পানামা পেপার্স ইস্যুতে উত্তাল পার্লামেন্ট : নিরুত্তর ক্যামেরন
বাংলা সংলাপ ডেস্ক:
বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টিকারী পানামা পেপার্স ফাঁসের ঘটনায় প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িয়ে পড়েছে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের নাম। বাহামা দ্বীপপুঞ্জে তার বাবা ইয়ান ক্যামেরনের একটি কোম্পানির কর মওকুফে নিজের সম্পৃক্ততা নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন ক্যামেরন।
আশির দশকে বাহামা দ্বীপপুঞ্জে ব্লেয়ারমোর হোল্ডিংস ইনকরপোরেটেড নামে একটি কোম্পানি গঠন করেন প্রধানমন্ত্রীর বাবা ইয়ান ক্যামেরন। ক্যামেরন পরিবারের এ ব্যবসায়িক কার্যক্রম বিষয়ে ব্রিটিশরা জ্ঞাত থাকলেও, গুরুতর অভিযোগ করা হয়েছে সম্প্রতি ফাঁস হওয়া পানামে পেপার্সে।
প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানায়, ব্লেয়ারমোর হোল্ডিংসের অধিকর্তাদের যাতে ব্রিটেনে কোনো রকম কর দিতে না হয়, সেজন্য কোম্পানির পরিচালকরা বাহামার স্থানীয় অধিবাসীদের দিয়ে দাফতরিক নথিপত্রে সই করাতেন। নতুন এ তথ্যেই বিপাকে পড়তে বসেছেন ইয়ান ক্যামেরনের ছেলে ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন।
তার পরিবারের কর ফাঁকির বিষয়টি ঘিরে গতকালও উত্তপ্ত ছিল ব্রিটিশ পার্লামেন্ট। বিরোধীদলীয় নেতা জেরেমি করবিন প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের বিরুদ্ধে উত্থাপিত কর ফাঁকির অভিযোগের স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।
পানামা পেপারস ঘিরে উত্তাপ ছড়িয়েছে ব্রিটিশ পার্লামেন্টেও। প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের পরিবারের কর আদায়ের বিষয়ে বিরোধীদলীয় এমপিদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জর্জ অসবর্ন বিষয়টিকে ‘ব্যক্তিগত ইস্যু’ হিসেবে দেখার আহ্বান জানান। পার্লামেন্ট তাতে শান্ত হয়নি। এর পর ডেভিড ক্যামেরন পার্লামেন্ট অধিবেশনে উপস্থিত হলে বিরোধীদলীয় নেতা জেরেমি করবিন বলেন, অভিযুক্ত কোম্পানিটি যেহেতু ব্যক্তিমালিকানাধীন, সে হিসেবে বিষয়টি ব্যক্তিগত। কিন্তু যখন কর পরিশোধ না করার বিষয়টি সামনে এসে যায়, তখন সেটি আর ব্যক্তিগত থাকে না।
জেরেমি করবিন বলেন, প্রধানমন্ত্রীকেই এখন বিষয়টি স্পষ্ট করতে হবে। এ বিষয়ে অবশ্যই তদন্ত হতে হবে। স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত। বিরোধীদলীয় নেতা একই সঙ্গে প্রয়োজনবোধে করস্বর্গ বলে পরিচিত ব্রিটিশ ভূখণ্ডগুলোর স্বায়ত্তশাসন কর্তনেরও পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, বাহামা দ্বীপপুঞ্জ, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডসহ ব্রিটিশ সার্বভৌমত্বের আওতাধীন ভূখণ্ডগুলো প্রয়োজনে সরাসরি শাসনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। অধিবেশনে উপস্থিত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এ সময় নিরুত্তর ছিলেন।
পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক প্রেস রিলিজে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন অথবা তার পরিবারের সদস্যরা বিচ্ছিন্ন ভূখণ্ডে নিবন্ধিত কোনো কোম্পানি দ্বারা লাভবান হবেন না। পার্লামেন্টে বিরোধীদলীয় সদস্যরা এ বক্তব্যকে অসম্পূর্ণ ও খোঁড়া বলে অভিহিত করেছেন। এর আগে বার্মিংহামে ইইউ না ছাড়ার পক্ষে গণভোটের প্রচারণা চালাতে গিয়েও ভোটারদের প্রশ্নের মুখে পড়েন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।