বিশ্বকাপ ২০১৮: রাশিয়ার যেসব ভেন্যুতে খেলা হবে ..
বাংলা সাংলাপ ডেস্কঃ ২০১৮ বিশ্বকাপে গ্রুপ স্টেজ থেকে শুরু করে ফাইনাল পর্যন্ত মোট ৬৪টি ম্যাচ হবে। এগুলোর জন্য আয়োজক দেশ রাশিয়া বিভিন্ন শহরে মোট ১২টি স্টেডিয়াম প্রস্তুত করেছে।
আকারে রাশিয়া বিশ্বের বৃহত্তম দেশ। ফলে কিছু ক্ষেত্রে একটি ভেন্যু থেকে আরেকটির দূরত্ব কপালে চোখ তোলার মত।
যেমন, বাল্টিক সাগরের উপকূলীয় শহর কালিনিনিগ্রাদের স্টেডিয়াম থেকে দূরের উরাল পর্বতের লাগোয়া ইয়েকাতেরিনাবার্গ স্টেডিয়ামের দূরত্ব ৩,০০০ কিলোমিটার। সেন্ট পিটাসবার্গ থেকে ফিস্টের অলিম্পিক স্টেডিয়ামের দূরত্ব ২,৪০০ কিলোমিটার।
সবচেয়ে বড় স্টেডিয়ামটির ধারণা ক্ষমতা ৮১,০০০। মস্কোর আনকোরা লুঝনিকি স্টেডিয়ামটির উদ্বোধন করা হয়েছে চলতি বছরে।
১৪ই জুন এখানেই হবে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচ – রাশিয়া ও সৌদি আরবের মধ্যে। এর ৩১ দিন পর মস্কোর এই স্টেডিয়ামেই হবে ফাইনাল ম্যাচ।
লুঝনিকি স্টেডিয়াম, মস্কো
ধারণক্ষমতা : ৮১,০০৬
উদ্বোধন: ১৯৫৬ (তবে আগাপাশতলা সংস্কারের পর ২০১৮ সালে নতুন করে এটি চালু করা হয়েছে)
জলবায়ু: সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বনিম্ন ১৮ ডিগ্রি। বৃষ্টির সম্ভাবনা ৫০ শতাংশ।
টাইম জোন: জিএমটি (গ্রিনিচ মান সময়) + ৩ ঘণ্টা
অবস্থান: রাশিয়ার রাজধানী মস্কো দেশের পশ্চিমাঞ্চলে মস্কোভা নদীর তীরে। স্টেডিয়ামটি নদীর একটি বাঁকে একটি বিশাল পার্কের মাঝে, মস্কোর কেন্দ্র থেকে ছয় কি.মি. পশ্চিমে।
ইতিহাস: লুঝনিকি স্টেডিয়ামের প্রথম নাম ছিল কেন্দ্রীয় লেনিন স্টেডিয়াম। একই সাথে অনেক বিজয়ের মূহুর্ত এবং ভয়াবহ ঘটনার সাক্ষী হয়ে রয়েছে মস্কোর এই স্টেডিয়ামটি। ১৯৫৫-৫৬ সালে মাত্র ৪৫০ দিনের মধ্যে এটি নির্মাণ করা হয়েছিল। ১৯৫২ সালে হেলসিঙ্কি অলিম্পিক থেকে তৎকালীন সোভিয়েত স্কোয়াড ৭১টি পদক জিতে ফেরার পর দেশটির সরকার এই স্টেডিয়াম নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
ওই সময়ে এর ধারণ ক্ষমতা ছিল এক লাখের কিছু বেশি। ১৯৮০ সালে মস্কো অলিম্পিকের প্রধান ভেন্যু ছিল এই স্টেডিয়াম। তার দু’বছর পর স্পার্টাক মস্কো এবং ডাচ ক্লাব এইচএফসি হার্লেমের মধ্যে ইউয়েফা কাপের (ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবল কাপ প্রতিযোগিতা) এক ম্যাচের শেষ দিকে হুড়োহুড়ি করে বের হওয়ার সময় দুর্ঘটনায় ৬৬ জন নিহত হয়েছিলেন।
