বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বললেন ” অ্যাসাইলাম পেতে হলে মূল দেশের নাগরিকত্ব ছাড়তে হয়”
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলছেন, তারেক রহমানের ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয় নেয়া এবং পাসপোর্ট জমা দেবার কথা স্বীকার করে বিএনপি এখন ‘নতুন বিতর্কের কাদার মধ্যে পড়ে যাচ্ছে।’
তারেক রহমানের পাসপোর্ট বিতর্ক সামনে আসার প্রেক্ষাপটে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিবিসি বাংলার কাছে স্বীকার করেন যে ২০১২ সালে তারেক রহমান ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছিলেন এবং এক বছরের মধ্যেই সেটি গৃহীত হয়।
এর পর পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে বলেন, আমরা সবাই জানি যে একটা দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় পেতে হলে তার মূল দেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করতে হয়।
“আমার ক্লেইমের মূল বিষয় নাগরিকত্ব ছিল না, ছিল পাসপোর্ট ফেরত দেয়া। কিন্তু বিএনপির নেতার কথাতেই এখন প্রমাণ হচ্ছে যে তিনি রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন। তাই নাগরিকত্বের কথাটি আমি এখন আরো জোরালোভাবে দাবি করবো” – বিবিসি বাংলার কাদির কল্লোলকে দেয়া সাক্ষাতকারে বলেন মি. আলম।
“অ্যাসাইলাম সিকাররা (আশ্রয়প্রার্থী) রাষ্ট্রবিহীন বা স্টেটলেস থাকেন, তারা যে দেশের লোক সেদেশে বাঞ্ছিত নন, বা সেদেশে যেতে চান না, এই কারণে তারা পাসপোর্ট সমর্পণ বা হ্যান্ডওভার করেন। তারেক রহমান ঠিক তাই করেছেন।”
“তাহলে তারেক রহমানের এখন আইডেনটিটি কী?” – প্রশ্ন করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
“তারেক রহমানের কাছেতো বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রমাণ করার একটিই দলিল ছিল। সেটি হচ্ছে পাসপোর্ট। সেটি তিনি হোম অফিসে ফেরত দিয়েছেন। ব্যাপারটা বিএনপি গোপন করতে চাইছিল, কারণ তারা সত্য স্বীকার করতে চায় না”- বলেন শাহরিয়ার আলম।
কিন্তু রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকা, পাসপোর্ট না থাকা আর নাগরিকত্ব না থাকা – এগুলো কি এক বিষয়?
এ প্রশ্ন করা হলে শাহরিয়ার আলম বলেন – “না, আমি সেটা দাবি করবো না। এখানে আইনী ব্যাখ্যার সুযোগ আছে।”
“আমার নতুন প্রশ্নটি হলো, তিনি চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশী পাসপোর্ট নিয়ে ভিসা নিয়ে যুক্তরাজ্যে গিয়েছিলেন, কিন্তু এখন তিনি রাজনৈতিক আশ্রয়ে আছেন। সেই পাসপোর্ট ভিসা আর তিনি ব্যবহার করছেন না।”
“রাজনৈতিক আশ্রয় নিতে গেলেই তিনি যে দেশ থেকে গিয়েছেন সেই দেশের সব কিছু সারেন্ডার করতে হয়। সেই দেশের নাগরিক হিসেবে আপনি তা আর ক্লেইম করতে পারেন না। তারেক রহমান ঠিক তাই করেছেন।”
ব্রিটিশ হোম অফিসের যে চিঠিটি মি. আলম ফেসবুকে দিয়েছেন, সেই চিঠিটিতে ইংরেজির ভুল আছে এবং তা সন্দেহজনক বলে বিএনপির নেতারা দাবি করেছেন।
এর জবাবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, “এই চিঠি ব্রিটিশ সরকারের হোম অফিস লিখেছে । তারা সেখানে অভিযোগ দিতে পারেন যে চিঠিতে ভুল কেন?”
এই চিঠিটি প্রকাশ করাটা কতটা যৌক্তিক হয়েছে? এ প্রশ্ন করা হলে শাহরিয়ার আলম বলেন, একশো ভাগ যৌক্তিক কারণ বিএনপিই চ্যালেঞ্জ করেছিল যেন আমি এটা প্রকাশ করি। এ চিঠি গোপনীয় কিছু নয়।
রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে তারেক রহমানকে ঘিরে এ বিতর্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে, বিএনপির এ অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, তারা নন বরং বিএনপিই রাজনীতি করছে।