থেরেসা’র সরকার গঠন নিয়ে অনিশ্চয়তা

Spread the love

Prime Minister Theresa May makes a statement in Downing Street after she traveled to Buckingham Palace for an audience with Queen Elizabeth II following the General Election results. PRESS ASSOCIATION Photo. Picture date: Friday June 9, 2017. See PA story ELECTION Main. Photo credit should read: Jonathan Brady/PA Wire

বাংলা সংলাপ ডেস্কঃসরকার গঠন নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যেই ছিলেন  কনজারভেটিভ নেত্রী থেরেসা মে। এখনও উত্তর আয়ারল্যান্ডের রাজনৈতিক দল ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টির সমর্থনের ঘোষণা আসেনি। এদিকে দলীয় এমপিদের নিয়ে ডাকা আজকের বৈঠকে তিনি কতোটা তাদের ক্ষোভ মেটাতে পারবেন, তা নিয়েও রয়েছে সংশয়। এরইমধ্যে হঠাৎই থেরেসার মুখপাত্র ইঙ্গিত দেন, ব্রিটিশ পার্লামেন্টে রানীর ভাষণের জন্য নির্ধারিত দিনটি পিছিয়ে যাচ্ছে। এতে থেরেসার সরকার গঠন নিয়ে অনিশ্চয়তার বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এরইমধ্যে লেবার পার্টির পক্ষ থেকে মন্তব্য করা হয়েছে, রানীর ভাষণ পেছানো সরকারের ভেতরকার ‘জটিলতা’র ইঙ্গিত।

৮ জুন অনুষ্ঠিত নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর পর তুমুল চাপে রয়েছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও কনজারভেটিভ নেতা থেরেসা মে। হাউস অব কমন্সে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিতের জন্য কনজারভেটিভদের ডিইউপি’র এমপিদের সমর্থন প্রয়োজন। নির্বাচনে ডিইউপি পেয়েছে ১০টি আসন। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিতে কনজারভেটিভদের প্রয়োজন ৮টি আসন। আর তাই সমর্থন নিশ্চিতে দলটির সঙ্গে সম্ভাব্য চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ডাউনিং স্ট্রিট। ডিইউপির সঙ্গে দফায় দফায় চলছে বৈঠক।

শনিবার (১০ জুন) সন্ধ্যায় ডাউনিং স্ট্রিটের পক্ষ থেকে জানানো হয়, নীতিগতভাবে একটি চুক্তির ব্যাপারে দুই পক্ষ সম্মত হয়েছে। তবে ওইদিন রাতেই পাল্টে যায় পরিস্থিতি। দুই পক্ষের দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, তাদের মধ্যকার চুক্তি চূড়ান্ত হয়নি। এখনও আলোচনা চলছে। সোমবার বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবরে আবারও সেই অনিশ্চয়তার কথা উঠে আসে। কোথাও এ ব্যাপারে কোনও অগ্রগতির খবর মেলেনি।

প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র জানিয়েছেন, কনজারভেটিভ দলের সঙ্গে ডিইউপির চুক্তির পরও নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠায় যুক্তরাজ্য সরকার নিরপেক্ষ মধ্যস্থতাকারী হতে পারে। তিনি জানান, নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের সেক্রেটারি জেমস ব্রোকেনশায়ারের সঙ্গে কনজারভেটিভদের বৈঠক হয়েছে। বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন,  ‘আলোচনার ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন’ নিয়ে সরকারের অঙ্গীকারের ওপর জোর দিয়েছেন। যুক্তরাজ্য সরকার কী করছে তা নয়, বরং নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডভিত্তিক দলগুলোর কী করা দরকার তাকে কেন্দ্র করেই বেশিরভাগ আলোচনা হবে বলে জানান মুখপাত্র। তবে কবে তাদের সমর্থনের ঘোষণা আসবে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত কিছু বলতে পারেননি তিনি।

415CF91B00000578-4595898-image-a-87_1497275728879সোমবার  ক্ষুব্ধ এমপিদের সঙ্গে থেরেসা মে’র একান্ত বৈঠকের খবর দিয়েছে রয়টার্স। বৈঠকে থেরেসাকে এমপিদের ক্ষোভ আর সমালোচনার মুখোমুখি হতে হবে বলে আভাস দিয়েছে রয়টার্স। তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী কার্যকরভাবে সরকার পরিচালনায় নিজের সক্ষমতা প্রমাণের চেষ্টা করবেন থেরেসা। রয়টার্স বলছে, এতে ব্যর্থ হলে নেতৃত্ব থেকে থেরেসার সরে যাওয়ার ডাক আরও জোরালো হয়ে উঠবে।
এদিকে ১৯ জুন নতুন সরকারের পক্ষে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে আইনগত এজেন্ডা নির্ধারণের কথা ছিল রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের। তবে প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্রের বরাত দিয়ে দ্য গার্ডিয়ান জানায়, সরকার গঠনে উত্তর আয়ারল্যান্ডের রাজনৈতিক দল ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টিকে রাজি করাতে কনজারভেটিভদের আরও সময় দিতে চান রানী। সে কারণেই নির্ধারিত দিনের কয়েকদিন পর এই ভাষণ অনুষ্ঠিত হবে।

র্নিধারিত দিনে রানী বাকিংহাম প্রাসাদ থেকে পার্লামেন্টে হাজির হবেন। সেখানে দেওয়া ভাষণে থেরেসা সরকারের পক্ষে নতুন নতুন আইনগত এজেন্ডা উপস্থাপন করবেন তিনি। থাকবে ব্রেক্সিট আলোচনা শুরুর বিষয়। তবে সেই দিনটি কবে, তা জানানো হয়নি।

রানীর ভাষণ পেছানো সরকারের ভেতরকার ‘জটিলতা’র ইঙ্গিত, মন্তব্য করেছে লেবার পার্টি। দলের একজন মুখপাত্রকে উদ্ধৃত করে দ্য গার্ডিয়ান এই প্রতিক্রিয়ার খবর জানিয়েছে।

লেবার পার্টির ওই মুখপাত্র দলের পক্ষে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ডিইউপিকে সমকাম ও নারী অধিকারের বিপক্ষের শক্তি আখ্যা দেন। তিনি মন্তব্য করেন, ওই দলের সঙ্গে আঁতাতের চেষ্টাতেও তারা যে সফল হতে পারেনি, রানীর ভাষণ পেছানো তারই ইঙ্গিত দেয়।

ব্রেক্সিট সেক্রেটারি ডেভিড ডেভিস জানিয়েছেন, নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হওয়ার পর কনজারভেটিভ মেনিফেস্টো থেকে ব্রেক্সিট প্রশ্নে কিছু অঙ্গীকার বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন থেরেসা মে। তবে নীতিমালা সংক্রান্ত কোন প্রস্তাবগুলো আর থাকছে না, প্রধানমন্ত্রীর ওই মুখপাত্রকে জিজ্ঞেস করেও এ ব্যাপারে মন্তব্য পাওয়া যায়নি।তিনি জানিয়েছেন, রানীর ভাষণে সরকারের আইনি কর্মসূচিগুলো ঘোষণা করা হতে পারে। তবে তিনি বলেন, সরকার চেষ্টা করছে বার্ষিক নীট অভিবাসনের সংখ্যা ১ লাখের নিচে নামিয়ে আনা যায়।


Spread the love

Leave a Reply