লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য কিনলেন সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ থেরেসা মে। তিনি বৃটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। পণ্য কেনার জন্য স্থানীয় ওয়েট্রোস স্টোরের বাইরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি। তার জন্য কোনো ভিআইপি ছাড় নেই। তিনি একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলে তাকে সবার আগে পণ্য কেনার সুযোগ দিতে হবে এমন কোনো কথা নেই। তিনিও সে চেষ্টা করেন নি। তিনি শুধু লাইনেই দাঁড়ান নি। একই সঙ্গে রক্ষা করছেন সামাজিক দূরত্ব।
৬ মিটার দূরত্ব বজায় রেখে তিনি যখন লাইনে দাঁড়ানো, তখন তার হাতে মোবাইল। তাতে তিনি কিছু একটা চেক করছিলেন। প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে লন্ডনের অনলাইন ডেইলি মেইল।
![](https://mzamin.com/news_image/1589082358.jpg)
এতে বলা হয়েছে, তেরেসা মে এখন আর ডাউনিং স্ট্রিটের বাসিন্দা নন। অর্থাৎ তিনি এখন আর প্রধানমন্ত্রী নন। ব্রেক্সিটের বলি হয়ে গত বছর জুলাইয়ে ক্ষমতা তুলে দিয়েছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের হাতে। তাকে এই করোনা সঙ্কটকালে শনিবার দেখা গেছে স্থানীয় একটি ওয়েট্রোস দোকানের বাইরে ওভাবেই লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি সামাজিক দূরত্ব রক্ষার এক উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন।
তেরেসা মে’র একটি বিখ্যাত উক্তি আছে। তিনি বলেছিলেন, তার দুষ্টুমির মধ্যে একবার তিনি গমের ক্ষেতের ভিতর দিয়ে দৌড়েছিলেন। সেই তাকে এবার দেখা গেছে বার্কশায়ারে ওই ওয়েট্রোস স্টোরের সামনে হাতে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ধরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ঠায় দাঁড়িয়ে আছেন। এ সময় তার পরনে ছিল স্মার্ট কালো ব্লেজার, লালচে একটি স্কার্ফ এবং গাঢ় সানগ্লাস। শান্ত মাথায় তিনি সেখানে দাঁড়িয়ে আছেন। কখনো মোবাইল চেক করছেন। ৬ ফুটের দূরত্ব বজায় রেখে গুড ফ্রাইডে রাশ শপিংয়ের সময় তিনি হয়তো এ সময় বাকি বিশ^কে দেখে নিচ্ছিলেন মোবাইলে। তিনি গত জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রিত্ব ছাড়লেও ব্যাকবেঞ্চের একজন এমপি এখনও। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে যখন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল, তখন তিনি একটি বিরল বিবৃতি দিয়েছিলেন। সাধারণত তিনি খুব একটা কথা বলেন না। তবে তেরেসা মে ওই বিবৃতিতে বলেছিলেন, বরিস জনসন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ সময়ে তার প্রতি ও তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি আমার সহমর্মিতা ও প্রার্থনা থাকছে।
![](https://mzamin.com/news_image/1589082375.jpg)
৬৩ বছর বয়সী ক্ষমতাসীন কনজার্ভেটিভ দলের এই এমপি ওই স্টোরে প্রবেশ করে ৪৫ মিনিট অতিবাহিত করেন। সেখানে সাজিয়ে রাখা বিভিন্ন খাদ্যপণ্য ঘুরে দেখেন। কিনে নেন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। এরপর একটিমাত্র ব্যাগ হাতে নিয়ে স্টোর ত্যাগ করেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি প্রমাণ করেন, তিনি খাবার মজুদ করে রাখার মতো পণ্য কেনে নি। তিনি সবটা নিয়ম মেনে কেনাকাটা করেছেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন না স্বামী ফিলিপ। তাকে তিনি সোনিংয়ের বাড়িতে রেখে এসেছিলেন। এই সোনিং এলাকায় বসতি জর্জ ক্লুনি, আমাল ক্লুনি ও লেড জেপেলিনের তারকা গিটারিস্ট জিমি পেইজের।
![](https://mzamin.com/news_image/1589082425.jpg)
এদিন যে শুধু বিখ্যাত মুখের মধ্যে তেরেসা মে’ই কেনাকাটা করেছেন ইস্টার উইকএন্ডে তা নয়। কেনাকাটা করেছেন ‘আওয়ার গার্ল’ ছবির অভিনেত্রী মিশেলে কেগানও। তাকে দেখা গেছে এসেক্সে অবস্থিতি এমঅ্যান্ডএস-এর বাইরে একটি ট্রলি ঠেলে নিচ্ছেন। অন্যদিকে পশ্চিম লন্ডনের বাডজেন্সের বাইরে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় অভিনেত্রী হেলেনা বোনহ্যাম কার্টারকে।
![](https://mzamin.com/news_image/1589082439.jpg)
বৃটেনে সব সুপারমার্কেটে সব কাস্টমারের জন্য সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার বিধান চালু করেছে। এটা করতে গিয়ে কখনো কখনো কাস্টমারের লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘ হচ্ছে। সেই লাইন কখনো চলে যাচ্ছে গার্ড়ি পার্কিং এলাকায়। বৃটিশদের এখন শুধু বাইরে বের হওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে এবং বলা হয়েছে, শুধু যখন প্রয়োজনীয় জিনিসের দরকার হবে তখনই যেন তারা বাইরে যান। অনলাইনে কেনাকাটার সুযোগ থাকলেও অনেক পরিবারকে সপ্তাহে কমপক্ষে একবার বিভিন্ন স্টোরে বা দোকানে যেতে হচ্ছে।