পরে ১৯৯০ এর দশকে স্টেডিয়ামটির ব্যাপক সংস্কার করে নতুন নাম রাখা হয় – লুঝনিকি। ১৯৯৯ সালে ইউয়েফা কাপের ফাইনাল এবং প্রায় ১০ বছর পর ২০০৮ সালে (ইউরোপিয়ান) চ্যাম্পিয়নস লীগের ফাইনাল হয় এই স্টেডিয়ামে।
২০১৮ সালের বিশ্বকাপ উপলক্ষে লুঝনিকি স্টেডিয়ামের ব্যাপক সংস্কার করা হয়েছে। দর্শক-স্ট্যান্ডকে দু’টো তলায় ভাগ করা হয়েছে। অ্যাথলেটিকস ট্র্যাক উঠিয়ে ফেলা হয়েছে, তবে বাইরের দিকটি অক্ষত রয়েছে। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী এবং ফাইনাল ম্যাচ সহ সাতটি ম্যাচ হবে এখানে।
গ্রুপ ম্যাচ : রাশিয়া-সৌদি আরব (বৃহস্পতিবার, জুন ১৪, জিএমটি ১৫:০০), জার্মানি-মেক্সিকো (রোববার, জুন ১৭, জিএমটি ১৫:০০), পর্তুগাল-মরক্কো (বুধবার, জুন ২০, জিএমটি ১২:০০), ডেনমার্ক-ফ্রান্স (মঙ্গলবার, জুন ২৬, জিএমটি ১৪:০০)।
নক-আউট ম্যাচ: শেষ ১৬ – গ্রুপ বি জয়ী – গ্রুপ এ রানার আপ (রোববার, জুলাই ১, জিএমটি ১৪:০০), ২য় সেমি ফাইনাল (বুধবার, জুলাই ১১, জিএমটি ১৮:০০)
ফাইনাল (রোববার, জুলাই ১৫, জিএমটি ১৫:০০)
স্পার্টাক, মস্কো
ধারণক্ষমতা : ৪৩, ২৯৮
উদ্বোধন: ২০১৪
জলবায়ু: গড় সর্বোচ্চ ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বনিম্ন ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃষ্টির সম্ভাবনা ৫০ শতাংশ।
টাইম জোন: জিএমটি + ৩ ঘণ্টা
অবস্থান: মস্কোর উত্তর-পশ্চিম
ইতিহাস: সোভিয়েত/রাশিয়া ফুটবল লীগের ২২ বারের চ্যাম্পিয়ন ক্লাব স্পার্টাক মস্কোর স্থায়ী স্টেডিয়াম এটি। ২০১৪ সালে এটির উদ্বোধনের আগে স্পার্টাক মস্কো শহরের বিভিন্ন স্টেডিয়ামে তাদের হোম-ম্যাচ খেলতো। মস্কোর তুশিনো এলাকায় সাবেক একটি বিমান ঘাঁটিতে স্পার্টাক স্টেডিয়ামটি নির্মিত হয়েছে। এখানে প্রথম ফুটবল ম্যাচ হয় ৫ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সালে – স্পার্টাক মস্কো এবং সার্বিয়ার রেড স্টার বেলগ্রেড ক্লাবের মধ্যে।
গ্রুপ ম্যাচ: আর্জেন্টিনা-আইসল্যান্ড (শনিবার, জুন ১৬, জিএমটি ১৩:০০), পোল্যান্ড-সেনেগাল (মঙ্গলবার, জুন ১৯, জিএমটি ১৫:০০), বেলজিয়াম-তিউনিসিয়া (শনিবার, জুন ২৩, জিএমটি ১২:০০), সার্বিয়া-ব্রাজিল (বুধবার, জুন ২৭, জিএমটি ১৮:০০)।
