বিবিসি প্রতিবেদনঃ ইমিগ্র্যান্টদের দখলে লন্ডনের নিউহ্যাম বারা

Spread the love

3426ABF500000578-3590156-image-a-8_1463219751408বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ পুরোপুরি ইমিগ্র্যান্টদের দখলে চলে যাচ্ছে গ্রেটার লন্ডনের নিউহ্যাম কাউন্সিল। ক্রমান্বয়ে ইমিগ্র্যান্টদের বসতি বৃদ্ধির পাশাপাশি কাউন্সিল ছেড়ে চলে যাচ্ছেন স্থানীয় ইংলিশ অধিবাসীরা। গত ১৫ বছরে প্রায় ৭০ হাজার ইমিগ্র্যান্ট অধিবাসী এসে নিউহ্যাম কাউন্সিলে বসতি গড়েছেন। ইমিগ্র্যান্টদের দাপটের কাছে স্থানীয়, কুট্টি ইংলিশ অধিবাসীদের উপস্থিতি প্রায় বিলিয়ন হয়ে গেছে বলে বিবিসির এক ডকুমেন্টারিতে উঠে এসেছে।
ওই ডকুমেন্টারীর তথ্য অনুযায়ী, ইউকের মধ্যে সবচাইতে বেশি মাল্টিকালচারিজম অর্থাৎ বহু সংস্কৃতি ও বহু ভাষার মানুষের বসবাস হল নিউহ্যাম কাউন্সিলে। বারার সর্বমোট জনসংখ্যার প্রায় ৭৩ শতাংশ হলেন এথনিক এবং কালো। প্রায় ১শ ৪৭টি ভাষার মানুষের বসবাস নিউহ্যামে। অথচ এই ১৫ বছর আগেও নিউহ্যামে কর্মজীবি শ্বেতাঙ্গ ইংলিশ স্থায়ী বাসিন্দাদের আধিপত্য ছিল বেশি। বর্তমানে সর্বমোট জনসংখ্যার মাত্র ১৬ শতাংশ হলেন শ্বেতাঙ্গ ইংলিশ। এক দশক আগে তাদের সংখ্যা ছিল ৩৩ দশমিক ৮ শতাংশ।
তবে এখনো যারা আছেন, তারা খুব চেষ্টা করছেন ইংলিশ আদলে ইস্ট এন্ডার্স হিসেবে পুরনো ইংলিশ কালচার বা সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে। তাদের মতে, বহু সংস্কৃতি এবং বহু ধর্ম ও বর্ণের মানুষের বসবাসের কারণে ক্রমেই সংস্কৃতিগত বিভেদ বাড়ছে নিউহ্যামে। ইংলিশ সংস্কৃতি থেকে দূরে গিয়ে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান তৈরী করছেন এথনিক গ্রুপ। আর এক্ষেত্রে বৃটিশ ট্রাডিশনাল বা বুনিয়াদী প্রথা থেকে দূরে আলাদা বলয় তৈরী করছেন মুসলিম কমিউনিটির মানুষই বেশি। নিউহ্যাতের প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ কেউ কারো সঙ্গে কথা বলতে চায় না বা মিশতে চায় না বলে জানান স্থানীয় কুট্টি ইংলিশ বাসিন্দারা।
ইস্টহ্যাম ওয়ার্কিং ম্যানস ক্লাবের সেক্রেটারী পিটার বেল জানান, তিনি গত ২৫ বছর ধরে এ ক্লাবের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ক্লাবটি দীর্ঘদিন ধরে ইস্ট এন্ডের বুনিয়াদী প্রথা অত্যন্ত শক্তভাবে ধরে রাখার চেষ্টা করছে। কিন্তু সেটা সম্ভবত আর ধরে রাখার উপায় নেই বলে দুঃখ প্রকাশ করেন ৬৬ বছর বয়সী পিটার। আলাদা আলাদা কালচার বা সংস্কৃতির মানুষ, কেউ কারো সঙ্গে মিশতে চায় না বলেই একে অন্যের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে বলে মনে করেন পিটার। বৃটিশ ট্রাডিশনাল বা বুনিয়াদী সংস্কৃতি থেকে বিশেষ করে মুসলিম কমিউনিটির মানুষ বেশি দূরে থাকতে চায় বলে মনে করেন পিটার। এখানকার ৯০ শতাংশ মানুষ ভিন্ন সংস্কৃতির কারো সঙ্গে কথা বলতে চায় না বলেও জানান তিনি।
ইউকের মধ্যে সবচাইতে দরিদ্রমত বারা হলো নিউহ্যাম। এখানকার যে কোনো স্ট্রীটে বের হলেই দরিদ্রতার চিহ্ন চোখে পড়ে বলেও মনে করেন অনেকে।
নিউহ্যামে সর্বমোট ৬৬টি প্রাইমারি স্কুল আছে। দুই দশক আগেও এসব স্কুলের প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থী ছিল সাদা বৃটিশ। আর বর্তমানে ড্রিউ প্রাইমারি স্কুল নামে একটি স্কুলে প্রায় ৪৩ ভাষাভাষির শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রতি ক্লাশে মাত্র ৩ জন করে শ্বেতাঙ্গ ইংলিশ শিক্ষার্থী রয়েছে।
উল্লেখ্য ২০১১ সালের আদম শুমারি অনুযায়ী নিউহ্যামে শ্বেতাঙ্গ বৃটিশ জনসংখ্যা হলেন সর্বমোট জনসংখ্যার মাত্র ১৬ শতাংশ। অথচ এক দশক আগে এ সংখ্যা ছিল ৩৩ দশমিক ৮ শতাংশে। ২০১২ সালের লন্ডন অলিম্পিকের অন্যতম প্রধান হোস্ট বারা ছিল নিউহ্যামে। বিবিসি নিউহ্যামের উপর এ ডকুমেন্টারীটি আগামী ২৪শে মে প্রচার করবে।


Spread the love

Leave a Reply