আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলী বরখাস্ত
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে আইন মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার আইন মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। পরবর্তী আদেশ না পাওয়া পর্যন্ত তিনি কাজে যোগদান করতে পারবেন না বলেও জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
এর আগে গুরুতর ‘পেশাগত অসদাচরণ ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের’ অভিযোগে তাকে অব্যাহতি দিয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে তদন্ত করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেব। অভিযোগের পর তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এখনো তদন্ত কমিটি গঠন করিনি। তবে খুব শিগগিরই এই কমিটি গঠন করা হবে। তারপর এ বিষয়ে পুরোপুরি সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এর আগে গত ৯ ফেব্রুয়ারি ‘জনস্বার্থে’ সকল মামলা থেকে মোহাম্মদ আলীকে অব্যাহতি দেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু। পরে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইন মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়। সেই চিঠির প্রেক্ষিতে আইন মন্ত্রণালয় তাকে অব্যাহতি দেন।
মূলত মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে ট্রাইব্যুনালে আটক ময়মনসিংহের জাতীয় পার্টির বর্তমান সংসদ সদস্য এমএ হান্নান ও তার ছেলের মামলায় ‘আপোষ মীমাংসা’র অভিযোগে রয়েছে।
তবে এক সূত্র জানায়, এমপি হান্নানের মামলায় তিনি প্রসিকিউটর সুলভ আচরণ না করার কারণে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হতে হয়েছে। এর আগেও প্রসিকিউশনের অন্যান্য সদস্যরা মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে পেশাগত অসদাচরণের অভিযোগ এনে লিখিত অভিযোগ করেছেন। এর আগে তার বিরুদ্ধে প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ লিখিত অভিযোগ করেন।
চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু জাগো নিউজকে বলেন, একজন আইনজীবীর আদালতের বিচারক এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যেমন আচরণ করা উচিত তা না করে তিনি (মোহাম্মদ আলী) শৃংখলা ভঙ্গ করেছেন।
তিনি বলেন, সকল আইনজীবীদের জন্য আদালতের কিছু বিধি-বিধান থাকে তিনি তা পালন করতে পারেন নি। আসামি এবং আসামির আইনজীবীর সঙ্গে কেমন আচরণ করা দরকার তারও রুল এবং বিধান রয়েছে। তিনি তা ভঙ্গ করেছেন এমন কিছু করেছেন যে টা বললে জনসম্মুখে আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হবে।
এর আগে গত ৪ ফেব্রুয়ারি মোহাম্মদ আলীকে ট্রাইব্যুনালের সব মামলা থেকে প্রত্যাহার করে একটি আদেশ জারি করেন চিফ প্রসিকিউটর। আদেশে বলা হয়, ‘জনস্বার্থে’ তাকে সব মামলা থেকে প্রত্যাহার করা হলো। প্রসিকিউটর কার্যালয় জানিয়েছে, এক আসামির জামিনের পক্ষে কাজ করায় তার বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেয়া হয়। তবে এ বিষয়ে কেউ সরাসরি কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তবে গুঞ্জন রয়েছে এক আসামিকে জামিন পাইয়ে দেয়ার জন্য তার কাছ থেকে অর্থ নিয়েছেন তিনি।