নক-আউট ম্যাচ: শেষ ১৬ – গ্রুপ এইচ জয়ী – গ্রুপ জি রানার আপ (মঙ্গলবার, জুলাই ৩, জিএমটি ১৮:০০)
নিঝনি নোভগোরোদ স্টেডিয়াম, নিঝনি নোভগোরোদ
ধারণক্ষমতা: ৪৫,৩৩১
উদ্বোধন: ২০১৮
জলবায়ু: সর্বোচ্চ ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বনিম্ন ১৩ ডিগ্রি। বৃষ্টির সম্ভাবনা ৬০ শতাংশ।
টাইম জোন: জিএমটি + ৩ ঘণ্টা
মস্কো থেকে দূরত্ব: ২৬৫ মাইল
অবস্থান: নিজেগোরোদ ওব্লাস্ট অঞ্চলের প্রশাসনিক কেন্দ্র এই নিঝনি নোভগোরোদ শহরটি মস্কোর পূর্ব দিকে ভল্গা এবং ওকা নদীর মোহনায়।
ইতিহাস: ভল্গা অঞ্চলের ভূপ্রকৃতির সাথে মিল রেখে নিঝনি নোভগোরোদ স্টেডিয়ামের নকশা করা হয়েছে। গোলাকার নকশায় ঘূর্ণায়মান বাতাস এবং পানির প্রতিচ্ছবি লক্ষ্য করা যায়। রাতের বেলা আলোয় ঝকমক করে স্টেডিয়ামটি।
নিঝনি নোভগোরোদ শহরের যে জায়গাটিতে ভল্গা নদী ওকা নদীর সাথে মিশেছে তার পাশেই তৈরি করা হয়েছে স্টেডিয়ামটি। নির্মাণ শুরু হয় ২০১৫ সালে। বিশ্বকাপের পর স্থানীয় ফুটবল ক্লাব এফসি অলিম্পিয়েটস নিঝনি নোভগোরোদ এটির মালিকানা গ্রহণ করবে।
গ্রুপ ম্যাচ : সুইডেন-দক্ষিণ কোরিয়া (সোমবার, জুন ১৮, জিএমটি ১২:০০), আর্জেন্টিনা-ক্রোয়েশিয়া (বৃহস্পতিবার, জুন ২১, জিএমটি ১৮:০০), ইংল্যান্ড-পানামা (রোববার, জুন ২৪, জিএমটি ১২:০০), সুইজারল্যান্ড-কোস্টারিকা (বুধবার, জুন ২৭, জিএমটি ১৮:০০)।
নক আউট ম্যাচ : শেষ ১৬ – গ্রুপ ডি জয়ী বনাম গ্রুপ সি রানার-আপ (রোববার, জুলাই ১, জিএমটি ১৮:০০), কোয়ার্টার-ফাইনাল ১ (শুক্রবার, জুলাই ৬, জিএমটি ১৪:০০)।
মোরদোভিয়া অ্যারেনা, সারানস্ক
ধারণক্ষমতা: ৪৪,৪৪২
উদ্বোধন: ২০১৮
জলবায়ু: গড় সর্বোচ্চ ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বনিম্ন ১২ ডিগ্রি। বৃষ্টির সম্ভাবনা ৩৩ শতাংশ।
টাইম জোন: জিএমটি + ৩ ঘণ্টা
মস্কো থেকে দূরত্ব: ৪০০ মাইল
অবস্থান: মস্কোর দক্ষিণ-পূর্বে সারানস্ক শহরটি মোরদোভিয়া প্রজাতন্ত্রের রাজধানী শহর। শহরটি ভল্গা নদীর অববাহিকায় সারানস্ক এবং ইনসার নদীর মোহনায় অবস্থিত।
ইতিহাস: বলা হচ্ছে এই স্টেডিয়ামটি ২০১৮ বিশ্বকাপের ভেন্যুগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জমকালো। স্টেডিয়ামের বাইরের রং কমলা, লাল এবং সাদা। রাশিয়ার অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর সাথে মোরদোভিয়ানদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার হাজারতম বার্ষিকী উপলক্ষে ২০১০ সালে ইনসার নদীর পাড়ে স্টেডিয়ামটির কাজ শুরু হয়। কিন্তু বিভিন্ন কারণে, বিশেষত তহবিলের অভাবে, নির্মাণ কাজে অনেক দেরি হয়েছে। শেষ পর্যন্ত ২০১৭ সালে এটি শেষ হয়।
