ইউরোপে চিংড়ি রপ্তানির জটিলতা কমায় আশাবাদী ব্যবসায়ীরা
চিংড়ি রপ্তানীর ক্ষেত্রে প্রতিটি চালানের জন্য আলাদা স্বাস্থ্য সনদের বাধ্যবাধকতা তুলে নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এতে করে বাংলাদেশ থেকে চিংড়ি রপ্তানীতে অর্থ ও সময় দুটোই সাশ্রয় হওয়ায় দারুন খুশি ব্যবসায়ীরা। একই সাথে ইইউ’র আস্থা অর্জন করতে পারায় চিংড়ি রপ্তানী বাড়বে বলে আশা করছেন রপ্তানীকারকরা।
এক দশক আগে থেকে বাংলাদেশের চিংড়িতে ক্ষতিকর মাত্রায় রাসায়নিক পদার্থ নাইট্রোফুরানের উপস্থিতি পাওয়ার পর থেকে তা নিয়ে অসন্তোষ জানিয়ে আসছিল ইইউ। এক পর্যায়ে ২০১০ সালে বাংলাদেশ ইউরোপে চিংড়ি নেয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। ছয় মাস পর রপ্তানি পুনরায় শুরু হলেও বিশেষ পরীক্ষার মধ্য দিয়ে তা করতে হত। প্রতিটি চালানের জন্য আলাদা স্বাস্থ্য সনদ দিতে হত, যা রপ্তানির ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দেখে আসছিলেন বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা।
তবে ইউরোপীয় কমিশনের স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্ল্যান্ট, ফুড, এনিমেল, ফুড অ্যান্ড ফিড সম্প্রতি প্রতিটি চালানে স্বাস্থ্য সনদ এই বাধ্যবাধকতা তুলে নিয়েছে বলে রপ্তানিকারকরা জানিয়েছেন। বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এস এম আমজাদ হোসেন জানান, এর আগে প্রতিটি চালানের সঙ্গে হেলথ সার্টিফিকেট দিতে হত। এখন আর এটা লাগবে না। এর মাধ্যমে ইউরোপের বাজারে আরও আস্থাভাজন হলাম। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়টি সরকারকে সম্প্রতি জানিয়েছে। আমাদেরকেও একটি কপি দিয়ে অবহিত করেছে।
এর ফলে প্রায় অর্ধযুগ পর বাংলাদেশের চিংড়ির সবচেয়ে বড় বাজার ইউরোপে এই হিমায়িত পণ্য রপ্তানি অনেক সহজ হল। মৎস্য অধিদপ্তরের ফিস ইনসপেকশন অ্যান্ড কোয়ালিটি কনট্রোল ডিপার্টমেন্ট থেকে এই সনদ নিতে হত রপ্তানিকারকদের। এতে রপ্তানিতে খরচ বাড়ার পাশাপাশি অতিরিক্ত সময়ও লাগত। বাধ্যবাধকতা তুলে নিলেও চিংড়ির বাজার ধরে রাখতে নিজেদের স্বাস্থ্য মান পরীক্ষা অব্যাহত রাখবেন বলে জানান আমজাদ হোসেন।
চিংড়ি রপ্তানি করে বাংলাদেশ বছরে দেড় হাজার কোটি টাকার মতো আয় করে। বাংলাদেশ থেকে সারাবিশ্বে মোট সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার চিংড়ি রপ্তানি হয়, এর মধ্যে ৯০ ভাগের বেশি রপ্তানি হয় ইউরোপে।