আমবয়ানের মধ্য দিয়ে তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু
রাজধানী ঢাকার পার্শ্ববর্তী টঙ্গীর তুরাগ তীরে শুরু হয়েছে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় সমাবেশ ৫১তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। ইজতেমায় অংশ নিতে আসা লাখো ধর্মপ্রাণ মুসল্লির ‘আল্লাহু আকবার’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার মাঠ।
বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের অন্তত ৯৩টি দেশের কয়েক হাজার মুসুল্লি এবারের ইজতেমায় অংশ নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। ইজতেমার মুরব্বি মাওলানা গিয়াস উদ্দিন জানান, শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত ভারত, পাকিস্তানসহ এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ, আমেরিকাসহ ৯৩টি দেশের ৬ হাজার ১১২জন মুসল্লি অংশ নিয়েছেন। এছাড়া্ও ঢাকা ও আশপাশের এলাকা থেকে আগত মুসুল্লিদের অংশগ্রহণে শুক্রবারের জুমুআর জামায়াতে অন্তত পাাঁচ লাখ মুসুল্লি নামাজ আদায় করেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
হজের পর মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমাবেশ হলো এ বিশ্ব ইজতেমা। ইসলামের দাওয়াতী কাজ বিশ্বব্যাপী পৌঁছে দেয়ার জন্য জামাতবদ্ধ হয়ে বিশ্ব ইজতেমা থেকেই দাওয়াতি কাজে বের হন। ইজতেমা সূত্র জানায়, বাদ ফজর উর্দূতে আমবয়ান করেন ভারতের হযরত মাওলানা আবদুর রহমান। বয়ানটি বাংলায় তরজমা করেন বাংলাদেশের হযরত মাওলানা আব্দুল মতিন।
বৃহস্পতিবার থেকে আসতে থাকা মুসল্লিদের ঢল শুক্রবারও অব্যাহত থাকে। এ বছর প্রথম পর্বে ১৭টি জেলা অংশ নেয়ায় চটের বিশাল সামিয়ানার নীচে মুসল্লিদের কোন ঠাসাঠাসি নেই।
এবারে প্রথম দফায় বিভিন্ন জেলার মুসল্লিদের জন্য পুরো ময়দানকে ২৭টি খিত্তায় (ভাগে) ভাগ করা হয়েছে। নির্দিষ্ট খিত্তায় নির্দিষ্ট জেলার মুসল্লির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এসবের মধ্যে ঢাকা জেলা ১ থেকে ৬ নং খিত্তায়, শেরপুর ৭নং খিত্তা, নারায়নগঞ্জ ৮ ও ১১ নং খিত্তা, নীলফামারী ৯নং খিত্তা, সিরাজগঞ্জ ১০নং খিত্তা, নাটোর ১২নং খিত্তা, গাইবান্ধা ১৩নং খিত্তা, লক্ষ্মীপুর ১৪ ও ১৫নং খিত্তা, সিলেট ১৬ ও ১৭নং খিত্তা, চট্টগ্রাম ১৮ ও ১৯নং খিত্তা, নড়াইল ২০নং খিত্তা, মাদারীপুর ২১নং খিত্তা, ভোলা ২২ ও ২৩নং খিত্তা, মাগুরা ২৪ নং খিত্তা, পটুয়াখালী ২৫নং খিত্তা, ঝালকাঠি ২৬নং খিত্তা এবং পঞ্চগড় ২৭নং খিত্তায় মুসল্লিরা অবস্থান নেবেন।
এদিকে, ইজতেমা মাঠের সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশ ও র্যাব কন্ট্রোল রুম ও ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করেছে। সিসি ক্যামেরা মাধ্যমে সার্বিক নিরাপত্তা কন্ট্রোল রুম থেকে মনিটরিং করা হচ্ছে। খিত্তায় খিত্তায় সাদা পোষাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা অবস্থান করছেন। জানা গেছে, পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা ৫টি স্তরে বিভক্ত হয়ে পোশাকে ও সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া বাইনোকুলার, মেটাল ডিটেক্টর, নৌ-টহল, চেকপোষ্ট। দুই পর্বে প্রায় ১২ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ইজতেমার সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছেন।