ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা শুরু
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে শুরু হয়েছে একুশতম ঢাকা আর্ন্তজাতিক বাণিজ্য মেলা। শুক্রবার বিকালে মেলা প্রাঙ্গণের পাশে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু আর্ন্তজাতিক সম্মেলন কেন্দ্র থেকে মাসব্যাপী এ মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশের পণ্যের অনেক সুনাম রয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাট একসময় রফতানি হতো। মসলিনও খুব নামকরা ছিল। এখন পণ্যের বহুমুখীকরণ করতে হবে। আর আমাদের নতুন নতুন বাজার খুঁজে বের করতে হবে।
তিনি বলেন, পণ্যের চাহিদা বিশ্লেষণ করতে হবে ব্যবসায়ীদের। কোনো রফতানিযোগ্য পণ্য উৎপাদন করা যায় সে দিকে সজাগ দৃষ্টি দিতে হবে।
এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই‘র সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমেদসহ দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী ও বেসামরিক-সামরিক কর্মকর্তা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান শুভাশীষ বোস।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) আয়োজিত এ মেলা ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। প্রবেশ মূল্য ধরা হয়েছে প্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে ৩০ টাকা ও অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ২০ টাকা।
এবার বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ছাড়াও মেলায় পাঁচ মহাদেশ থেকে ২২টি দেশ অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে সাতটি দেশ প্রথমবারের মতো অংশ নিচ্ছে।
মোট ১৩ লাখ ৭৩ হাজার বর্গফুট জায়গা জুড়ে মেলা মাঠে ছোট বড় মিলে ১৬৮টি প্যাভিলিয়ন ও ৩৮৭টি স্টল থাকছে। এ সবের মধ্যে ৬০টি প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন, ১০টি জেনারেল প্যাভিলিয়ন, ৩টি রিজার্ভ প্যাভিলিয়ন, ৩৮টি ফরেন প্যাভিলিয়ন, ৩৬টি প্রিমিয়ার মিনি প্যাভিলিয়ন, ১৩টি জেনারেল মিনি প্যাভিলিয়ন, ৬টি রিজার্ভ মিনি প্যাভিলিয়ন, দুটি ফরেন মিনি প্যাভিলিয়ন, ৬৪টি প্রিমিয়ার স্টল, ১৬টি ফরেন প্রিমিয়ার স্টল, ২৭৫টি জেনারেল স্টল ও ২৫টি ফুড স্টল এবং পাঁচটি রেস্টুরেন্ট থাকবে।
পাশাপাশি মেলায় একটি ই-শপ, একটি শিশু পার্ক, সুন্দরবনের জীব-বৈচিত্রের আদলে ইকো পার্ক, একটি ই-পার্ক, দুটি রক্ত সংগ্রহ কেন্দ্র, দু’টি মা ও শিশু কেন্দ্র, একটি প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র, ১৪টি স্পটে গার্ডেন, ১৩ স্পটে ৫২টি টয়লেট, ৩টি স্পটে ৭৭০টি গাড়ি রাখার জন্য পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
এছাড়া মেলায় মুসল্লিদের নামাজ পড়ার জন্য একটি মসজিদ ও আনসার এবং বেসরকারি সিকিউরিটি ফোর্সের সদস্যদের জন্য দুইটি ডরমেটরিও স্থাপন করেছে কর্তৃপক্ষ।
মেলায় বিগত বছরের মতো এবারও নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে ধারণা দিতে বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন স্থাপন করা হয়েছে। এতে ফিল্ম প্রজেক্টরের মাধ্যমে বিভিন্ন ডকুমেন্টরি প্রদর্শন করা হবে।
এদিকে, মেলার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের পাশাপাশি পর্যাপ্ত সংখ্যক বিজিবি, র্যাব, আনসার ও বেসরকারি সিকিউরিটি ফোর্স নিয়োজিত থাকছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তত্বাবধানে মেলা প্রাঙ্গণের গুরুত্বপূর্ণ স্থান, গেইট, পার্কিং এরিয়াসহ চারপাশে ১০০টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।