হাসিনা সরকারের ইলেকশন ভাবনা ও নানা কথা

Spread the love

বিবিসি রিপোর্টঃ অনুবাদঃ সোয়ালেহীন করিম চৌধুরী

বাংলাদেশ জানুয়ারী মাসে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যার ফলাফল ইতিমধ্যেই নির্ধারিত বা অনিবার্য বলে মনে করছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম।

প্রধান বিরোধীদল সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ইতোমধ্যে নির্বাচন বর্জন করার ঘোষণা দিয়েছে। তাছাড়া বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপির বেশিরভাগ নেতাদের কারাগারে বন্দী করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ চতুর্থ সংসদীয় মেয়াদে পুনরায় নির্বাচিত হতে চলেছে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম।

এই বিরোধী দলগুলির মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং তাদের সহযোগীরা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি অবাধ ও ন্যায্য নির্বাচন করবেন বলে তাদের বিশ্বাস নেই।

বাংলাদেশের বিরোধী দলগুলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং একটি নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে ভোটগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে আসছে। এই দাবি প্রধানমন্ত্রী প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। সুতরাং তাতে বোঝা যায় নির্বাচিত হয়ে প্রার্থীরা সকলেই আওয়ামী লীগ এবং তাদের সহযোগী বা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের থেকে আসবেন।

বিএনপির একজন প্রবীণ নেতা বিবিসিকে বলেছেন,
” বাংলাদেশে গণতন্ত্র মারা গিয়েছে। আমরা জানুয়ারিতে যা দেখতে যাচ্ছি তা একটি সাজানো নির্বাচন”।

তিনি আরও উদ্বেগের সাথে জানান, শেখ হাসিনা বছরের পর বছর ধরে স্বৈরাচারী হয়ে ক্ষমতায় টিকে আছেন। শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য গুম,খুন অব্যাহত রেখেছেন। কত কত পরিবার তাদের নিকটাত্মীয়দের হারিয়েছে শুধু শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্য। এই দেশের কোনো নাগরিক এখন আর স্বাধীন নয়, সবাই যেন পরাধীনতার খাঁচায় আটকে আছে।

আইনমন্ত্রী অনিসুল হক বিবিসিকে বলেন, “জনগণের ভোট দেওয়ার অধিকার রয়েছে, তারা ইলেকশনের দিন তাদের অধিকার আদায় করবে। বিএনপি ইলেকশনে না আসলেও কোনো সমস্যা নেই তারা ছাড়াও অনেক রাজনৈতিক দল রয়েছে।”

Election banners in the Bangladeshi capital Dhaka

ঢাকায় নির্বাচনী ব্যানার… যেগুলোতে বিরোধী দল নেই

যদিও শেখ হাসিনার অধীনে বাংলাদেশ একটি উন্নয়নের ট্র‍্যাকে অবতীর্ণ হয়েছে। মুসলিম মেজরিটির এই জাতি একসময় বিশ্বের অন্যতম দরিদ্রতম দেশ হিসাবে পরিচিত ছিল। ২০০৯ সাল থেকে হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্বাসযোগ্য অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জন করেছে বলে অনেক অর্থনীতিবিদ মনে করেন।

বাংলাদেশ এই অঞ্চলের অন্যতম দ্রুত ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির দেশ, এমনকি তারা তাদের বিশাল প্রতিবেশী ভারতকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে। গত দশকে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় তিনগুণ বেড়েছে এবং বিশ্বব্যাংক অনুমান করেছে যে গত ২০ বছরে ২৫ মিলিয়নেরও বেশি লোক দারিদ্র্যসীমা হতে বের হয়ে এসেছে।

দেশের নিজস্ব তহবিল ব্যবহার করে শেখ হাসিনার সরকার পদ্মা নদী জুড়ে ২.৯ বিলিয়ন ডলার অর্থব্যয়ে পদ্মা সেতু সহ নানান ধরনের বিশাল অবকাঠামো প্রকল্প গ্রহণ করেছে। একা সেতুটি জিডিপিকে ১.২৩% বাড়িয়ে দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তবে করোনা মহামারীর কারণে বাংলাদেশ লড়াই করে যাচ্ছে। মুদ্রাস্ফীতি নভেম্বরে প্রায় ৯.৫% ছিল।

বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০২১ সালের আগস্ট মাসে রেকর্ড ৩৮ বিলিয়ন ডলার থেকে এখন প্রায় ১৯ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে যা তিন মাসের আমদানির জন্য পর্যাপ্ত নয়। ২০১৬ সাল থেকে বাংলাদেশের বিদেশী ঋণও প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।

সমালোচকরা বলছেন, অর্থনৈতিক সাফল্য দেখিয়ে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারকে হত্যা করা উচিত নয়। শেখ হাসিনার শাসন তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এবং গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে দমনমূলক কর্তৃত্ববাদী ব্যবস্থা।

গত আগস্টে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, ভার্জিন গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা রিচার্ড ব্র্যানসন এবং বিভিন্ন দেশের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ সহ প্রায় ১৭০ জনের মতো ব্যক্তি শেখ হাসিনাকে একটি খোলা চিঠি লিখেছিলেন। যাতে শেখ হাসিনা নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনুসের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক বিচার বন্ধ করেন এই আহ্বান ছিল খোলা চিঠিতে।

Members Of The Gono Odhikar Parishad Held A Demonstration With Banner During On The Second Day Of 48-hours Nationwide Blockade In Dhaka, Bangladesh, On November 27, 2023

শেখ হাসিনার বিরোধীরা চায় তিনি সরে দাঁড়ান যাতে একটি নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন করতে পারে।

সাম্প্রতিক সময়ে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের পরে হাজার হাজার সমর্থক সহ অনেক প্রবীণ বিএনপি নেতাকে গ্রেপ্তার করে আওয়ামীলীগ সরকার।

মিঃ খান বিএনপির একজন সিনিয়র নেতা বলেন, কল্পিত অভিযোগে প্রায় ২০,০০০ এরও বেশি দলীয় সমর্থককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।এছাড়া লক্ষ লক্ষ দলীয় কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। অবশ্য নির্লজ্জ সরকার এটিকে অস্বীকার করে। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে অনেক দলীয় কর্মী ও সমর্থককে।

পরিসংখ্যান হতে দেখা যায় যে শেখ হাসিনার অধীনে রাজনৈতিকভাবে গ্রেপ্তার, নিখোঁজ হওয়া, হত্যা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সম্প্রতি বিরোধী সমর্থকদের গ্রেপ্তারকে সরকার কর্তৃক “হিংস্র স্বৈরাচারী ক্র্যাকডাউন” বলে অভিহিত করেছে।

তবে দুঃখের বিষয় এটি এমন এক নেতার বিপক্ষে অভিযোগ যিনি একসময় বহু-দলীয় গণতন্ত্রের পক্ষে লড়াই করেছিলেন।

১৯৮০ এর দশকে শেখ হাসিনা জেনারেল হুসেন মুহাম্মদ এরশাদের শাসনামলে গণতন্ত্রপন্থীদের নিয়ে রাস্তার লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলেন। এরশাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য তার অন্যতম রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও প্রতিদ্বন্দ্বী বেগম খালেদা জিয়া সহ অন্যান্য বিরোধী নেতাদের সাথেও হাত মিলিয়েছিলেন।

দেশের প্রতিষ্ঠাতা নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে বহু-দলীয় নির্বাচনের মাধ্যমে প্রথম ক্ষমতায় আসার সুযোগ পেয়েছিলেন। তারপরে তিনি ২০০১ সালের নির্বাচনে খালদা জিয়ার নিকট হেরেছিলেন।

দুই মহিলাকেই স্থানীয়ভাবে “যুদ্ধে ব্যস্ত বেগম” হিসাবে অভিহিত করা হয়। বেগম বলতে উচ্চ পদমর্যাদার একজন মুসলিম মহিলাকে বোঝায়।