বিশ্বকাপের জন্য ধারণ ক্ষমতা ৪৫,০০০ করা হলেও পরে দোতলা স্ট্যান্ডের ওপর তলাটি ভেঙ্গে ফেলে ধারণ-ক্ষমতা করা হবে ২৮,০০০। রুশ প্রিমিয়ার লীগের ক্লাব মোরদোভিয়া সারানস্কের হোম-স্টেডিয়াম হবে জমকালো এই ভেন্যু।
গ্রুপ ম্যাচ: পেরু-ডেনমার্ক (শনিবার, জুন ১৬, জিএমটি ১৬:০০), কলম্বিয়া-জাপান (মঙ্গলবার, জুন ১৯, জিএমটি ১২:০০), ইরান-পর্তুগাল (সোমবার, জুন ২৫, জিএমটি ১৮:০০), পানামা- তিউনিসিয়া (বৃহস্পতিবার, জুন ২৮, জিএমটি ১৮:০০)।
কাজান অ্যারেনা, কাজান
ধারণক্ষমতা: ৪৪,৭৭৯
উদ্বোধন: ২০১৩
জলবায়ু : গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বনিম্ন ১৪ ডিগ্রি। বৃষ্টির সম্ভাবনা ৫৫ শতাংশ।
টাইম জোন: জিএমটি + ৩ ঘণ্টা
মস্কো থেকে দূরত্ব: ৫১০ মাইল
অবস্থান: তাতারস্তান প্রজাতন্ত্রের রাজধানী শহর কাজান মস্কোর পূর্বে । শহরটি ভল্গা এবং কাজানাকা নদীর মোহনায়।
ইতিহাস: লন্ডনের ওয়েম্বলি এবং এমিরেটস স্টেডিয়ামটির নকশা যে স্থাপত্য প্রতিষ্ঠানটি করেছে, তারাই কাজানের স্টেডিয়ামের নকশা করেছে। ফলে লন্ডনের ঐ স্টেডিয়ামের স্থাপত্যের সাথে কাজান অ্যারেনার সাদৃশ্য রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের একটি আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার জন্য স্টেডিয়ামটি তৈরি করা হলেও এটি এখন স্থানীয় ফুটবল ক্লাব রুবিন কাজানের হোম-স্টেডিয়াম।
গ্রুপ ম্যাচ: ফ্রান্স-অস্ট্রেলিয়া (শনিবার, জুন ১৬, জিএমটি ১০:০০), ইরান-স্পেন (বুধবার জুন ২০, জিএমটি ১৮:০০), পোল্যান্ড-কলম্বিয়া (রোববার, জুন ২৪, জিএমটি ১৮:০০), দক্ষিণ কোরিয়া-জার্মানি (বুধবার, জুন ২৭, জিএমটি ১৪:০০)।
নক-আউট ম্যাচ: শেষ ১৬ – গ্রুপ সি জয়ী বনাম গ্রুপ ডি রানার-আপ (শনিবার, জুন ৩০, জিএমটি ১৪:০০), কোয়ার্টার ফাইনাল ২ (শুক্রবার, জুলাই ৬, জিএমটি ১৮:০০)।
সামারা অ্যারেনা, সামারা
ধারণক্ষমতা: ৪৪,৮০৭
উদ্বোধন: ২০১৮
জলবায়ু: গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বনিম্ন ১৬ ডিগ্রি, বৃষ্টির সম্ভাবনা ৫০ শতাংশ
টাইম জোন: জি এমটি + ৪ ঘণ্টা
মস্কো থেকে দূরত্ব: ৬৫৫ মাইল
অবস্থান: রাশিয়ার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ইউরোপীয় অংশে ভল্গা নদীর পূর্ব তীরের শহর সামারা।
ইতিহাস : প্রথমে পরিকল্পনা হযেছিল স্টেডিয়ামটি হবে সামারার দক্ষিণে নদীর ভেতর প্রায় জনমানবহীন একটি দ্বীপে। পরে সমালোচনার মুখে এটি শহরের মূল এলাকার মধ্যে স্থানান্তর করা হয়। নভোযান এবং বিমান শিল্পের জন্য অঞ্চলটি বিখ্যাত। তার সাথে সামঞ্জস্য রেখে এই স্টেডিয়ামের নকশা করা হয়েছে – দেখতে অনেকটা গম্বুজের মত – ইস্পাতের মত রং, রাতে আলোয় ঝলমল করে। বিশ্বকাপের পর এটির নাম বদলে রাখা হবে – কসমস অ্যারেনা। স্থানীয় ফুটবল ক্লাব ক্রাইলিয়া সোভেটভের হোম-গ্রাউন্ড হবে এটি।
গ্রুপ ম্যাচ: কোস্টা রিকা-সার্বিয়া (রোববার জুন ১৭, জিএমটি ১২:০০), ডেনমার্ক-অস্ট্রেলিয়া (বৃহস্পতিবার, জুন ২১, জিএমটি ১২:০০), উরুগুয়ে-রাশিয়া (সোমবার, জুন ২৫, জিএমটি ১৪:০০), সেনেগাল-কলম্বিয়া (বৃহস্পতিবার, জুন ২৮, জিএমটি ১৪:০০)।
নক-আউট: শেষ ১৬ – গ্রুপ ই জয়ী বনাম গ্রুপ এফ রানার-আপ (সোমবার, জুলাই ২, জিএমটি ১৪:০০), কোয়ার্টার ফাইনাল ৪ (শনিবার, জুলাই ৭, জিএমটি ১৮:০০)
ইয়েকাতেরিনবার্গ অ্যারেনা, ইয়েকাতেরিনবার্গ
ধারণ-ক্ষমতা: ৩৫,৬৯৬
উদ্বোধন : ১৯৫৩ (অস্থায়ী গ্যালারি এবং ছাদ তৈরি হয়েছে ২০১৮ সালে)
জলবায়ু: গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বনিম্ন ১৩ ডিগ্রি। বৃষ্টির সম্ভাবনা ৬৬ শতাংশ।
টাইম জোন: জিএমটি + ৫ ঘণ্টা
মস্কো থেকে দূরত্ব: ১,০৯০ মাইল
অবস্থান: উরাল পর্বতের পাদদেশে এই শহরটি রাশিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম শহর। ভৌগলিকভাবে ইয়েকাতেরিনবার্গ ইউরোপ এবং এশিয়ার সীমান্তরেখায়।
ইতিহাস: এটি বিশ্বকাপের একমাত্র স্টেডিয়াম যেখানে মূল মাঠের বাইরে অস্থায়ী দর্শক গ্যালারি তৈরি করা হয়েছে। ফিফার শর্ত রয়েছে – বিশ্বকাপের যে কোনো স্টেডিয়ামে অন্তত ৩৫,০০০ আসন থাকতে হবে। বিপদে পড়ে যান কর্তৃপক্ষ। পরে স্থপতিদের পরামর্শে দুই গোল-পোস্টের পেছনে মূল মাঠের কিনারে বাড়তি দুটি গ্যালারি নির্মাণ করা হয়। মূল স্টেডিয়ামটি তৈরি হয় ১৯৫৩ এবং ১৯৫৭ সালের মধ্যে। পরে ২০০৭ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়। এটি রুশ প্রিমিয়ার লীগ ক্লাব উরাল একাতেরিনবার্গের হোম-গ্রাউন্ড।
