ক্রাইমিয়া সেতুতে বিস্ফোরণ ইস্যুতে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসবাদের’ অভিযোগ পুতিনের
বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ অধিকৃত ক্রাইমিয়ার সাথে রাশিয়াকে যে সেতুটি যুক্ত করেছে সেটির উপর হামলার জন্য ইউক্রেনকে দায়ী করে একে ‘সন্ত্রাসী তৎপরতা’ বলে বর্ণনা করেছেন ভ্লাদিমির পুতিন।
প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন ইউক্রেনের গোয়েন্দা বাহিনী রাশিয়ার কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ বেসামরিক অবকাঠামো ধ্বংস করার লক্ষ্য নিয়েছিল।
তিনি তদন্ত কমিটির প্রধান আলেকজান্দার ব্যাস্ত্রিকিনের সঙ্গে বৈঠকের সময় এসব কথা বলেন।
কর্মকর্তারা বলছেন, এই সেতু বিস্ফোরনে তিন জন মারা গেছে।
রাশিয়ার কর্তৃপক্ষ বলছে, যখন একটা লরিতে বিস্ফোরণ হয় তখন ঐ তিনজন কাছেই একটা গাড়ির মধ্যে ছিল ।
“এখানে কোন সন্দেহ নেই যে রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ বেসামরিক অবকাঠামো ধ্বংস করার জন্য এটা একটা সন্ত্রাসী কার্যক্রম” বলেন মি. পুতিন।
“এই কর্মকাণ্ডের পিছনে পরিকল্পনাকারী, বাস্তবায়নকারী এবং সুবিধাভোগীরা ইউক্রেনের নিরাপত্তা বাহিনী”।
মি. ব্যাস্ত্রিকিন বলেন, রাশিয়ার নাগরিক এবং কিছু বিদেশি রাষ্ট্র এই হামলার প্রস্তুতির জন্য সাহায্য করেছে।
মি. ব্যাস্ত্রিকিনের কথা অনুযায়ী তদন্তকারীরা প্রমাণ করতে পেরেছেন যে, বিস্ফোরিত ঐ ট্রাকটি বুলগেরিয়া, জর্জিয়া, আর্মেনিয়া, নর্থ ওসেটিয়া এবং ক্রাসনোদার অঞ্চল পাড়ি দিয়ে আসছিল।
এই বিস্ফোরণের কারণে ওই সেতুর সাথে যুক্ত সড়কপথের কিছু অংশে চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
ইউক্রেনের বাহিনী এমন কোন ইঙ্গিত দেয়নি যাতে স্পষ্ট হয় যে তারা এই হামলার পেছনে আছে।
কিন্তু ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির একজন উপদেষ্টা মি. পুতিনের অভিযোগকে নাকচ করেছেন।
তিনি লিখেছেন, “এখানে একটাই সন্ত্রাসী রাষ্ট্র আছে” এবং “সারা বিশ্ব জানে তারা কারা”।
তিনি আরো বলেন, “পুতিন কি ইউক্রেনকে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের কারণে দায়ী করছে? এটা রাশিয়ার জন্য পর্যন্ত বিদ্রুপাত্মক”।
তবে শনিবার রাতের ভাষণে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ঘটনাটির কথা উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলছিলেন, “আজকের দিনটি খারাপ দিন নয় এবং আমাদের রাষ্ট্রের ভূখণ্ডের জন্য রৌদ্রজ্জ্বল”।
তিনি আরো যোগ করেন, “দুর্ভাগ্যবশত ক্রাইমিয়াতে মেঘাচ্ছন্ন ছিল তারপরেও সেখানে উষ্ণ ছিল”।
রাশিয়ার কর্তৃপক্ষ বলছে, সেতুর সড়কের অংশ আংশিক খুলে দেয়া হয়েছে তবে হালকা যানবাহন চলাচল করতে পারবে।
সেতুর রেলের অংশ খুলে দেয়া হয়েছে, যেখানে তেলের ট্যাংকগুলোতে আগুন ধরে গিয়েছিল।
উনিশ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতু ইউরোপের দীর্ঘতম এবং রাশিয়ার বাহিনীর জন্য ইউক্রেনের যুদ্ধ করার রসদ সরবরাহের একটা গুরুত্বপূর্ণ পথ।
রাশিয়া এই পথ দিয়ে সামরিক যন্ত্রপাতি, বিস্ফোরক এবং সৈন্যদের যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠায়।
ক্রাইমিয়াকে রাশিয়ার সাথে সংযুক্তির চার বছর পর ২০১৮ সালে সেতুটি খুলে দেয়া রাশিয়া।