ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের নিন্দা জানিয়ে পদত্যাগ করলেন রুশ কূটনীতিক

Spread the love

বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধকে ‘নৃশংস এবং বিচারবুদ্ধিহীন’ আখ্যা দিয়ে পদত্যাগ করলেন এক রুশ কূটনীতিক। এ যুদ্ধের জন্য তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে দায়ী করেছেন। বরিস বনদারেভ নামের ওই কূটনীতিক জেনেভায় জাতিসংঘের রুশ মিশনে কাজ করতেন।

তিনি বিবিসিকে জানিয়েছেন, তার এ সিদ্ধান্তের জন্য ক্রেমলিন এখন তাকে বিশ্বাসঘাতক বলবে। কিন্তু এই যুদ্ধকে তিনি ইউক্রেন এবং রাশিয়া, উভয় দেশের জনগণের বিরুদ্ধে ‘অপরাধ’ হিসেবে বিবেচনা করছেন। তার পদত্যাগ নিয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি মস্কো।

জেনেভা কার্যালয়ে অন্য দেশগুলোর মিশনে চিঠি পাঠিয়েছেন বনদারেভ। সেই চিঠিতে তিনি ইউক্রেনে রুশ হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। একইসঙ্গে ২০ বছর কূটনীতিক হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর পদত্যাগের বিষয়টি জানান। চিঠিতে তিনি বলেন, শুধু ইউক্রেন নয়, পুরো পশ্চিমা বিশ্বের বিরুদ্ধেই যুদ্ধ শুরু করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তাই শুধু ইউক্রেনের জনগণের সঙ্গেই অপরাধ করা হচ্ছে না, রাশিয়ার মানুষের সঙ্গেও অপরাধ হচ্ছে। বরিস বনদারেভ দাবি করেন, রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কূটনীতি বলতে কিছু হয় না যা হয়, তা হল আগ্রাসন শুরু করতে উস্কানি, মিথ্যা বলা ও ঘৃণা ছড়ানো।
ইউক্রেনে যুদ্ধ নিয়ে সরকারের অবস্থানের বিরুদ্ধে যারা কথা বলছেন তাদের বিরুদ্ধে চড়াও হচ্ছে পুতিন সরকার। রাশিয়ার কাছে ইউক্রেনে যা হচ্ছে তা একটি বিশেষ অভিযান। প্রথম দিকে যারা এই অভিযানের বিরোধীতা করে রাশিয়ার বিভিন্ন শহরে আন্দোলন বা বিক্ষোভ করেছে, তাদেরকে কঠিন হাতে দমন করা হয়েছে।
নিজের সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্টে তার পদত্যাগের কারণও জানিয়েছেন বনদারেভ। তিনি বলেন, এই রক্তাক্ত, বিচারবুদ্ধিহীন এবং অপ্রয়োজনীয় যুদ্ধের অংশ হতে চান না তিনি। এই যুদ্ধ যারা শুরু করেছে তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে আজীবন ক্ষমতায় থাকা। আর এ জন্য তারা যত খুশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নিতে পারেন। হাজার হাজার রুশ এবং ইউক্রেনীয় এদের কারণেই প্রাণ হারিয়েছেন।

চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়া। এর পর থেকে তিন মাসে কয়েকজন রুশ কূটনীতিক পদত্যাগ করেছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। তবে তারা কেউ রাশিয়ার বিরুদ্ধে বরিস বনদারেভের মতো কড়া ভাষায় কথা বলেননি। বিবিসিকে বনদারেভ জানান, পদত্যাগ ছাড়া তার সামনে আর কোনো রাস্তা খোলা ছিল না। যদিও এতে করে পরিস্থিতি কিছু পাল্টে যাবে বলে বিশ্বাস করেন না তিনি। তবে বড় একটি দেয়ালের একটি ইট খুলে আনা গেছে বলে মনে করেন বনদারেভ। তিনি তার দেশকে নিয়ে এর আগে এত লজ্জিত হননি বলেও জানান। তিনি এখন তার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।


Spread the love

Leave a Reply