বেগম জিয়া এখন কার্যকরভাবে দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত এবং স্বাস্থ্য জটিলতার মুখোমুখি হাউস এরেস্ট হিসাবে আছেন।যার কারণে বিএনপিতে গতিশীল নেতৃত্বের অভাব রয়েছে। যদিও তার বিরুদ্ধে দূর্নীতির মামলা আওয়ামীলীগ সরকার প্রমাণ করতে ব্যর্থ। অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক যুক্তি দেখিয়েছেন নির্বাচনের আগে বিএনপিকে পঙ্গু করার জন্য খালেদা জিয়া ও সিনিয়র নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে আওয়ামী লীগ কর্তৃক করা হয়েছে।

সৈয়দ মিয়ার মতো বিএনপির অনেক সমর্থক অত্যাচার থেকে বাঁচতে লুকিয়ে আছেন। রাজনৈতিক প্রতিবাদে অংশ নেওয়ার জন্য সেপ্টেম্বরে এক মাস কারাগারে কাটিয়েছেন তিনি। যার নাম আমরা তার পরিচয় রক্ষার জন্য পরিবর্তন করেছি।

মিঃ মিয়া বর্তমানে একটি বনাঞ্চলে তার দলের সহকর্মীর সাথে একটি তাঁবুতে থাকেন। তারা সকলেই অগ্নিসংযোগ এবং সহিংসতা অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত যদিও তিনি বলেছেন এই ধরনের আগুন সন্ত্রাসে তারা মোটেও জড়িত নন।

মিঃ মিয়া বিবিসিকে বলেছেন, ” আমরা এক মাস ধরে লুকিয়ে রয়েছি এবং আমরা আমাদের আস্তানাগুলি পরিবর্তন করে চলেছি। আমাদের বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা “।

ক্রমবর্ধমান মানবাধিকার পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

জাতিসংঘের হাই কমিশনার অফিসের এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রধান জেনেভাতে বিবিসিকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশে বর্তমানে এই দৃশ্য প্রায়শই একই ধরনের ঘটনার সাথে সম্পর্কিত। হাজার হাজার বিরোধী দলীয় কর্মীকে গ্রেফতারের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছে পুলিশ বাহিনী।

জাতিসংঘের বিশেষ একটি দল নভেম্বরেও বাংলাদেশ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল। তারা বলে, “সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী এবং নাগরিকদের স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ বাহিনী ও বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে হ্যনস্থা করা হচ্ছে। বিচার ব্যবস্থাকে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছে এখন সরকার।

তবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, আদালতের সাথে সরকারের কোনও সম্পর্ক নেই। বিচার বিভাগ একেবারেই স্বাধীন।

তবে ২০০৯ সাল থেকে পুলিশ বাহিনী কর্তৃক নিখোঁজ ও গুম হওয়া প্রমাণ করে কেমন অত্যাচার প্রতিনিয়ত চলছে বাংলাদেশে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে।

যদিও সরকার এই ধরনের আইনের অপব্যবহারের পিছনে তারা রয়েছে বলে অস্বীকার করে যাচ্ছে। তবে আওয়ামীলীগ সরকার বিদেশী সাংবাদিকদের স্বাধীন ভাবে এইসব অভিযোগ তদন্ত করতেও নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে চলেছে। বেশিরভাগ স্থানীয় সাংবাদিকরা তাদের জীবনের নিরাপত্তার জন্য ভয়ে এই জাতীয় মামলাগুলির তদন্ত বন্ধ করে দিয়েছেন।

যদিও ২০২১ সালে র‍্যাবের উপর স্যাংশন আসার পর অতিরিক্ত বিচারিক হত্যার সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে বলে তথ্যমতে জানা যায়। র‍্যাবের সাত জন অফিসারের উপরও স্যাংশন প্রদান করা হয়েছিল বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সীমিত নিষেধাজ্ঞাগুলি বাংলাদেশের সামগ্রিক মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি করতে ব্যর্থ হয়েছে। এ কারণেই বিভিন্ন দেশের রাজনীতিবিদ ও কূটনৈতিক ব্যক্তিত্ব পশ্চিমা দেশগুলির দ্বারা কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বারবার।

ইউরোপীয় সংসদের সদস্য ক্যারেন মেলচিয়র বলেছেন, “ইউরোপীয় কমিশনের উচিত বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক পরিস্থিতির বিষয়ে তাদের জবাবদিহি নেয়া।”

