ইউক্রেনের পাল্টা-হামলা ঠেকিয়ে ২৫০ শত্রু-সেনা হত্যার দাবি রাশিয়ার

Spread the love

ডেস্ক রিপোর্টঃ রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করছে তারা দোনেৎস্কে একটি বড় ইউক্রেনীয় হামলা প্রতিহত করেছে এবং আড়াইশো ইউক্রেনীয় সৈন্যকে হত্যা করেছে। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, তারা ইউক্রেনের অনেক সাঁজোয়া গাড়িও ধ্বংস করেছে।

লড়াইয়ের সময় ধারণ করা হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে এমন ভিডিওতে দেখা যায় যুদ্ধক্ষেত্রে সামরিক যানবাহন তীব্র হামলার মুখে পড়েছে।

তবে রাশিয়ার এই দাবির ব্যাপারে কিয়েভ কোন মন্তব্য করেনি এবং রাশিয়ার এই দাবি স্বাধীন সূত্র থেকে যাচাই করা যায়নি।

ইউক্রেন একটি পাল্টা হামলা চালাতে পারে বলে অনেকদিন ধরেই ধারণা করা হচ্ছিল, কিন্তু কিয়েভ বলছে তারা এরকম হামলার কোন আগাম সংকেত দেবে না।

ইউক্রেন যে পাল্টা-হামলার কথা বলছিল এটি তার সূচনা কি না তা বলার সময় এখনো আসেনি।

তবে যুদ্ধে অন্য কয়েকটি জায়গায় ইউক্রেন যেসব ছোট-খাট সাফল্য দাবি করছে তাতে মনে হয় তাদের সামরিক তৎপরতা সাম্প্রতিক সময়ে বেড়েছে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, ইউক্রেন রবিবার ব্যাপক মাত্রায় দোনেৎস্কে এক পাল্টা-হামলা শুরু করেছিল ছয়টি যান্ত্রিক এবং দুটি ট্যাংক ব্যাটালিয়ন দিয়ে।

রাশিয়া দাবি করছে, ইউক্রেনিয়ানরা চেষ্টা করেছিল রুশ প্রতিরক্ষা লাইন ভেদ করার। কারণ কিয়েভ মনে করে যুদ্ধক্ষেত্রে এখানেই ছিল রাশিয়ার সবচেয়ে বড় দুর্বলতা। তবে রাশিয়া বলছে, ইউক্রেনের এই লক্ষ্য অর্জিত হয়নি, তারা কোন সাফল্য পায়নি।

মস্কো দাবি করছে এই লড়াইয়ে ইউক্রেনের আড়াইশো সেনা নিহত হয়েছে, সেই সঙ্গে ধ্বংস হয়েছে ১৬টি ট্যাংক।

ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় অস্ত্র-শস্ত্রে সুসজ্জিত সেনাদের মুখে মুখোশ এবং তারা তাদের ঠোঁটের ওপর আঙ্গুল ধরে রেখেছে।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি এখনো যাচাই করা যায়নি। ফুটেজে যেরকম দেখা যাচ্ছে, ইউক্রেনের সাঁজোয়া বহর যদি সত্যি সেরকম তীব্র আক্রমণের মুখে পড়ে থাকে, তাহলে বুঝতে হবে রুশ দখল থেকে নিজেদের ভূমি মুক্ত করতে গিয়ে ইউক্রেনের বাহিনীকে তীব্র প্রতিরোধের সম্মুখীন হতে হবে।

আর যদি এই ভিডিও ফুটেজ সত্যি না হয়, তাহলে বুঝতে হবে মস্কো আসলে যুদ্ধের বর্তমান অবস্থার ভিন্ন চিত্র তুলে ধরতে চাইছে তাদের মতো করে।

ইউক্রেন তাদের পাল্টা অভিযান কখন কিভাবে শুরু করবে, তা নিয়ে সম্প্রতি প্রচুর বার্তা দিচ্ছিল।

