টাংগাইল ৫ সদর সংসদীয় আসন ও নির্বাচন ভাবনা

Spread the love

শামসুল তালুকদার:

জনাব মামুনুর রশিদ মামুন – নৈকা প্রতীক, আইনজিবী ও আওয়ামী যুবলীগেক প্রেসিডিয়াম সদস্য। সাংসদ জনাব ছানোয়ার হোসেন – ঈগল পাখি প্রতীক।টাংগাইল আওয়ামীলিগের সহ-সভাপতি, সফল দুই বারের সংসদ সদস্য ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। তারা দুজনই যোগ্য প্রার্থী, রাজনৈতিক সহযোদ্ধা, টাংগাইল শহরের সন্তান ও আওয়ামিলীগের রাজনিতীর সাথে সম্পৃক্ত দীর্ঘ সময় ধরে। নির্বাচনী নানান বাধ্যবাদকতা ও প্রতিযোগীতা মুলক নির্বাচনের তাগিদেই আওয়ামীলিগের এই দুজন নেতা টাংগাইল – ৫ সদর আসনে প্রতিযোগীতা করবেন আসন্ন্য ৭ই জানুয়ারীর ২০২৪ জাতীয় নির্বাচনে। একজন দলীয় নৈকা প্রতীকে – আওয়ামিলীগের প্রার্থী, অন্যজন জননেত্রী শেখহাসিনার প্রার্থী (সতন্ত্র) ঈগল পাখি প্রতীক নিয়ে লড়বেন। তারা দুজনই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথা আওয়ামীলিগের সভাপতি দলীও প্রধানের সম্মতিতেই এই নির্বাচনী প্রতিযোগীতায় এসেছেন। দুই নেতাই পরিক্ষিত আওমীলীগের নেতা, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ও শেখ হাসিনার আস্হাভাজন।

প্রতীক বরাদ্দের পরপরই প্রতিপক্ষের ওপর হামলা, নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর ও হুমকি-ধামকির ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে টাঙ্গাইলের নির্বাচনী মাঠ। এসব ঘটনায় জেলার অন্তত চারটি আসনে সরকার দলীয় প্রার্থী এবং একই দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। প্রতীক ভিন্নতার কারনে সাধারন ভোটার ও দলীও কর্মীরা হয়তো কিছুটা দ্বিধাবিভক্ত। একইসাথে দলীও নেতাদের মধ্যেও দৃশ্যমান বিভাজন পরিলক্ষিত হচ্ছে কোন কোন ক্ষেত্রে! তবে নির্বাচনের পর আশাকরি এটা কেটে যাবে ও সকলেই গনতান্ত্রিক ভোটের ফল মেনে নিবেন ও নির্বাচীত প্রতিনিধির সাথে কাজ করবেন। টেকসই উন্নয়নের জন্য যা আবশ্যক।

এবারের নির্বাচন মুলত প্রার্থীর জনপ্রীয়তা যাচাইয়ের নির্বাচন। যিনি জনসাধারণের কাছে যেতে পারবেন, নিজের যোগ্যতা ও পরিকল্পনা নতুন প্রজন্মের কাছে সুনিপুণ ভাবে তুলে ধরবেন তিনিই নির্বাচিত হবেন সুষ্ঠ ভোটের মাধ্যমে। তবে পরিচিত দলীও প্রতীক নিয়ে নৌকার প্রার্থী ‘জনাব মামুনুর রশিদ মামুন’ হয়তো নৌকার ভোট ব্যংকের কারনে কিছুটা সুবিধাজনক অবস্হায় থাকবেন বলে ধারনা করা হচ্ছে।তবে দলীও নমিনেশন পেয়েও যেন জয়ের ব্যপারে স্বস্হি মিলছেনা।

অন্যদিকে সতন্ত্র প্রার্থী, আওয়ামীলিগের দুইবারের সংসদ সদস্য ও জনপ্রীয় নেতা জনাব ছানোয়ার হোসেন – ঈগল পাখি প্রতীক নিয়ে তার নিজ প্রচারনায়ও পিছিয়ে নেই। তিনি তার গত ১০ বছরের কাজের মাধ্যমে ও আওয়ামিলীগের উন্নয়ন পৈছে দিয়েছেন প্রত্যন্ত গ্রামে ও মেহেনতী মানুষের নাগালে। তিনি শেখহাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশে বিনিরমানের একজন আস্হাভাজন কর্মী, সাদা মনের মানুষ হিসেবে সকলের নিকট পরিচিত। জেলার সাধারন ভোটাররা বলছেন নেতা হিসেবে ব্যক্তি জনাব ছানোয়ার হোসেনের বিকল্প নেই এই আসনে। তবে জনগনের রায় জানতে অপেক্ষা করতে হবে ৭ জানুয়ারী ভোটের দিন পর্যন্ত।

