ইউক্রেন-রাশিয়া সঙ্কট: তেল ও গ্যাসের দাম রেকর্ড পরিমাণে বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা

Spread the love

বাংলা সংলাপ রিপোর্টঃ ইউক্রেন-রাশিয়া সঙ্কটের মধ্যে সারা বিশ্বে তেল ও গ্যাসের সরবরাহে সমস্যা তৈরি হওয়ার আশঙ্কায় প্রধানতম এই দুটো জ্বালানির দাম বেড়ে যাচ্ছে।

ব্রেন্ট অপরিশোধিত তেলের ব্যারেল প্রতি মূল্য সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। মঙ্গলবার এক ব্যারেল তেলের দাম ছিল ৯৯.৩৮ ডলার।

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে দুটো বিচ্ছিন্নতাবাদী অঞ্চলকে রাশিয়া স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সেখানে সৈন্য পাঠানোর নির্দেশ দেওয়ার পর জ্বালানির মূল্য আরো বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সারা বিশ্বের শেয়ার বাজারেও রাশিয়ার এই সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়েছে।

প্রেসিডেন্ট পুতিনের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছে।

আশঙ্কা করা হচ্ছে যে নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হলে সারা বিশ্বে তেল ও গ্যাসের সরবরাহ বিঘ্নিত হবে।
সৌদি আরবের পর রাশিয়া হচ্ছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল রপ্তানিকারক দেশ। ইউরোপের অনেক দেশের গ্যাসের উৎসও রাশিয়া। এ দেশটিতেই সবচেয়ে বেশি প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদন করা হয়।

রাশিয়া বলছে, তাদের সৈন্যরা স্বঘোষিত স্বাধীন রাষ্ট্র দনেৎস্ক এবং লুহানস্ক-এ “শান্তিরক্ষীর” ভূমিকা পালন করবে।

তবে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, তাদেরকে শান্তিরক্ষী হিসেবে অভিহিত করা হবে “নির্বোধ” আচরণ। ওয়াশিংটন বলছে, আসলে রাশিয়া যুদ্ধের অজুহাত তৈরির চেষ্টা করছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তেলের দামের ওপর ইউক্রেন-রাশিয়া সঙ্কটের বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে।

এমাসের শুরু থেকে ইতোমধ্যেই তেলের মূল্য ১০% বেড়ে গেছে।

“রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলে তারা অপরিশোধিত তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের সরবরাহ কমিয়ে দিতে বাধ্য হবে যার বড় ধরনের প্রভাব পড়বে বিশ্ব অর্থনীতির উপর,” বলেন ম্যানইউলাইফ ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজেমেন্টের সু ত্রিন।

ফিডেলিটি ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক মাইক কুরি বলেছেন, আগামীতে এক ব্যারেল তেলের দাম ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন এর পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে- ইউক্রেন সঙ্কট, যুক্তরাষ্ট্রে ও ইউরোপে শীতকাল এবং তেল ও গ্যাসের সরবরাহে বিনিয়োগের অভাব।

তিনি বলেন, “সারা বিশ্বে ব্যবহৃত ১০ ব্যারেল তেলের একটি আসে রাশিয়া থেকে। একারণে তেলের মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে রাশিয়ার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। এর ফলে পেট্রোল স্টেশন থেকে যারা গাড়ির তেল কেনেন, তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।”
যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের কিছু নিষেধাজ্ঞা বেশ কয়েক বছর ধরেই রাশিয়ার ওপর জারি রয়েছে। তার বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে রাশিয়ার অর্থনীতির উপরেও।

তবে এই নিষেধাজ্ঞা এখন আরো কঠোর ও বিস্তৃত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বলা হচ্ছে আর্থিক ও প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন ব্যক্তির ওপর নতুন করে এসব নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে।

আশঙ্কা করা হচ্ছে যে এরকম পরিস্থিতিতে সারা বিশ্বেই তেল ও গ্যাসের পাইকারি মূল্যও বেড়ে যেতে পারে যার জের ধরে খুচরা মূল্যও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।


Spread the love

Leave a Reply