এই অভিযানের প্রস্তুতি তারা নিচ্ছে বহু মাস ধরে। তবে নিজেদের সৈন্যদের প্রস্তুত করা এবং পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে আরও অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র পাওয়ার জন্য তারা এটি যতটা সম্ভব পিছিয়ে দিচ্ছিল।

কিয়েভের কর্মকর্তারা অবশ্য এই অভিযান নিয়ে জল্পনার বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিচ্ছিলেন, তারা বলছিলেন এরকম জল্পনা থেকে শত্রুপক্ষ লাভবান হতে পারে।

ইউক্রেনের এই অভিযানের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে, কারণ পশ্চিমা মিত্র এবং দেশের জনগণকে কিয়েভের সরকারকে দেখাতে হবে যে তারা রাশিয়ার প্রতিরক্ষা লাইন ভেদ করতে সক্ষম।

সোমবার সকালে ইউক্রেনের বাহিনীর একজন কমান্ডার ওলেকসান্দর সিরস্কি বলেছেন, তার সৈন্যরা বাখমুটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং শহরের কাছে একটি রুশ অবস্থান ধ্বংস করেছে।

অন্যদিকে মস্কোর বিরুদ্ধে যুদ্ধরত কিছু যোদ্ধা বলেছে, তারা ইউক্রেনে সীমান্তের কাছে রুশ শহর বেলগোরদে কিছু রুশ সৈন্যকে আটক করেছে।

লিবার্ট অব রাশিয়ান লিজিয়ন (এফআরএল) নামে একটি বাহিনী এই দাবি করেছে। একটি যুক্ত ঘোষণায় এই দাবি করা হয়, যেখানে রাশিয়ান ভলান্টিয়ার কোর (আরডিকে) বলে আরেকটি গ্রুপের নাম আছে।

এই দুটি গ্রুপই প্রেসিডেন্ট পুতিনকে ক্ষমতা থেকে সরাতে চায়। তারা ইউক্রেনে রাশিয়ার সর্বাত্মক অভিযানের বিরোধিতা করে।

বেলগোরদের শীর্ষ কর্মকর্তা ভিয়াচেস্লাভ গ্লাদকভ জবাবে বলেছেন, যদি এই সৈন্যরা এখনো জীবিত থাকে তিনি তাদের জিম্মিকারীদের সঙ্গে দেখা করতে রাজী হয়েছিলেন। তবে এই যোদ্ধারা পরে দাবি করে, বেলগোরদের গভর্নর তাদের সঙ্গে দেখা করার সাহস করে উঠতে পারেন নি, তাই তারা এখন এই সৈন্যদের ইউক্রেনের হাতে তুলে দেবে।

সীমান্তবর্তী এলাকায় সাম্প্রতিক হামলাগুলোর জন্য রাশিয়া ইউক্রেনকে দায়ী করেছে। তবে কিয়েভ বলেছে, তারা এর সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত নয়।

বেলগোরদের কর্তৃপক্ষ জানান, সোমবার সকালে এক ড্রোন হামলার পর একটি জ্বালানি কেন্দ্রে আগুন ধরে গেছে।

অন্যদিকে রাশিয়ার কালুগা অঞ্চলে- যেটি মস্কোর লাগোয়া দক্ষিণ দিকের জেলারগুলোর কাছে, সেখানে রাস্তায় দুটি ড্রোন এসে পড়েছে বলে জানিয়েছেন গভর্নর ভ্লাডিস্লাভ শাপশা।

মি. শাপশা বলেন, সেখানে কোন বিস্ফোরণ ঘটেনি এবং পুরো এলাকাটি এখন ঘিরে ফেলা হয়েছে।

এই দুটি হামলার ঘটনাও স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি।

তবে মস্কো বলেছে, বেলগোরদে সম্প্রতি ইউক্রেন থেকে নিয়মিত হামলা করা হয়েছে।


Spread the love

Leave a Reply