গ্রুপ ম্যাচ: মিশর-উরুগুয়ে (শুক্রবার, জুন ১৫, জিএমটি ১২:০০), ফ্রান্স-পেরু (বৃহস্পতিবার, জুন ২১, জিএমটি ১৫:০০), জাপান-সেনেগোল (রোববার, জুন ২৪, জিএমটি ১৫:০০), মেক্সিকো-সুইডেন (বুধবার, জুন ২৭, জিএমটি ১৪:০০)।
সেন্ট পিটার্সবার্গ স্টেডিয়াম, সেন্ট পিটার্সবার্গ
ধারণক্ষমতা: ৬৮,১৩৪
উদ্বোধন: ২০১৭
জলবায়ু: গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বনিম্ন ১৩ ডিগ্রি। বৃষ্টির সম্ভাবনা ৬০ শতাংশ।
টাইম জোন: জিএমটি + ৩ ঘণ্টা
মস্কো থেকে দূরত্ব: ৪২৫ মাইল
অবস্থান: নেভা নদীর তরে বাল্টিক সাগর উপকূলের এই শহরটি বিশ্বকাপের সর্ব-উত্তরের ভেন্যু।
ইতিহাস: স্টেডিয়ামটির পুরনো নাম ক্রেস্তোভস্কি স্টেডিয়াম। জেনিথ অ্যারেনা নামেও এর পরিচিতি রয়েছে। তবে বিশ্বকাপের জন্য এর নামকরণ করা হয়েছে সেন্ট পিটার্সবার্গ স্টেডিয়াম। কাজ শুরু হয় ২০০৭ সালে। শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০০৯ সালে। কিন্তু ফিফার শর্ত মানতে ডিজাইনের পরিবর্তন করায় কাজ শেষ হতে দেরি হয়ে যায়। এক পর্যায়ে রুশ গ্যাস কোম্পানি গ্যাজপ্রম তাদের স্পন্সরশীপ প্রত্যাহার করায় আর্থিক সঙ্কট শুরু হয়।
শেষ পর্যন্ত সেন্ট পিটার্সবার্গ নগর সরকারের ব্যয়ে ২০১৭ সালে স্টেডিয়ামের কাজ শেষ হয়। প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছিল ২৫০ মিলিয়ন ডলার, কিন্তু তার তিনগুণ বেশি খরচ হয়েছে। জাপানের টয়োটা স্টেডিয়ামের ধাঁচে নভোযানের আকৃতির মত এটির ডিজাইন। ছাদ খোলা-বন্ধ করা যায়। মাঠের পিচ অত্যাধুনিক – নড়া-চড়া করানো যায়। প্রযুক্তির দিক দিয়ে এটি বিশ্বের অন্যতম আধুনিক স্টেডিয়াম। বিশ্বকাপের পর এটি জেনিথ সেন্ট পিটার্সবার্গের হোম-স্টেডিয়াম হবে।
গ্রুপ ম্যাচ: মরক্কো-ইরান (শুক্রবার, জুন ১৫, জিএমটি ১৫:০০), রাশিয়া-মিশর (মঙ্গলবার, জুন ১৯, জিএমটি ১৮:০০), ব্রাজিল-কোস্টারিকা (শুক্রবার জুন ২২, জিএমটি ১২:০০), নাইজেরিয়া-আর্জেন্টিনা (মঙ্গলবার, জুন ২৬, জিএমটি ১৮:০০)।
নক-আউট: শেষ ১৬: গ্রুপ এফ জয়ী বনাম গ্রুপ ই রানার-আপ (মঙ্গলবার, জুলাই ৩, জিএমটি ১৪:০০), সেমি-ফাইনাল ১ (মঙ্গলবার, জুলাই ১০, জিএমটি ১৮:০০), তৃতীয় বনাম চতুর্থ প্লে-অফ (শনিবার, জুলাই ১৪, জিএমটি ১৪:০০)।
কালিনিনগ্রাদ স্টেডিয়াম, কালিনিনগ্রাদ
ধারণ-ক্ষমতা : ৩৫,২১২
উদ্বোধন: ২০১৮
জলবায়ু: গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বনিম্ন ১২ ডিগ্রি। বৃষ্টির সম্ভাবনা ৫০ শতাংশ।
