বৃটেনে বাংলাদেশী ডাক্তারের বিরুদ্ধে যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগ
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃযৌন কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত হয়েছেন বৃটেনের ওয়েস্ট ইয়র্কশায়ারে বাংলাদেশী একজন চিকিৎসক। তার নাম ডাক্তার ইফতেখার আহমেদ (৫১)। তিনি গাইনি বিশেষজ্ঞ। দু’সন্তানের জনক। তিনি ওয়েস্ট ইয়র্কশায়ারে হাডারসফিল্ডে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সার্জারি করেন। কিন্তু এই সুযোগে তিনি একজন রোগিনীর সঙ্গে অসদাচরণ করেছেন।তাকে তার সম্মতি ছাড়াই স্পর্শ করেছেন। তা আবার অন্যদের কাছে গোপন রাখার অনুরোধ করেছেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডেইলি মেইল। অভিযোগে বলা হয়েছে, ওই রোগিনীকে তিনি তার সার্জারিতে ‘সেক্স টয়’ নিয়ে যেতে বলেন। পাশাপাশি তাকে পর্নো ছবি দেয়ার দেয়ার চেষ্টা করেন। অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, ওই রোগিনীকে পরীক্ষা নিরীক্ষার পরে তার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে চান কিনা তা জানতে চান ডাক্তার ইফতেখার। রোগিনী পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য বিবস্ত্র হলে তার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকেন ইফতেখার। আবার এসব কথা অন্যদের কাছে শেয়ার না করতে অনুরোধ করেন। বলে দেন, যদি এ বিষয়ে কারো সঙ্গে ওই রোগিনী শেয়ার করেন তাহলে ইফতেখার সমস্যায় পড়ে যাবেন। এ নিয়ে মামলা হয়েছে বৃটেনের মেডিকেল প্রাকটিশনারস ট্রাইবুনাল সার্ভিসে (এমপিটিএস)। সেখানেই তার বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে। বলা হয়েছে, যে নারী অভিযোগ করেছেন ঘটনার সময় ৪০-এর কোটায় তার বয়স। তিনি মেডিকেল ট্রাইবুনালে শুনানিতে উপস্থিত হতে ব্যর্থ হন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে প্রাকটিস করছেন বলে মনে করা হয়। তবে বৃটেনে যাবজ্জীবনের জন্য তাকে মেডিকেল রেজিস্টারে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমপিটিএস অবস্থিত ম্যানচেস্টারে। সেখান থেকে রায়ে বলা হয়েছে, ট্রাইবুনাল এ বিষয়ে উদ্বিগ্ন যে, ডাক্তার ইফতেখার তার পদের প্রতি যে আস্থা তা নষ্ট করেছেন। প্রিন্সেস রয়েল হেলথ ক্লিনিকে গিয়েছিলেন ওই নারী। ২০১৩ সালের আগস্ট ও ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে দু’বার তিনি যৌন স্বাস্থ্য বিষয়ে পরামর্শ নিতে ওই ক্লিনিকে ডাক্তার ইফতেখারের মুখোমুখি হন তিনি। ওই নারী বলেন, ডাক্তার ইফতেখার যখন তার পুরো যৌন জীবন সম্পর্কে এলোমেলো প্রশ্ন করতে থাকেন, তিনি কি কি ‘সেক্স টয়’ ব্যবহার করেন এবং ইফতেখার কি সেগুলো দেখতে পারেন কিনাÑ এসব বিষয়ে কথা বলতে থাকে। ওই সময় ভয়ে আতঙ্কে কাঁপতে থাকেন ওই নারী। তিনি বলেন, আমি ডাক্তার ইফতেখারকে জানাই আমার কোনো বয়ফ্রেন্ড নেই। এটা শুনে তিনি উদ্ভট আচরণ শুরু করেন। তিনি আমার যৌন জীবন নিয়ে প্রশ্ন করা শুরু করেন। জানতে চান, আমি কারো সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত আছি কিনা। এ সময় আমি তাকে বলি, একজনের সঙ্গে আমার এমন সম্পর্ক আছে। এটা এ জন্যই বলি যাতে ওই ডাক্তার বুঝতে পারেন আমার জীবনসঙ্গী আছেন। এসব বলতে গিয়ে আমি অস্বস্তি বোধ করতে থাকি। ওই নারী আরো বলেন, এরপরও ডাক্তার ইফতেখার থামেন নি। তিনি আমার কাছে যৌনতা বিষয়ে নানারকম আপত্তিকর প্রশ্ন করতে থাকেন। এমন কিছু বিষয়ে কথা বলেন যা উচ্চারণ করার মতো নয়। তিনি আবারও আমার কাছে একই রকম প্রশ্ন করতে থাকেন। আমি বলি আমি তার কথা বুঝতে পারছি না। এক পর্যায়ে তিনি আমাকে বলেন, যখন আমাকে তিনি পরীক্ষা করবেন তখন তার সঙ্গে আমার শারীরিক সম্পর্ক হচ্ছে এ বিষয়টি কি আমি বুঝতে পারি কিনা। আমি তার এ কথার কোনো উত্তর দিই নি। পরে যখন পোশাক পরতে থাকি তখন ইফতেখার আমার দিকে একভাবে তাকিয়ে থাকেন। এক পর্যায়ে ওই রোগিনীর মেডিকেল রেকর্ড থেকে তার ফোন নম্বর নিয়ে নেন। তাকে আরো জঘন্য সব ব্যক্তিগত জীবনের প্রশ্ন করতে থাকেন। এক পর্যায়ে ইফতেখার জানতে চান, ওই নারীর বাসার কম্পিউটারে তিনি কি পর্নোগ্রাফি ইন্সটল করে দিতে পারেন কিনা। একদিন তিনি তার বাসায় ল্যাপটপে পর্নোগ্রাফি ইন্সটল করে দিতে যেতে চান। জবাবে ওই নারী বলেন, আমি বাড়িতে নেই। বুঝতে পারি এতে তিনি আহত হন। তিনি চুপ মেরে যান। কিছুক্ষণ পরে বলেন, ঠিক আছে। তাহলে তিনি রাতের দিকে আসতে পারেন।