বাংলাদেশে এডুকেশন ও চ্যারিটি কাজে অংশ নিলেন লন্ডন এন্টারপ্রাইজ একাডেমীর প্রিন্সিপাল আশিদ আলী
এডুকেশন ও চ্যারিটি কাজে অংশ নিতে সম্প্রতি বাংলাদেশে সফর করেছেন লন্ডন এন্টারপ্রাইজ একাডেমির প্রিন্সিপাল আশিদ আলী ও ক্যারিয়ার এডভাইজার মুহি মিকদাদ।
গত মাসের ফেব্রুয়ারিতে চ্যারিটি সংস্থা বিআরটি ইউকের সাথে এক গ্রুপ ট্যুরে তারা বাংলাদেশে যান। ঘুরে বেড়ান দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। অংশ নেন মানবিক নানা কার্যক্রমে। সাহায্যর হাত বাড়িয়ে দেন নিপিড়িত অসহায় মানুষের কল্যানে। এ সময় তারা দেশের প্রায় ১৩টি জেলার ১৩টি স্কুল পরিদর্শন করেন। দেশের সকল জায়গায় প্রশাসন, সুশিল সমাজ ও বিভিন্ন সিটির মেয়র তাদের বরন করে নেন।
সফরসূচিতে ছিলো রাজধানী ঢাকা, সিলেট, চট্রগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা এবং কক্সবাজার। পাশাপাশি দেশের প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনসহ সারাদেশের অসংখ্য শহরে ভ্রমণ করেছেন। তারা বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপকরণ, লন্ডন এন্টারপ্রাইজ একাডেমির লগো সম্বলিত টি-শার্ট, খেলাধুলার সরঞ্জাম বিতরণ করেন।
সিলেট সফরকালে ব্রিটিশ বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল পরিদর্শন করেন, সেখানে স্কুলের শিক্ষকবৃন্দ এবং শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনায় মিলিত হন। স্কুলের শিক্ষা ও পাঠদান পদ্ধতি প্রত্যক্ষ করেন এবং অনেক অনুপ্রেরণা নিয়ে আসেন । পরে বিশ্বনাথ এবং নবীগঞ্জের স্কুলগুলোতে সহায়তা প্রদান করেন। স্কুলের শিক্ষার্থীরা দারুন খুশি হয় এসব অনুদান পেয়ে।
পরের সফরসূচিতে ছিলো রাজধানী ঢাকা। যেখানে প্রিন্সিপাল আশিদ আলী ও মুহি মিকদাদ বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর, ধানমন্ডি ৩২, জিয়াউর রহমানের সমাধি, নৌ বাহিনী জাদুঘর, মেট্রো রেল, এলিব্রেটেট এক্সপ্রেসওয়ে, শহিদ মিনার, নেভি ব্রিজ এবং ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ঢাকাসহ বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক নিদর্শনগুলি পরিদর্শন করেন। ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ঢাকার আধুনিক সুযোগ সুবিধা প্রত্যক্ষ করেন। বিশেষকরে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা সুবিধা, আধুনিক শ্রেণীকক্ষ এবং স্কুলটিতে চাকুরীরত বিদেশী শিক্ষকদের ব্যাপারে অবিশ্বাস্য অভিজ্ঞতা লাভ করেন। এছাড়াও ঢাকার দরিদ্র অঞ্চলে বস্তির স্কুল পরিদর্শন করেন। সুবিধাবঞ্চিত এসব শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন।
এরপর সফরসূচিতে ছিলো খুলনা জেলা, বাগেরহাটের ষাট গম্বুজ মসজিদ, কুষ্টিয়ার লালন ফকিরের মাজার, রবিন্দ্রনাথের কুটি বাড়ি, বাঘা মসজিদ ও গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধুর মাজার জিয়ারতসহ ঐতিহাসিক স্থানগুলো ঘুরে দেখা। ঘুরে দেখেছেন ঐতিহাসিক পদ্মা সেতু।
রাজশাহীতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও জীবিকা প্রকল্প, শিক্ষা উপকরণ বিতরণ এবং গ্রামীণ নারীদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে হাঁস পালন প্রকল্প বাস্তবায়নে অনুদান বিতরণ করেন। প্রায় ৮ হাজার হাঁস বিতরন করা হয় সুবিধা বঞ্চিত নারীদের মাঝে। ১০টি টিউবওয়েলের অনুদানও ছিলো উল্লেখযোগ্য। ৬ জন দরিদ্র মহিলাকে স্বাভলম্বী করার জন্য দোকান পরিচালায় অনুদান দেওয়া হয়।
এছাড়াও পরিদর্শন করা হয় ব্রিটিশ আমলে নির্মিত ঐতিহাসিক রাজশাহী কলেজ এ রাজশাহী ইউনিভার্সিটি। ঘুরে দেখা হয় রাজশাহীর বিখ্যাত আমের বাগান। বিভিন্ন গ্রামে খেজুর বাগান ও গুড় চাষীদেরও অনুদান দেওয়া হয়।
কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জীবন প্রত্যক্ষ করার সুযোগ হয়েছিল তাদের সফরকালে । সেখানে চ্যারিটি কার্যক্রমে তারা অংশ নেন। অসহায় ও নিপিড়িত রোহিঙ্গাদের মানবেতর জীবন দেখে ব্যতিত ও কষ্ট পান প্রিন্সিপাল আশিদ আলী।
ভ্রমণের সবচেয়ে চমৎকার ও আকর্ষনীয় আয়োজন ছিলো সেন্ট মার্টিন দ্বীপে। দ্বীপটিতে শিক্ষামূলক, ক্রীড়া এবং পরিবেশ সংরক্ষণের ব্যতিক্রমী অনেক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়। দ্বীপের সৌন্দর্য ও পরিবেশ রক্ষায় ময়লা – আবর্জনা পরিস্কার অভিযান পরিচালনা করা হয়। তাতে অংশ নেন বিশ্বব্যাপি বাঙালীদের কাছে পরিচিত জনপ্রিয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সাইদুল হক সুমন। যা স্থানীয় জনসাধারনের কাছে খুবই প্রশংসিত হয়।
প্রিন্সিপাল আশিদ আলী বলেন, বাংলাদেশ ঘুরে বেড়াতে পেরে তিনি অত্যন্ত খুশি। এই অভিজ্ঞতা তাকে অনেক সমৃদ্ধ করেছে। দেশের সবচেয়ে আধুনিক ও ব্যয়বহুল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেমন দেখেছেন তেমনি দেখার সুযোগ হয়েছে একেবারে তূনমূল ততা বস্তিতে থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রত্যক্ষ করেছেন অনেক বঞ্চনা ও সুযোগ সুবিধাহীনতা। শিক্ষায় এমন বৈষম্য মোটেই ঠিক না।