ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার মিসাইল হামলা, নিহত অন্তত ২৫

Spread the love

ডেস্ক রিপোর্টঃ রাজধানী কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে আবারও বড় ধরনের মিসাইল হামলা চালিয়েছে রাশিয়া, যাতে অন্তত ২৫জন নিহত হয়েছে।

ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলছেন, দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় শহর উমানে কয়েকটি ফ্ল্যাটের ওপর চালানো শুক্রবারের হামলায় একটি শিশুসহ ২৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

স্থানীয় একজন মেয়র জানিয়েছেন দনিপ্রো শহরে মিসাইলের আঘাতে তিন বছরের একটি শিশু এবং একজন নারী নিহত হয়েছেন।

মধ্যাঞ্চলীয় আরো একটি শহর ক্রেমেনচুকেও বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন উমান শহরের যে ১০টি আবাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে – এই অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকটি তার অন্যতম।

রাষ্ট্রীয় উদ্ধারকারী বাহিনী বলছে হামলায় যে শিশুটি মারা গেছে, ২০২৩ সালেই তার জন্ম।

এছাড়াও আরো ১১ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।

পাল্টা আক্রমণের আগেই রুশ হামলা?

ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেক্সেই রেজনিকফ বলছেন, রাশিয়ার ওপর পাল্টা আক্রমণ শানানোর জন্যে তাদের প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে।

পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতিরক্ষা জোট নেটো বলছে, তারা ইউক্রেনকে যেসব যুদ্ধ সরঞ্জাম দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তার ৯৮ শতাংশই কিয়েভের কাছে সরবরাহ করা হয়েছে।

ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী অত্যাধুনিক এসব অস্ত্র দিয়ে রুশ সৈন্যদের ওপর হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

এসব অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ট্যাঙ্ক, সাঁজোয়া যান এবং প্রচুর গোলাবারুদ।

প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, সর্বশেষ এই আক্রমণ থেকে আবারও প্রমাণ হচ্ছে যে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরো আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। রাশিয়ার এই আক্রমণকে তিনি “বদমাশের” কাজ বলে মন্তব্য করেন।

“অশুভ শক্তিকে অস্ত্র দিয়ে থামানো সম্ভব। আমাদের রক্ষাকারীরা সেটা করছে। নিষেধাজ্ঞা দিয়েও একে থামানো যাবে – আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরো বাড়াতে হবে,” এক টুইট বার্তায় বলেন মি. জেলেনস্কি।

৫১ দিন পর কিয়েভে হামলা

রাজধানী কিয়েভে সামরিক প্রশাসন বলছে ৫১ দিন পর এই শহরে আবারও রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত করলো।

তবে তাতে কতজন হতাহত হয়েছে সেবিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানা যায়নি।

টেলিগ্রামে পোস্ট করা এক বার্তায় সামরিক কর্মকর্তারা বলছেন রাশিয়ার ছোঁড়া ২৩টি ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে ২১টিকে ইউক্রেনের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সাহায্যে আকাশেই ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে।

এছাড়াও রাশিয়ার আরো দুটি ড্রোনকেও গুলি করে মাটিতে নামানো হয়।

টেলিগ্রামে ইউক্রেনের স্টেট বর্ডার সার্ভিসের পোস্ট করা একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে উমান শহরের অ্যাপার্টমেন্ট ভবনটি মিসাইল হামলায় কতোটা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তার একজন বাসিন্দা ওলগা সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন হামলায় তার অ্যাপার্টমেন্টের জানালাগুলো উড়ে গেছে এবং “তার পরেই বিস্ফোরণ ঘটেছে।”

পরে জরুরি বিভাগের কর্মীরা এসে সেখান থেকে মৃতদেহগুলো উদ্ধার করে।

আরেকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেছেন স্থানীয় সময় ভোর সাড়ে চারটার দিকে তিনি একটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান।

তিনি বলেন, “খুব শক্তিশালী দুটো বিস্ফোরণ হয়েছে, এর পর সবকিছুতে আগুন ধরতে শুরু করে, গাড়িগুলোতেও আগুন লেগে যায়।”

ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা যখন পশ্চিমা মিত্র দেশগুলোর কাছ থেকে পাওয়া ট্যাঙ্কসহ নতুন নতুন অস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করার কথা বলছেন, তখনই ইউক্রেনজুড়ে এই হামলা চালানো হলো।

শীতের সময় চালানো যুদ্ধে রাশিয়া খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি।

কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহর বাখমুত দখলের জন্য প্রায় ১০ মাস ধরে সেখানে লড়াই চলছে।

কী কারণে রাশিয়া শুক্রবার এই হামলা চালালো তা এখনও পরিষ্কার নয়, তবে এর আগেও মস্কো ইউক্রেনের বেসামরিক অবকাঠামো লক্ষ্য করে বড় ধরনের আক্রমণ পরিচালনা করেছে।

মস্কো বলেছে তারা বেসামরিক লোকজনকে টার্গেট করে হামলা চালায় না, তবে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইউক্রেনের রাশিয়ার “বিশেষ সামরিক অভিযান” শুরু হওয়ার পর হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ হতাহত হয়েছে।


Spread the love

Leave a Reply