কর্মী সংকটে বন্ধ হচ্ছে দিনে একটি করে রেস্টুরেন্ট

Spread the love

The-Bengal-Restaurant-Londonবাংলা সংলাপ ডেস্কঃ বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত এক রেস্টুরেন্ট মালিক যুক্তরাজ্য সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, প্রতিদিন একটি করে উপমহাদেশীয় খাবারের রেস্টুরেন্ট বন্ধ হয়ে যাচ্ছে দেশটিতে। ‘ব্রিটিশ কারি অ্যাওয়ার্ডে’র প্রতিষ্ঠাতা ও যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি খাবার শিল্পের শীর্ষ প্রচারণাকারী এনাম আলী এই সতর্কতা জানান। তিনি বলেন, বর্তমানে যুক্তরাজ্যে উপমহাদেশীয় খাবার শিল্পে প্রায় ৩০ হাজারের মতো দক্ষ শ্রমিক দরকার। বিদ্যমান শিল্পগুলো টিকিয়ে রাখতে হলে অবিলম্বে এই জনবল নিয়োগ দেওয়া দরকার।
এনাম আলী বলেন, ‘কর্মী সংকটের কারণে আমাদের অনেককে ভোক্তাদের চাহিদা পূরণে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আর এজন্য আমরা চাইলেও এই শিল্পের বিস্তার ঘটানো অসম্ভব।’

রেস্টুরেন্টে কর্মী সংকট দূর করার জন্য এনাম আলী সম্প্রতি দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডের নর্থ ইস্ট সুরেই কলেজ অব টেকনোলজির সঙ্গে মিলে বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন। সেখান থেকে কর্মীদের রেস্টুরেন্ট শিল্পে কাজে লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে তার। তিনি বলেন, ‘শিল্প হিসেবে আমরা অভ্যন্তরীণভাবে সব ধরনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছি। এজন্য এমন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে যাতে তরুণ প্রজন্ম সক্রিয়ভাবে এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে।’

রেস্টুরেন্ট মালিকদের মাধ্যমে স্বল্প মেয়াদী কাজের ভিসা দিতে বর্তমান আইন পুনর্মূল্যায়ন করার জন্য যুক্তরাজ্য সরকারের কাছে তদবির করে আসছেন এনাম আলী। উপমহাদেশীয় খাবার শিল্পের পক্ষ থেকে বারবার একটি বিষয়কে ‘ব্রেক্সিট প্রতারণা’ হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে। তাহলো ব্রেক্সিটপন্থী রাজনীতিকরা বাংলাদেশি এসব রেস্টুরেন্ট মালিকদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, একবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্য আলাদা হতে পারলে দক্ষিণ এশীয় নাগরিকদের ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করা হবে।

বর্তমান আইন অনুসারে দক্ষিণ এশিয়া থেকে একজন বাবুর্চি নিয়ে যাওয়া হলে তাকে নূন্যতম ৩৫ হাজার পাউন্ড বেতন দিতে হবে। এই বেতন ছোট ছোট রেস্টুরেন্টের মালিকদের দেওয়ার সাধ্য নেই।

গত সপ্তাহে লন্ডনে অনুষ্ঠিত ‘ব্রিটিশ কারি অ্যাওয়ার্ডের’ অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে বলেছেন, ‘ভারতীয় উপমহাদেশীয় খাবারের রেস্টুরেন্ট ব্যবসার সাফল্য যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে বড় অর্জনগুলোর একটি। ২০০ বছর আগে প্রথম স্থাপিত হয়েছিল এমন রেস্টুরেন্ট, আজ যা শত শত কোটি পাউন্ডের বিশাল এক শিল্প। এ শিল্প আধুনিক, সফল এবং অগ্রসরমান।’ তিনি আরও বলেছেন, ভারতীয় উপমহাদেশীয় খাবারের ব্যবসায় হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়। খাতটি প্রবৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখে। কিন্তু শিল্পটি বর্তমানে যেসব সমস্যায় ভুগছে তা নিয়ে তিনি বিশেষ কিছু বলেননি।

২০১৮ সালের পুরষ্কারপ্রাপ্ত রেস্টুরেন্টগুলোর মধ্যে অ্যাবারডিনের ‘লাইট অব বেঙ্গল’ পেয়েছে ‘বেস্ট স্পাইসি রেস্টুরেন্ট ইন স্কটল্যান্ড’ এবং লন্ডনের ‘চিলি টুক টুক’ পেয়েছে ‘বেস্ট ডেলিভারি রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড টেক অ্যাওয়ের’ পুরষ্কার।

ইউরোপের উপমহাদেশীয় খাবার শিল্পের অগ্রগতিতে রাখা অবদানের জন্য বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সুইডেনবাসী রেজাউল করিমকে ‘স্পেশাল রেকগনিশন অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হয়েছে। সুইডেনে তার ভারত উপমহাদেশীয় খাবারের চেইন রেস্টুরেন্ট রয়েছে।


Spread the love

Leave a Reply