ব্রিটেনে চাপের মুখে ফেসবুক, সরকারি হুঁশিয়ারি-মামলা
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃব্রিটেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেরেমি হান্ট জানিয়েছেন শিশুদের সুরক্ষা নিয়ে “চোখ বুজে” থাকলে চলবে না বলে হুঁশিয়ারি জানিয়ে ফেসবুক সহ অন্যান্য কিছু সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিকে চিঠি লিখেছেন তিনি।
জানা গেছে, ফেসবুক ছাড়াও গুগল, টুইটার, হোয়াটস অ্যাপের মত ইন্টারনেট কোম্পানিগুলোকেও এই চিঠি পাঠানো হয়েছে।
মন্ত্রীর ঐ চিঠিতে বলা হয়েছে – কম বয়সী শিশুদের অ্যাকাউন্ট খোলা বন্ধ এবং অনলাইনে শিশুদের হয়রানি বন্ধের ব্যাপারে তাদের সুনির্দিষ্ট কর্ম-পরিকল্পনা এ মাসের মধ্যে এসব কোম্পানিকে সরকারকে বলতে হবে।
সেইসাথে শিশুরা যাতে বেশিক্ষণ এসব সাইটে সময় না কাটায় সে ব্যবস্থা করারও দাবি জানানো হয়েছে।
ব্যর্থ হলে কঠোর আইন প্রণয়নের হুমকি দিয়েছেন ব্রিটিশ মন্ত্রী।
সবচেয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে কমবয়সী শিশুদের এসব সোশ্যাল মিডিয়াতে অ্যাকাউন্ট খোলা নিয়ে।
ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার এবং স্ন্যাপচ্যাটে অ্যাকাউন্ট খোলার সর্বনিম্ন বয়স ১৩। হোয়াটস অ্যাপ এবং ইউটিউবও একই বয়স-সীমা অনুসরণ করে।
কিন্তু বিস্তর অভিযোগ রয়েছে, এর চেয়ে অনেক কমবয়সীরাও বয়স ভাঙ্গিয়ে এসব সাইটে দেদারসে অ্যাকাউন্ট খুলছে।
মন্ত্রী জেরেমি হান্ট তার চিঠিতে লিখেছেন,” আমি উদ্বিগ্ন যে হাজার হাজার শিশু বয়স-সীমা নিয়ে তোমাদের নীতি ভঙ্গ করে চলছে, এবং তা নিয়ে তোমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই।”
“আমার আশঙ্কা একটা পুরো প্রজন্ম অল্প বয়সে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঢুকে ক্ষতিকর মানসিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে , এবং তোমরা (সোশ্যাল কোম্পানি ) সবাই একযোগে এ নিয়ে চোখ বন্ধ করে আছো।”
তবে এখানকার শিশু অধিকার প্রতিষ্ঠানগুলোর বলছে, এরকম চিঠি দিয়ে কোনো কাজ হবেনা, কঠোর আইন এনে এসব সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানিগুলোকে বাধ্য করতে হবে।
ব্রিটেনে অনলাইনে হয়রানি বন্ধে কাজ করে এমন একটি হেল্প লাইন এক বিবৃতিতে বলছে – ফেসবুকের মত সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্টদের স্বেচ্ছায় শোধরানোর পরামর্শ দিয়ে কোনো কাজ হবেনা।
ফেসবুকের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ মামলা
সোশ্যাল মিডিয়াতে শিশু সুরক্ষা নিয়ে সরকারি হুমকির খবর নিয়ে আলোচনা-বিতর্ক যখন জোরদার হচ্ছে, সেসময় ফেসবুকের বিরুদ্ধে বিপুল অঙ্কের ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে একটি মামলা হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
মামলাটি আনছেন ব্রিটেনের স্বানামধন্য ভোক্তা পরামর্শক প্রতিষ্ঠান মানিসেভিংএক্সপার্টডটকমের প্রতিষ্ঠাতা মার্টিন লিউয়িস।
এক বিবৃতিতে তিনি জানিয়েছেন, তার সুনাম কাজে লাগিয়ে প্রতারণা করতে ফেসবুকে অজানা অখ্যাত অন্তত ৫০টির মত ভুয়া প্রতিষ্ঠান তাদের বিজ্ঞাপনে তার নাম এবং ছবি ব্যবহার করেছে।
মি, লিউয়িস বলছেন তার নাম দেখে বহু মানুষ এসব ‘ভুয়া’ বিনিয়োগ ফান্ডে লাখ লাখ ডলার বিনিয়োগ করে ঠকছে। প্রতারিত অনেকে এখন তার কাছে পয়সা ফেরত চাইছে।
তিনি বলেন, বার বার এ নিয়ে ফেসবুকের কাছে অভিযোগ করেও কোনো লাভ হয়নি।
“অভিযোগ করার পরও বহুদিন পর্যন্ত ফেসবুক সাইটে ঐসব ভুয়া বিজ্ঞাপন থেকে যায়, একটি বিজ্ঞাপন বন্ধ হলেও কদিন পর একই রকম আরেকটি বিজ্ঞাপন হাজির হয়ে যায়..আমার এবং আমার কোম্পানির সুনামের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে।”
মামলায় ফেসবুকের কাছে বড় অঙ্কের ক্ষতিপূরণ চাইছেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
মি লিউয়িস বলেন, মামলা এবং আইন ছাড়া এটা বন্ধ করা যাবেনা। “ফেসবুক ব্রিটেনের বাইরের কোম্পানি বলে আইনের ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকতে পারেনা। অল্প কিছু ক্ষতিপূরণ দিয়ে ফেসবুক বারবার পার পেতে পারেনা। তাদেরকে এই আচরণের জন্য চড়া মূল্য দিতে হবে।”সুত্র বিবিসি বাংলা