থেরেসা মেকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল বাংলাদেশি জাকারিয়া

Spread the love

theresaবাংলা সংলাপ ডেস্কঃ যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে-কে হত্যা পরিকল্পনার অভিযোগে আটক নাইমুর জাকারিয়া রহমান তাঁর এক চাচার প্রভাবে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন। ওই চাচা সিরিয়ায় আইএস-এর হয়ে যুদ্ধ করছিলেন এবং ড্রোন হামলায় মারা যায়। মঙ্গলবার লন্ডনের ওল্ড বেইলি আদালতের শুনানিতে এমন তথ্য তুলে ধরা হয়।

আইএস যোদ্ধা পরিচয়ে জাকারিয়ার সঙ্গে ইন্টারনেটে যোগাযোগ স্থাপন করেন যুক্তরাজ্যের এক গোয়েন্দা। ওই গোয়েন্দার সঙ্গে জাকারিয়ার কথোপকথনের (চ্যাট) বিস্তারিত মঙ্গলবার আদালতের শুনানিতে তুলে ধরা হয়।

গত বছরের ২ নভেম্বর ২০ বছর বয়সী নাইমুর জাকারিয়া রহমানকে গ্রেপ্তার করে যুক্তরাজ্যের পুলিশ। তিনি আদালতে নিজেকে ‘ব্রিটিশ-বাংলাদেশি’ বলে পরিচয় দেন । তাঁর পরিবার মিডল্যান্ডসে বসবাস করে বলে দ্য গার্ডিয়ানের এক খবরে উল্লেখ করা হয়েছে।

স্পর্শকাতর এই মামলার প্রথম দিনের শুনানিতে বলা হয়, সিরিয়ায় পাড়ি দেওয়া তাঁর এক চাচার সঙ্গে জাকারিয়ার যোগাযোগ ছিল। ওই চাচা আইএস-এর হয়ে লড়াই করছিলেন। ওই চাচা-ই জাকারিয়াকে যুক্তরাজ্যের মাটিতে হামলা চালানোর জন্য প্ররোচিত করেন। চাচার সঙ্গে মিলে কোথায় কীভাবে হামলা করা হবে সে বিষয়ে পরিকল্পনা করেছিলেন তাঁরা। এর মধ্যে ড্রোন হামলায় সিরিয়াতে চাচা নিহত হয়। এরপর যুক্তরাজ্যের মাটিতে হামলার বিষয়ে আরও বেশি দৃঢ় হয়ে উঠেন তিনি। পরিচয় গোপন করা গোয়েন্দার সঙ্গে আলাপকালে জাকারিয়া নিজেই এসব তথ্য জানান।

সে সময় জাকারিয়া আরও জানান, ওই চাচা তাকে বোমা বানানোর একটি ভিডিও চিত্র পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু সেটি তিনি তাঁর কম্পিউটারে নামাতে (ডাউনলোড) পারছিলেন না।

২০১৭ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর আলাপের একপর্যায়ে জাকারিয়া বলেছিলেন, তাঁকে যেন কোনো আত্মঘাতী দলের সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়া হয়। তিনি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে আত্মঘাতী হামলা চালাতে চান। প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মেকে হত্যা করতে চান। পরদিন তিনি আবার বলেন, তাঁর লক্ষ্য হচ্ছে কমপক্ষে সংসদের কোনো নেতাকে হত্যা করা। আত্মঘাতী পোশাক গায়ে জড়িয়ে তিনি কিভাবে হামলা চালাবেন-সেই বর্ণনাও দেন।

গোয়েন্দাদের দাবি, শেষ পর্যন্ত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে হামলার পরিকল্পনা করেছিলেন জাকারিয়া। হামলার আগের দিন পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। জাকারিয়া এক সময় উগ্রবাদে জড়ানোর ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তি হিসেবে গোয়েন্দাদের নজরদারিতে ছিলেন বলেও জানানো হয়।

সরকারি আইনজীবী মার্ক হেউড আদালতে বলেন, প্রমাণগুলো থেকে দেখা যাচ্ছে যে, জাকারিয়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে হামলার জন্য বিস্তারিত ছক এঁকেছিলেন এবং নিজের লক্ষ্য ঠিক করেছিলেন।

জাকারিয়ার সঙ্গে মোহাম্মদ আকিব ইমরান নামে ২১ বছর বয়সী অন্য এক যুবকের বিচার চলছে। দুজনকে একইদিন গ্রেপ্তার করা হয়। আকিব ইমরানের সঙ্গে জাকারিয়ার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। আকিব জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস-এ যোগ দিতে সিরিয়া বা লিবিয়ায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। মামলার শুনানি অব্যাহত আছে।


Spread the love

Leave a Reply