৯০ দিনের মধ্যে ভেঙে ফেলতে হবে বিজিএমইএ ভবন

Spread the love

নিজস্ব প্রতিবেদক:

আগামী ৯০ দিনের মধ্যে ভেঙে ফেলতে হবে রাজধানীর হাতিরঝিলে নির্মিত বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) ‘অবৈধ’ স্থাপনাটি। হাইকোর্টের দেয়ার রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলের প্রেক্ষিতে আপিল বিভাগও ভবনটি ভেঙে ফেলা বিষয়ে হাইকোর্টের রায় বহাল রাখায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে লিভ টু আপিলের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে বিজিএমইএর পক্ষে ব্যরিস্টার রফিকুল হক ও অ্যাডভোকেট কামরুল হক সিদ্দিকী শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহুববে আলম। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ লিভ টু আপিল খারিজ করে দেয়।

২০১১ সালের ৩ এপ্রিল বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ এক রায়ে বিজিএমইএ ভবন ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন। আদালত রায়ে বলেন, ভবনটি সৌন্দর্য ও মহিমান্বিত হাতিরঝিল প্রকল্পে একটি ক্যান্সারের মতো। এই ধংসাত্মক ভবন অচিরেই বিনষ্ট করা না হলে এটি শুধু হাতিরঝিল প্রকল্পই নয়, সমস্ত ঢাকা শহরকে সংক্রমিত করবে।

রায়ে বলা হয়, সরকার এবং অন্যান্য কর্তৃপক্ষের ওপর নির্দেশ হলো, ভবনটি ৯০ দিনের মধ্যে ভেঙে ফেলতে হবে। ওই জমি জনকল্যাণে ব্যবহার করতে হবে। হাতিরঝিল প্রকল্প একটি জনকল্যাণমূলক প্রকল্প। বিজিএমইএর আবেদনে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ একই বছরের ৫ এপ্রিল এক আদেশে হাইকোর্টের রায় ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন। পরবর্তী সময়ে আপিল বিভাগ স্থগিতাদেশের মেয়াদ আরও বাড়ান।

রাজউকের অনুমোদন ছাড়াই বিজিএমইএ ভবন নির্মাণ করা নিয়ে ২০১০ সালের ২ অক্টোবর দৈনিক পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত প্রতিবেদন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ডি এইচ এম মনির উদ্দিন আদালতে উপস্থাপন করেন। পরদিন ৩ অক্টোবর বিজিএমইএ ভবন কেন ভাঙার নির্দেশ দেওয়া হবে না এর কারণ জানতে চেয়ে হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করে। পরে সব পক্ষ ও এমিকাস কিউরি হিসেবে বিশিষ্ট আইনজীবীদের শুনানি শেষে রায় ঘোষণা করা হয়।

এ বিষয়ে হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ রায় বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস থেকে বলা হয়, পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়েছে, বিজিএমইএর ওই ভবনের জমির ওপর কোনও মালিকানা নেই। কেননা জমিটি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল রেলওয়ের জন্য ১৯৬০ সালে। অধিগ্রহণ আইন অনুযায়ী কোনও দাবিদার কর্তৃপক্ষের জন্য শুধু জনস্বার্থে কোনও ভূমি অধিগ্রহণ করা যায়। পরে যদি দাবিদার কর্তৃপক্ষ অধিগ্রহণকৃত জমি বা সে জমির অংশ অপ্রয়োজনীয় মনে করে তাহলে দাবিদার কর্তৃপক্ষ সে জমি সরকার বা জেলা প্রশাসনকে ফেরত দিতে বাধ্য থাকে। এ ব্যাপারে দাবিদার কর্তৃপক্ষের কোনও হাত থাকে না। সরকার সে অবস্থায় হয় ওই জমি অন্য কোনও জনস্বার্থে ব্যবহার করবে অথবা জমি মূল মালিকের কাছে ফেরত দিতে বাধ্য থাকবে।


Spread the love

Leave a Reply