টাইম জোন: জিএমটি + ২ ঘণ্টা
মস্কো থেকে দূরত্ব: ৭৭০ মাইল
অবস্থান: কালিনিনিগ্রাদ ওব্লাস্ট অঞ্চলের প্রশাসনিক কেন্দ্র এই শহরটি। অঞ্চলটি বাল্টিক সাগর তীরে পোল্যান্ড এবং লিথুয়ানিয়ার মাঝে একটি রুশ এলাকা।
ইতিহাস: কালিনিনগ্রাদের আনকোরা নতুন স্টেডিয়ামটি নির্মাণ করা হয়েছে অনেকটা বায়ার্ন মিউনিখের অ্যালায়েঞ্জ অ্যারেনার আদলে। এটি নির্মাণে একের পর এক সমস্যা এবং বিলম্ব হয়েছে। প্রাথমিকভাবে অত্যাধুনিক একটি স্টেডিয়াম তৈরির পরিকল্পনা করা হলেও পরে মাত্র ৩৫,০০০ আসনের একটি সাদামাটা স্টেডিয়াম তৈরি হয়। বিশ্বকাপের পরে আসন সংখ্যা ১০,০০০ কমিয়ে এটিকে রুশ দ্বিতীয় ডিভিশনের ক্লাব বাল্টিকা কালিনিন্রগাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
গ্রুপ ম্যাচ: ক্রোয়েশিয়া-নাইজেরিয়া (শনিবার, জুন ১৬, জিএমটি ১৯:০০) সার্বিয়া-সুইজারল্যান্ড (শুক্রবার, জুন ২২, জিএমটি ১৮:০০). স্পেন-মরক্কো (সোমবার, জুন ২৫, জিএমটি ১৮:০০) ইংল্যান্ড-বেলজিয়াম (বৃহস্পতিবার, জুন ২৮, জিএমটি ১৮:০০)।
ভলগোগ্রাদ অ্যারেনা, ভলগোগ্রাদ
ধারণ-ক্ষমতা: ৪৫,৫৬৮
উদ্বোধন: ২০১৮
জলবায়ু: গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বনিম্ন ১৬ ডিগ্রি। বৃষ্টির সম্ভাবনা ৪০ শতাংশ।
টাইম জোন: জিএমটি + ৩ ঘণ্টা
মস্কো থেকে দূরত্ব: ৫৮৫ মাইল
অবস্থান: ভল্গা নদীর পাড়ে রাশিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমের এই শহরটি পূর্বের নাম স্টালিনগ্রাদ।
ইতিহাস: ভলগোগ্রাদ অ্যারেনা বিশ্বকাপের জন্য তৈরি নতুন আরেকটি স্টেডিয়াম। ১৯৫৮ সালের পুরোনো একটি স্টেডিয়াম ভেঙ্গে এটি তৈরি করা হয়েছে। স্টেডিয়ামের ছাদটি মোটা তার দিয়ে এমনভাবে নকশা করা হয়েছে যা দেখলে মনে হয় সাইকেলের চাকার স্পোক। বিশ্বকাপের জন্য তৈরি অন্যতম নয়নাভিরাম স্টেডিয়াম এটি। বিশ্বকাপের পর অন্যতম শীর্ষ রুশ ক্লাব রোটোর ভলগোগ্রাদের হোম-গ্রাউন্ড হবে এই স্টেডিয়াম।
গ্রুপ ম্যাচ: তিউনিসিয়া-ইংল্যান্ড (সোমবার, জুন ১৮, জিএমটি ১৮:০০), নাইজেরিয়া-আইসল্যান্ড (শুক্রবার, জুন ২২, জিএমটি ১৫:০০), সৌদি আরব-মিশর (সোমবার, জুন ২৫, জিএমটি ১৪:০০), জাপান-পোল্যান্ড (বৃহস্পতিবার, জুন ২৮, জিএমটি ১৪:০০)।
রোস্তভ অ্যারেনা, রোস্তভ-অন-ডন
ধারণ-ক্ষমতা: ৪৫,১৪৫
উদ্বোধন: ২০১৮