টাংগাইল – ৫ সদর, এই আসনে আরো বেশ কয়েকজন প্রার্থী আছেন যাঁদের মধ্যে অন্যতম প্রতিদন্দি জনাব মুরাদ সিদ্দিকি (সতন্ত্র) – মাথাল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন। গত দুই নির্বাচনেও তিনি প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছেন ও অনেক ভোট পেয়েছিলেন। সেই হিসেবে সতন্ত্র হিসেবেও তার নিজের বড় ভোট ব্যংক আছে বলে শোনা যায়। তিনি ঐতিহ্যবাহী সিদ্দিক পরিবারের সন্তান ও টাংগাইলের রাজনীতিতে আছে অনন্য অবস্হান তার, তিনি সুপরিচিত, জনপ্রীয় ও যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বি। আওয়ামিলীগের দলীও ভোট বিভাজনের সুযোগে হয়তোবা তিনি এবার চমক দেখাতে পারেন এই আসনে।

নতুন দল বিএনএম এর প্রার্থী তৌহিদ চাকলাদার (সাবেক সেনা কর্মকরতা মেজর) একজন তরুন ক্লিনইমেজের নতুন প্রার্থী। তিনি নৌকা ও বিএনএম এর মধ্যে বড় প্রতিদ্বন্দ্বিতা আশা করছেন। তার বাবা আব্দুস সালাম চাকলাদার বর্তমানে জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান। জনাব তৌহিদ- জেলার চর এলাকার সন্তান, যে এলাকাকে নির্বাচনী ভোটব্যাংক হিসেবে দেখা হয় এই আসনের। আর তাই তিনি তার জয়ের ব্যপারে বেশ আশাবাদী। প্রচারনাও তিনি সরব রয়েছেন।
এছাড়াও যারা রয়েছেন;
জনাব মোজাম্মেল হক – জাতীয় পার্টি (লাঙ্গল প্রতীক)
হাসরত খান ভাসানী – বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টি (একতারা)
শরিফুজ্জামান খান – তৃণমূল বিএনপি (সোনালী আঁশ)
খন্দকার আহসান হাবিব – স্বতন্ত্র (কেটলি)

প্রার্থীরা নিজ নিজ প্রচারনা করছেন, ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন ও প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনাছাডা শান্তিপুর্ন অবস্হা বজায় রয়েছে। নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই পরিস্হিতি জটিল হচ্ছে সমর্থকদের পারস্পরিক নেতিবাচক প্রচারনার মাধ্যমে। যা সুস্হ রাজনৈতিক রীতিতে কাম্যনয়, এতে হিতে বিপরীত হতে পারে ভোটের হিসেবে। তরুন শিক্ষিত ভোটাররা প্রার্থীর যোগ্যতা, পরিকল্পনা, কাজের প্রতিশ্রুতি, সৎতা ও বস্তুনিষ্ঠ প্রচারনায় বিশ্বাসী।

টাঙ্গাইল জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, জাতীয় সংসদের ১৩৪ টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ৮০ হাজার ২৭৯ জন। এরমধ্যে নারী ভোটার এক লাখ ৯১ হাজার ৭৩৬ জন ও পুরুষ ভোটার এক লাখ ৮৮ হাজার ৫৪৩ জন। প্রচলিত আছে এই সদর আসনে যে দলীয় প্রার্থী জয়লাভ করেন সে দল সরকার গঠন করে, যা পুর্ববর্তী সময়ে হয়েছে। সকল দলই ও প্রার্থীদের টারগেট এই টাংগাইল ৫ সদর আসন ও জয়লাভ করা।
সুষ্ট নির্বাচন হলে, জনগন যদি তার গনতান্ত্রীক অধিকার নিয়ে পছন্দমতন ভোট দিতে পারেন, তাহলে এই টাংগাইল ৫ আসনের নির্বাচন হবে অংশগ্রহন মুলক ও প্রতিযোগীতা পুর্ন। এরজন্য প্রশাসন সহ সকল দলের প্রার্থী, সমর্থক ও সকলের সহযোগীতা একান্ত কাম্য।
গনতন্ত্র, অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন, আইনের শাসন, উন্নয়ন ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার পক্ষে আমরা টাংগাইলবাসী এক সুন্দর আগামীর প্রত্যাশায়।

 


Spread the love

Leave a Reply