তাদের নাগরিক অধিকার, পড়ালেখা, অবাধ চলাচল, নিরাপদ বাসস্থানসহ ভোটাধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত করে মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে হবে। তা না হলে আবার যেকোনো অজুহাতে রোহিঙ্গাদের নির্যাতনের মুখে পড়তে হবে। গতকাল দুপুর দেড়টায় বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন উখিয়ার কুতুপালং টিভি রিলে কেন্দ্র এলাকায় স্থাপিত ট্রানজিট ক্যাম্পে নির্যাতনের ব্যাপারে জানতে চাইলে রোহিঙ্গারা এসব কথা বলেন। এ সময় রোহিঙ্গারা বলেন, প্রত্যাবাসনের পরপরই তাদের পারিবারিক বসতভিটায় ফিরে যাওয়ার অনুমতি দিতে হবে এবং তাদের যা যা ক্ষতি হয়েছে ওইসব ক্ষতিপূরণসহ মৌলিক অধিকার নিয়ে মিয়ানমারে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাসের সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে। রোহিঙ্গাদের অমানবিক নির্যাতনের কথা শুনে বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। এ সময় তিনি রোহিঙ্গাদের উদ্দেশে বলেন, বৃটিশ সরকার রোহিঙ্গা সংকটের শুরু থেকেই বাংলাদেশের পাশে আছে।ভবিষ্যতেও রোহিঙ্গাদের যেকোনো ধরনের সমস্যা সমাধানে বৃটিশ সরকার পাশে থেকে কাজ করে যাবে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা যাতে সে দেশে ফিরে গিয়ে তাদের মৌলিক অধিকার ভোগ করতে পারে সে ব্যাপারে আন্তর্জাতিক বিশ্বের পাশাপাশি বৃটিশ সরকার একমত পোষণ করে মিয়ানমারের প্রতি চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রেখেছে। যে কারণে মিয়ানমার সরকার আগের তুলনায় অনেকটা নমনীয় হয়ে এসেছে। পরে বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে সেখানে বিভিন্ন এনজিও সংস্থার সেবা কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করেন। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাম্প ত্যাগ করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, ঢাকায় নিযুক্ত বৃটিশ হাইকমিশনার এলিসন ব্লেইক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উখিয়া সার্কেল) চাউলাউ মার্মাসহ সরকারি উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন এনজিও সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ।
দু’দিনের সফরে শুক্রবার ঢাকায় আসেন বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন। সফরকালে তিনি রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবাসনের পক্ষে মত প্রকাশ করে বলেন, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দেরি হলে এই ইস্যু হয়তো জটিল হতে পারে। এ ছাড়াও মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া প্রত্যক্ষ করার সুযোগ দেয়া উচিত বলে মনে করেন। এখান থেকে ফিরে বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমার সফরে যাবেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।