আঙ্কারায় আত্মঘাতী হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৭, বিশ্ব সম্প্রদায়ের নিন্দা-ক্ষোভ
বাংলা সংলাপ ডেস্ক:
তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় ভয়াবহ আত্মঘাতী গাড়ি বোমা হামলায় অন্তত ৩৭ জন নিহত হয়েছেন। রোববার রাতে তুরস্কের অন্যতম প্রধান পরিবহন কেন্দ্র কিজিলাই জেলায় অবস্থিত গুভেন পার্কে এই বিস্ফোরণ ঘটে। এতে আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১২৫ জন। হতাহতের সংখ্যা বাড়তে পারে।
হামলার পরপর আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলোর খবরে জানানো হয়, ভয়াবহ এ হামলায় ৩৪জনের প্রানহানী ঘটে। পরে সোমবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী মেহমেত মুয়েজ্জিনোগলু টেলিভিশনে বলেন, আজ সকালের এই হামলায় গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরো তিন জন নাগরিক মারা গেছেন। এছাড়াও হামলায় অন্তত এক হামলাকারীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন তিনি। এখন পর্যন্ত কোন গোষ্ঠী বা সংগঠন এই হামলার দায়িত্ব স্বীকার না করলেও সরকার এই ঘটনার জন্য নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)-কে সন্দেহ করছে।
এই ঘটনার পর দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোগান সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে চলমান অভিযান আরও জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছেন। এরদোগান বলেন, এই আত্মঘাতী গাড়ি বোমা হামলা সন্ত্রাসীদের দমনে তুরস্কের নিরাপত্তা বাহিনীর সংকল্পকেও আরো সুদৃঢ় করবে। জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশবাসীর চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই। এটা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে একটি যুদ্ধ। এই যুদ্ধ সফলভাবেই শেষ হবে এবং আমরা সন্ত্রাসবাদকে পরাজিত করবই।
সর্বশেষ খবরে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাতোলি জানিয়েছে, পাল্টা জবাব হিসেবে তুরস্কের জঙ্গিবিমান সোমবার ইরাকের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত কুর্দি বিদ্রোহীদেরঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়, ইরাকের উত্তরাঞ্চলে পার্বত্য কান্দিল ও গারা অঞ্চলে অবস্থিত নিষিদ্ধ ঘোষিত কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)’র অস্ত্রাগার ও আশ্রয়স্থলকে লক্ষ্য করে তুরস্কের জঙ্গি বিমান হামলা চালিয়েছে।
এদিকে তুরস্কে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়েছেন বিশ্ব নেতৃবৃন্দ। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরুন এক টুইটার বার্তায় তুর্কি জনগণকে সমবেদনা জানিয়ে বলেছেন, আঙ্কারায় সন্ত্রাসী হামলায় বিস্মিত হয়েছি। নিন্দা জানিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, ‘আমরা সন্ত্রাসবাদের ঝুঁকি মোকাবেলায় আমাদের ন্যাটোভুক্ত মিত্র তুরস্কের সঙ্গে আমাদের শক্তিশালী অংশীদারিত্বের বিষয়টি দৃঢ়তার সঙ্গে পুনর্ব্যক্ত করছি।
ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পুশকভ এক বিবৃতিতে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন আঙ্কারায় সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়ে তুর্কি জনগণের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। ন্যাটো জোটের মহাসচিব স্টোলেটেনবার্গও সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়েছে এক বিবৃতিতে বলেছেন, এই ধরনের জঘন্য সহিংসতার কোন ন্যায়সঙ্গত যুক্তি থাকতে পারে না।