জলবায়ু: গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্র ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বনিম্ন ১৭ ডিগ্রি। বৃষ্টির সম্ভাবনা ৩৩ শতাংশ।
টাইম জোন: জি এমটি + ৩ ঘণ্টা
মস্কো থেকে দূরত্ব: ৬৯০ মাইল
অবস্থান: মস্কোর দক্ষিণে ডন নদীর তীরে এই শহরটি আজভ সাগর থেকে মাত্র ২০ মাইল দূরে।
ইতিহাস: আরও একটি নতুন স্টেডিয়াম। ২০১৩ সালে নির্মাণ শুরু হয়। শেষ হয় ২০১৮ সালে। মাটি খোঁড়ার সময় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার অবিষ্ফোরিত বোমা পাওয়া গিয়েছিল এখানে। বিশ্বকাপের পর এর আসন সংখ্যা কমিয়ে ২৫,০০০ করা হবে। স্থানীয় ক্লাব এফসি রোস্তভের হোম-গ্রাউন্ড হবে এই মাঠ।
গ্রুপ ম্যাচ: ব্রাজিল-সুইজারল্যান্ড (রোববার, জুন ১৭, জিএমটি ১৮:০০), উরুগুয়ে-সৌদি আরব (বুধবার, জুন ২০, জিএমটি ১৫:০০), দক্ষিণ কোরিয়া-মেক্সিকো (শনিবার, জুন ২৩, জিএমটি ১৫:০০), আইসল্যান্ড-ক্রোয়েশিয়া (মঙ্গলবার, জুন ২৬, জিএমটি ১৮:০০)
নক আউট: শেষ ১৬ – গ্রুপ জি জয়ী বনাম গ্রুপ এইচ রানার-আপ (সোমবার, জুলাই ২, জিএমটি ১৮:০০)।
ফিশ্ট স্টেডিয়াম, সোচি
ধারণ-ক্ষমতা: ৪৭,৭০০
উদ্বোধন: ২০১৩
জলবায়ু: গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বনিম্ন ১৮ ডিগ্রি। বৃষ্টির সম্ভাবনা ৪০ শতাংশ।
টাইম জোন: জি এমটি + ৩ ঘণ্টা
মস্কো থেকে দূরত্ব: ১,০৪০ মাইল
অবস্থান: কৃষ্ণ সাগরের তীরে ১৪০ কি.মি. দীর্ঘ এই শহরটি ইউরোপের দীর্ঘতম শহর। শহরের অন্যদিকে ককেসাস পর্বতমালা।
ইতিহাস: ফিশ্ট স্টেডিয়ামটি ২০১৪ সালের শীতকালীন অলিম্পিক উপলক্ষে নির্মাণ করা হয়েছিল। দেখলে মনে হয় এটি যেন একটি বরফাচ্ছাদিত পাহাড়ের চূড়া। স্থানীয় ভাষায় ফিশ্ট শব্দের অর্থ ‘সাদা মাথা।’ সাগর এবং ক্রাসনায়া পলিনায়া পর্বতের সাথে যুক্ত করতে স্টেডিয়ামটির দুই প্রান্ত খোলা ছিল। কিন্তু ফিফার শর্ত অনুয়ায়ী খোলা প্রান্ত দুটো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
গ্রুপ ম্যাচ: পর্তুগাল-স্পেন (শুক্রবার, জুন ১৫, জিএমটি ১৮:০০), বেলজিয়াম-পানামা (সোমবার, জুন ১৮, জিএমটি ১৫:০০), জার্মানি-সুইডেন (শনিবার, জুন ২৩, জিএমটি ১৮:০০), অস্ট্রেলিয়া-পেরু (মঙ্গলবার, জুন ২৬, জিএমটি ১৪:০০)।
নক-আউট: শেষ ১৬- গ্রুপ এ জয়ী বনাম গ্রুপ বি রানার-আপ) (শনিবার, জুন ৩০, জিএমটি ১৮:০০), কোয়ার্টার ফাইনাল ৩ (শনিবার, জুলাই ৭, জিএমটি ১৪:০০)।