ব্রেক্সিট চুক্তি: শেষ সময়েও সমাধান মেলেনি

Spread the love

বাংলা সংলাপ ডেস্কঃইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে বিচ্ছেদ কার্যকরে যুক্তরাজ্যের সাংসদেরা কেমন চুক্তি মেনে নেবেন, তা যাচাইয়ে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাতে নানা বিকল্প প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হওয়ার কথা। কিন্তু বিচিত্রভাবে বিভক্ত ব্রিটিশ পার্লামেন্টে কোন বিকল্পটি সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থন পাবে, তা শেষ মুহূর্তেও স্পষ্ট হয়নি।

ব্রেক্সিট চুক্তির পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির আইনপ্রণেতারা ঐক্যবদ্ধভাবে কোনো একটি প্রস্তাব সমর্থন করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছিল। কিন্তু তারাও ভিন্ন ভিন্ন প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন।

কনজারভেটিভ পার্টির বেশ কয়েকজন আইনপ্রণেতা গণমাধ্যমকে জানান, প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে সোমবার রাতে দলের আইনপ্রণেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানে তিনি ‘বেকস্টপ’ ব্যবস্থার পরিবর্তন চেয়ে আনা সংশোধনীর পক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য দলের আইনপ্রণেতাদের অনুরোধ জানান। কনজারভেটিভ দলের পেছনের সারির এমপিদের সংগঠন ‘১৯২২ কমিটি’র চেয়ারম্যান গ্রাহাম ব্রাডির আনা ওই সংশোধনী প্রস্তাবে ‘বেকস্টপ’ ধারার বদলে বিকল্প কোনো উপায়ে আয়ারল্যান্ড সীমান্ত উন্মুক্ত রাখার কথা বলা হয়েছে।

সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নিকি মর্গানের নেতৃত্বে কনজারভেটিভ পার্টির ব্রেক্সিটবিরোধী এমপিরাও বেকস্টপ ধারাটি বাদ দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। এর বিকল্প হিসেবে ব্রেক্সিট-পরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন মেয়াদ এক বছর বাড়িয়ে ২০২১ সালের ডিসেম্বর করার কথা বলছেন তাঁরা, যাতে ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নির্ধারণে বাড়তি সময় পাওয়া যায়।

তবে দলটির কট্টর ব্রেক্সিটপন্থী ইউরোপিয়ান রিসার্চ গ্রুপের প্রধান রিচার্ড রিচ মগ বলেছেন, বেকস্টপ ধারা বদলে তাঁরা সন্তুষ্ট নন। এই গ্রুপটি প্রয়োজনে চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিট কার্যকরের পক্ষে।

লেবার পার্টিসহ বিরোধী দলের এমপিরাও বেশ কয়েকটি বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন। তবে শেষ পর্যন্ত কোন প্রস্তাবগুলোর ওপর ভোটাভুটি হবে, সেটি এই প্রতিবেদন (স্থানীয় সময় দুপুর) লেখা পর্যন্ত জানা যায়নি। স্পিকারের সিদ্ধান্তের ওপর সেটি নির্ভর করছে। তবে সংসদে এসব প্রস্তাব পাস হলেও তা মানতে বাধ্য নয় সরকার। তবে তা সরকারের ওপর রাজনৈতিক চাপ তৈরি করবে।

আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমন্ত্রী লিয়াম ফক্স বলেন, এখন ব্রেক্সিট কার্যকরের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে হবে। অন্যথায় ব্রেক্সিট না-ও হতে পারে। আর সেটি হবে সবচেয়ে বাজে পরিস্থিতি।

এদিকে ফাঁস হওয়া একটি চিঠি থেকে জানা যাচ্ছে, চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিটের পরিস্থিতি মোকাবিলায় এক হাজার লোকবল তৈরি রাখার জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে সরকার।

বিবিসির ইউরোপবিষয়ক সম্পাদক ক্যাটিয়া অ্যাডলার জানান, ইইউ নেতারা শেষ মুহূর্তেও যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের বিভক্তি দেখে বিস্মিত। তাঁরা পুনরায় সমঝোতার বিপক্ষে অবস্থানে অটল রয়েছেন।

ইইউর সঙ্গে বিচ্ছেদ কার্যকর করতে প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের সম্পাদিত চুক্তি প্রত্যাখ্যান করে দেন যুক্তরাজ্যের আইনপ্রণেতারা। কিন্তু নানা ভাগে বিভক্ত ব্রিটিশ সংসদে কেমন চুক্তি সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থন পাবে, সেটিও স্পষ্ট নয়। ব্রেক্সিট নিয়ে এমন অচলাবস্থার সমাধান খুঁজতে বিভিন্ন সংশোধনী প্রস্তাবের ওপর মঙ্গলবারের এই ভোট।

এই ভোটাভুটি থেকে ব্রেক্সিট-পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে একটি দিকনির্দেশনা পাবেন প্রধানমন্ত্রী মে। এর ফলে তিনি চুক্তির সুনির্দিষ্ট সংশোধন চেয়ে ইইউর কাছে যেতে পারবেন। এতে পুনঃ সমঝোতার জন্য প্রধানমন্ত্রীর অবস্থানও শক্তিশালী হবে বলে মনে করা হচ্ছে।


Spread the love

Leave a Reply