করোনাভাইরাস: মৃতের সংখ্যায় চীনকে ছাড়িয়ে গেল ইতালি

Spread the love

বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ করোনাভাইরাস সংক্রমণে ইতালিতে প্রথম মৃত্যুটি ঘটেছিল গত ২১ ফেব্রুয়ারিতে, তখন চীনে মৃতের সংখ্যা ছিল ২৩০০ এর বেশি।

চীনে ক্রমান্বয়ে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটলেও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ইউরোপের দেশটি।  প্রথম মৃত্যুর এক মাস না গড়ানোর আগেই ইতালিতে মৃতের সংখ্যা ছাপিয়ে গেছে চীনকে। অথচ ইতালিতে প্রথম মৃত্যু ঘটেছিল চীনে মৃত্যুর দেড় মাসের বেশি সময় পরে।

বৃহস্পতিবার ইতালির কর্মকর্তা দেশটিতে আগের ২৪ ঘণ্টায় ৪২৭ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

 The morgue of Ponte San Pietro Hospital in the Province of Bergamo, the area worst hit by the coronavirus

এই সংখ্যা নিয়ে ইতালিতে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৩ হাজার ৪০৫ জনে। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার নাগাদ চীনে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২৪৫ জন।

গত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরের একেবারে শেষ দিকে চীনের উহান শহরে প্রথম নতুন ধরনের এই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে। অন্য প্রদেশগুলোতে দ্রুত ছড়িয়ে যাওয়ার পর ভিন্ন দেশেও ভাইরাস সংক্রমণ দেখা দেয়।

তখন এই ভাইরাসের নাম দেওয়া হয় নভেল করোনাভাইরাস, আর এর ফলে সৃষ্ট রোগ নাম পায় কভিড-১৯, যার লক্ষণ জ্বর, মাথাব্যথা ও শ্বাসজনিত সমস্যা।

শুরুতে চীনে মৃতের সংখ্যা হু হু করে বাড়তে থাকলেও মাস দুয়েকের মধ্যে তারা পরিস্থিতি অনেকটাই সামলে নিতে পেরেছে।

যে হুবেই প্রদেশে থেকে এই ভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ঘটেছিল বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে, সেখানে বুধবার প্রথমবারের মতো কোনো নতুন রোগী পাওয়া যায়নি।

আর গোটা চীনে এদিন নতুন রোগী পাওয়া গেছে মাত্র ৩৪ জন, তারাও বাইরে সংক্রমিত হওয়ার পর চীনে এসেছে বলে চীনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। সব মিলিয়ে চীনে আক্রান্তের মোট সংখ্যা এখন ৮১ হাজার ১৭৪ জন। আর দেশটিতে বৃহস্পতিবার মৃতের সংখ্যা বেড়েছে মাত্র আটজন।

অন্যদিকে আক্রান্তের সংখ্যা চীনের অর্ধেক হলেও মৃতের সংখ্যা এখন ইতালিতে চীনের চেয়ে ১৬০ জন বেশি। ইতালিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৪১ হাজার ৩৫।

ইতালিতে বুধবার রেকর্ড ৪৭৫ জনের মৃত্যুর পর বৃহস্পতিবার সংখ্যাটি ৪২৭ এ নেমে এলেও চীনকে ছাড়ানোর জন্য সেটাই যথেষ্ট হয়ে দাঁড়ায়। দেশটিতে এখনও ২ হাজার ৪৯৮ রোগী রয়েছে আইসিইউতে।

সব মিলিয়ে বিশ্বে এখন নভেল করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ২ লাখ ২০ হাজারের মতো, আর মৃতের সংখ্যা ৯ হাজার।

গত ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কভিড-১৯ রোগকে মহামারী ঘোষণার সময় ইউরোপকে এখন এই রোগের কেন্দ্রস্থল বর্ণনা করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল।

ইতালি গত ১২ মার্চ সব ধরনের জনসমাগম নিষিদ্ধ, দোকান-পাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, স্কুল বন্ধ করে প্রায় গোটা দেশকে কোয়ারেন্টিনে পাঠালেও সংক্রমণ ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে।

ইউরোপে ইতালির পর স্পেন, জার্মানি ও ফ্রান্সেও রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। স্পেনে রোগীর সংখ্যা ১৫ হাজার ছাড়িয়েছে, জার্মানিতে তা ছুঁইছুঁই, ফ্রান্সে আক্রান্তের সংখ্যা ৮ হাজারের বেশি। যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্ত এখন ১০ হাজারের বেশি।

ইউরোপের পর এশিয়ায় নভেল করোনাভাইরাস বড় বিপর্যয় আনতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশে এই পর্যন্ত ১৭ জন রোগী ধরা পড়েছে, যার মধ্যে একজনের মৃত্যু ঘটেছে। ভারতে ১৭৩ রোগী শনাক্তের মধ্যে মৃত্যু ঘটেছে চারজনের। পাকিস্তানে আক্রান্তে এখন ৪৩৫ জন, মারা গেছে দুজন।


Spread the love

Leave a Reply