আফগানিস্তান: যুক্তরাজ্যের ত্যাগ বৃথা যায়নি – টনি ব্লেয়ার

Spread the love

বাংলা সংলাপ রিপোর্টঃ টনি ব্লেয়ার বলেছেন, আফগানিস্তানে ব্রিটিশ সম্পৃক্ততা তালেবান দখল সত্ত্বেও “আশাহীন প্রচেষ্টা” ছিল না।

প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাজ্যের সৈন্যদের দেওয়া ত্যাগ – যারা মারা গিয়েছিল – “বৃথা যায়নি”।

মি ব্লেয়ার বলেন, গত ২০ বছরে দেশে অর্জনগুলি – তালেবান শাসন ছাড়াই বেড়ে ওঠা একটি প্রজন্ম – একটি “ভাল কারণ” যা “আজ গুরুত্বপূর্ণ”।

দেশ থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের মার্কিন সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন তিনি।

সম্প্রচারকারীদের সাথে কথা বলার সময়, প্রাক্তন লেবার নেতা উদ্বেগ ভাগ করে নিয়েছিলেন, কেবল আফগান জনগণের জন্যই নয়, যারা পশ্চিমা দেশগুলির নিরাপত্তার জন্য দাঁড়িয়েছিল।

মি ব্লেয়ার – যিনি ২০০১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আফগানিস্তানে আক্রমণ করার সময় যুক্তরাজ্যের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন – বলেছিলেন আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ‘অনন্ত যুদ্ধের অবসান’-এর মতো একটি ‘অহেতুক স্লোগানকে’ মাথায় রেখে, বলেছেন ব্লেয়ার।

২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আল-কায়েদার হামলার পর মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সেনারাও আফগানিস্তানে অভিযানে নামে; সেসময় ব্লেয়ার যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।

এখন মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের আফগানিস্তান ছেড়ে আসা বিভিন্ন জিহাদি গোষ্ঠীকে ‘উল্লসিত’ করবে বলেও ধারণা লেবার পার্টির সাবেক এ নেতার।

“যাদের প্রতি আমাদের দায় আছে, তাদের সরিয়ে নেওয়া ও আশ্রয় দেওয়া আমাদের কর্তব্য। যে আফগানরা আমাদের সহায়তা করেছিল, আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল, এবং যাদের আমাদের প্রতি দাবি আছে, তাদের পাশে আমাদের দাঁড়াতে হবে,” নিজের ওয়েবসাইটে দেওয়া বিবৃতিতে এমনটাই বলেছেন ব্লেয়ার।

যাদের আফগানিস্তান থেকে সরানো দরকার, তাদের না সরানো পর্যন্ত আফগানিস্তানে অবস্থান করা যুক্তরাজ্যের ‘নৈতিক দায়িত্ব’, বলেছেন তিনি।

রোববার যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের বাইরে হুড়োহুড়িতে ৭ বেসামরিক আফগান নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে।

নিজের পোস্টে ব্লেয়ার লেখেন, আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তটি রাজনৈতিক কারণে নেওয়া হয়েছে, ব্যবহার করা হয়েছে ‘অনন্ত যুদ্ধের অবসান’ স্লোগান।

যুক্তরাষ্ট্রের এখনকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার নির্বাচনী প্রচারণায় এই স্লোগানটি ব্যবহার করেছেন।

“আমাদের এটা (সেনা প্রত্যাহার) দরকার ছিল না, আমরাই এটা বেছে নিয়েছি,” লিখেছেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্র চলতি বছরের ৩১ অগাস্টের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের আশ্বাস দিয়েছিল। যদিও বাইডেন সম্প্রতি বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি থেকে নাগরিক, কূটনীতিক ও সহযোগীদের সরানো শেষ না হওয়ায় এই সময়সীমা পার হওয়ার পরও আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা থেকে যেতে পারে।

আফগানিস্তানে পশ্চিমারা ভুল করেছে বলে মেনেও নিয়েছেন ব্লেয়ার।

“কিন্তু আমাদের ভুলের প্রতিক্রয়ায় যা হচ্ছে, তা আরও ভুল,” বলেছেন তিনি।

সাবেক এ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিখুঁত না হলেও গত ২০ বছরে (আফগানিস্তানে) যা অর্জিত হয়েছে, তা সম্ভবত হারিয়ে যাবে।

“বিশ্বজুড়ে সব জিহাদি গোষ্ঠীকে এ সেনা প্রত্যাহার উল্লসিত করবে,” বলেছেন তিনি।

আফগানিস্তান থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনী চলে যাওয়ায় রাশিয়া, চীন ও ইরান লাভবান হবে বলেও মত তার।

“পশ্চিমা নেতারা এখন কাউকে প্রতিশ্রুতি দিলেও সেগুলোকে এখন বোধগম্যভাবেই আর বিশ্বাসযোগ্য মনে হবে না,” লিখেছেন তিনি।


Spread the love

Leave a Reply