গোপনীয় তথ্য ফাঁসের দায়ে যুক্তরাজ্যে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরখাস্ত
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃরাষ্ট্রীয় গোপনীয় তথ্য ফাঁসের জন্য দায়ী করে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী গেভিন উইলিয়ামসনকে বরখাস্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে। বুধবার তাকে পদত্যাগপত্র দিতে নির্দেশ দেওয়া হয় বলে বিবিসি ও রয়টার্স জানিয়েছে।
ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের (এনএসসি) বৈঠকে হুয়াওয়েকে নিয়ে এক আলোচনার তথ্য ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে উইলিয়ামসনের বিরুদ্ধে; যদিও তিনি তার দায় অস্বীকার করে আসছেন।
রাষ্ট্রের সবচেয়ে গোপনীয় বিষয়গুলো এনএসসিতে আলোচনায় ওঠে; জ্যেষ্ঠ মন্ত্রীরাই এর সদস্য থাকেনম সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া প্রয়োজনে সামরিক ও গোয়েন্দা বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদেরও বৈঠকে ডাকা হয়ে থাকে। এনএসসির গত সপ্তাহের বৈঠকে চীনের হুয়াওয়ে কোম্পানিকে ফাইভ জি নেটওয়ার্কের কাজ দেওয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে দ্য টেলিগ্রাফ খবর প্রকাশ করলে তা নিয়ে আলোচনার ঝড় বইছে দেশটির পার্লামেন্টে।
কেননা হুয়াওয়ের সঙ্গে এখন যুক্তরাষ্ট্রের টানাপড়েন চলছে। হুয়াওয়ে প্রধানের মেয়ে ও কোম্পানির প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা মেং ওয়ান ঝুকে কানাডায় গ্রেপ্তারের পর তা নিয়েও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের সম্পর্কে জটিলতা দেখা দিয়েছে। টেলিকম খাতে পণ্য উৎপাদনে বিশ্বে শীর্ষ কোম্পানি হুয়াওয়ের প্রযুক্তি নিয়ে ঘোর সন্দেহ থেকে বন্ধু রাষ্ট্রদের তা ব্যবহার না করতে আহ্বান জানিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।
ওয়াশিংটনের ধারণা, তাদের প্রযুক্তি চীনের পক্ষে গোয়েন্দাগিরির কাজে ব্যবহৃত হয়; যদিও হুয়াওয়ে এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
এর মধ্যেই চীনের কোম্পানিকে কাজ দেওয়ার খবর ফাঁস হলে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে টেরিজা মের সরকার। তাই বরখাস্ত হতে হল প্রতিরক্ষামন্ত্রী উইলিয়ামসনকে। পদত্যাগ করতে বলে উইলিয়ামসনকে লেখা চিঠিতে টেরিজা মে বলেছেন, এই তথ্য ফাঁসের একটি তদন্তে তার দায়িত্বহীনতার প্রমাণই উঠে এসেছে। আর কাউকে দায়ী করার মতো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
উইলিয়ামসন আগেই এই ঘটনায় তার দায় অস্বীকার করে আসছিলেন। বরখাস্ত হওয়ার পরও তিনি বিবিসিকে বলেছেন, এই ঘটনার পূর্ণ তদন্ত হলে তিনি নিজেকে নিরাপরাধ প্রমাণ করতে পারবেন বলে বিশ্বাস করেন।
২০১৭ সাল থেকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছিলেন উইলিয়ামসন। তাকে বরখাস্ত করার পর আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়কমন্ত্রী পেনি মরডান্টকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন টেরিজা মে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে মরডান্টই প্রথম নারী। মরডান্ট নিতুন দায়িত্ব পাওয়ায় কারামন্ত্রী রোরি স্টুয়ার্টকে আনা হয়েছে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে।