রামপাল চুক্তি বাতিল না করলে জনগনের মধ্যকার ভারতবিরোধী মনোভাব উসকে যেতে পারে

Spread the love

unnamedসাইদুল ইসলাম :ভারত সরকারের সাথে বাংলাদেশ সরকারের কুটনৈতিক সম্পর্ক কি সেটি অামরা জানিনা। অামরা জানি বাংলাদেশের জনগনের সাথে ভারতের জনগনের ঐতিহাসিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা। অার এই সম্পর্ক এক দিনে বা এক বছরে তৈরি হয়নি। ভৌগলিক সহাবস্থান, বানিজ্যিক কারন, অাত্নীয়তা, সাংস্কৃতিক অাদানপ্রদান, খেলাধুলা সহ বিভিন্ন মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে এই সংম্পর্ক গড়ে উঠেছে। বিশেষ করে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত সরকার এবং তাঁর দেশের জনগনের প্রতিবেশীসূলভ বন্ধুত্বপূর্ন  সহযোগীতা অামাদেরকে ঐতিহাসিকভাবে কৃতজ্ঞ করে রাখবে। এমনকি ২০০৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারী বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম কালো অধ্যায় বিডিঅার বিদ্রোহের সময়ও অামাদের সীমান্ত প্রায় দু দিন অরক্ষিত ছিল। তখনো ভারতের জনগন দীর্ঘদিনের পরিক্ষিত বন্ধুত্বের পরিচয় দিয়েছে। সবকিছু যখন ঠিকটাক চলছে তখন অামাদের দেশের বর্তমান সরকার শুধুমাত্র ক্ষমতা ঠিকিয়ে রাখার স্বার্থে, উপমহাদেশের একমাত্র উদীয়মান পরাশক্তি ভারতের অকুন্ঠ সমর্থন অব্যাহত রাখতে, নিজের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে একের পর এক চুক্তি করে চলেছে। যে চুক্তি গুলো দু দেশের জনগনের মধ্যকার সৃষ্ট বহুকালের বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্কে ছেদ ধরাতে বিরাট ভূমিকা পালন করছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের জনগনের মধ্যে ভারতবিরোধী মনোভাব ব্যাপক অাকার ধারন করছে। সীমান্ত হত্যা থেকে শুরু করে ফেলানীর ঝুলন্ত লাশ কিংবা তিস্তা চুক্তি টিপাইমুখ বাধ সহ বহু অমিমাংসিত সমস্যার সমাধানে দু দেশের সরকার সমানভাবে ব্যার্থ। তেমনি ভাবে এই সমস্ত সমস্যা দীর্ঘদিন থেকে জিইয়ে রাখার ফলে দু দেশের জনগনের মধ্যে দু দেশের প্রতি পাল্টাপাল্টি বৈরিতা তৈরি হচ্চে। যার প্রমান কলকাতায় সাম্প্রতিক সময়ে অায়োজিত অাজাদী কনসার্টে  বাংলাদেশী ব্যান্ড মাইলস্ -এর নির্ধারিত কনসার্ট বাতিল করে দিয়েছে অায়োজক সংস্থা। অভিযোগ মাইলসের কয়েকজন সদস্য নিয়মিতভাবে ভারতবিরোধী প্রচারনায় লিপ্ত। তাই তারা ভারতের মাঠিতে মাইলস্ কে কনসার্ট করতে দিবে না। ভারতের সাথে ট্রানজিট সহ বেশ কিছু বানিজ্যিক চুক্তি নিয়ে সরকার যখন জনগনকে অন্ধকারে রেখেছে। ঠিক তখনই  সংসদে কিংবা বাইরে কোন ধরনের অালাপ অালোচনা না করে, পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মতামত বা পরামর্শ না নিয়ে, পাঁচ পাঁচ বার পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক রামপাল অাবেদন প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পরও এমনকি ভারতের পরিবেশ বিশেষজ্ঞরাও পর্যন্ত যেখানে বলছেন এমন প্রকল্প সুন্দরবনের পরিবেশ ও জীববৈচিত্রের জন্য মারাত্মক ক্ষতি সাধন করবে, সরকার সেখানে কানে তুলো দিয়ে সম্পুর্ণ  একগোয়েমি ভঙ্গিমায় এগিয়ে চলছে। জনগনের কথায় কোন কর্ণপাথ করছে না। উল্টো সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে সুন্দরবনের ক্ষতি হলেও তারা এই প্রকল্প থেকে সরে অাসবে না। সরকারের এমন দেশবিরোধী অাচরনে বাংলাদেশের জনগনের মধ্যে প্রশ্ন জাগতেই পারে, কার স্বার্থে? কীসের স্বার্থে?  সরকার পরিবেশ এবং জীববৈচিত্রের উপর এমন নিষ্ঠুর প্রতিশোধ নিতে চলেছে? উত্তর যদি হয় গদি ঠিকিয়ে রাখা তবে সবিনয়ে বলবো হে সরকার, তোমার গদির  খুটি মজবুত রাখতে অামার সুন্দরবনকে শ্মশান হতে দিতে পারি না, পারবো না। এতে যদি ভারত এবং বাংলাদেশের জনগনের মধ্যকার বহুদিনের বন্ধুত্বে কোন ছেদ পড়ে, তবে তার সব দায়দায়িত্ব মোদী এবং শেখের বেটিকেই নিতে হবে। জনগনের কথা না শুনলে এর পরিনাম হতে পারে ভয়াবহ। সুতরাং দেশের একজন সাদাসিদে জনগন হিসেবে বলবো, সময় থাকতে জনগনের হূদস্পন্দন বোঝার চেষ্টা করুন।


Spread the love

Leave a Reply