বাংলাদেশ চীনের পরে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রফতানিকারী। গত বছর বাংলাদেশ ইউরোপ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৪৫ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ প্রস্তুত পোশাক প্রেরণ করেছিল। তাই পশ্চিমা রাজনীতিবিদরা পশ্চিমকে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশকে চাপ দেয়ার জোর দাবি জানায়। এই স্বৈরাচারী ব্যবস্থা বাংলাদেশে চলমান থাকলে এই দায় পশ্চিমাদের উপরও বর্তায়। কারণ এতো খারাপ পরিস্থিতি হওয়া সত্ত্বেও কেন পশ্চিমা দেশগুলো ব্যবস্থা নিতে দেরি করছে তারও জবাবদিহি চেয়েছেন অনেক রাজনীতিবিদ।

বাংলাদেশের প্রতিবেশী ভারত বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের এই সকল অমানবিক আচরণের জন্য দায়ী বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কোনও বাধ্যতামূলক পদক্ষেপের বিরোধিতা করে ভারত সবসময়। যাতে ভারতের পরিকল্পনা নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। যদিও দিল্লি বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে তাদের সাতটি উত্তর-পূর্ব রাজ্যের রাস্তা এবং নদী পরিবহন অ্যাক্সেস চায়। বাংলাদেশ অঞ্চল দিয়ে সেভেন সিস্টারকে কন্ট্রোল করতে চায় ভারত।

নেপাল, বাংলাদেশ এবং ভুটানের মধ্যে চলমান একটি ২০ কিলোমিটার রাস্তা বা ল্যান্ড করিডোর রয়েছে। যার নাম “চিকেন নেক” বলে অভিহিত করা হয়। এই চিকেন নেক ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলিকে ভারতের অন্যান্য অংশের সাথে সংযুক্ত করে। দিল্লির কর্মকর্তারা এও আশঙ্কা করেন, এই অঞ্চল চীনের কন্ট্রোলে গেলে ভারত তাদের সাত রাজ্যের অধিকার হারাতে পারে। তাই বাংলাদেশের অন্য কোনো দেশের সাথে বা চীনের সাথে গভীর সম্পর্ক ভারতকে বিপদে ফেলতে পারে।

Sheikh Hasina (left) with Narendra Modi on the sidelines of the G20 summit in Delhi

দিল্লিতে জি২০ সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে শেখ হাসিনা (বাঁয়ে)

২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পরপরই শেখ হ্যাসিনা ভারতকে প্রাধান্য দিয়ে তার কার্যক্রম চালাতে থাকেন। শেখ হাসিনার এই কার্যক্রম সব ছিল দিল্লীর পক্ষে যা অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নিজস্ব স্বার্থকেও ক্ষুণ্ণ করেছে। তাই দিল্লী মনে করে বাংলাদেশকে অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করা হলে তাদেরকে চীনের দিকে ঠেলে দিতে পারে। বেইজিং ইতিমধ্যে ভারতের সাথে আঞ্চলিক আধিপত্যের লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশে তাদের কাজ প্রসারিত করতে আগ্রহী।

আপাতত, শেখ হাসিনার ক্ষমতায় পূণরায় যাওয়ার জন্য সুস্পষ্ট পথে রয়েছেন বলে মনে করা হয়। তবে তার সামনে বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জ শীঘ্রই এসে উপস্থিত হতে পারে বলে মনে করে বিভিন্ন মহল।

ঢাকা ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলকে অর্থ প্রদানের সংকটে রয়েছে। সুতরাং অর্থনৈতিক সমস্যা মোকাবেলায় সরকারকে নির্বাচনের পরে কিছু কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

তার হাসিনা বিরোধীরা ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকবে না। পোশাক খাত, অর্থনৈতিক প্রতিবন্ধকতা সহ নানা চাপে কতো দিন শেখ হাসিনা র‍্যাজিম টিকে থাকতে পারে সেটাই এখন প্রশ্ন।

BBC এর রিপোর্ট থেকে অনুবাদঃ সোয়ালেহীন করিম চৌধুরী
চেয়ারম্যান, সেন্টার ফর ডেমোক্রেসি এন্ড গুড গভর্নেন্স
০২ জানুয়ারি ২০২৪

 


Spread the love

Leave a Reply