জিএসসি এর কেন্দ্রীয় কমিটির বিরুদ্ধে অপপ্রচারের জবাব ও প্রকৃত সত্য ঘটনা
জিএসসি এর কেন্দ্রীয় কমিটির বিরুদ্ধে অপপ্রচারের জবাব ও প্রকৃত সত্য ঘটনা তুলে ধরে একটি বক্তব্য প্রদান করেছেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় চেয়ারপার্সন ব্যারিস্টার আতাউর রহমান , সাধারন সম্পাদক খসরু খান এবং কোষাধ্যক্ষ সালেহ আহমদ। বক্তব্যটি হুবহু তুলে ধরা হলঃ
গত কয়েকদিন ধরে গ্রেটার সিলেট ডেভেলপমেন্ট এন্ড ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল ইউ কে (জিএসসি)’র এর কয়েকজন সদস্য ক্রমাগত আমাদের প্রাণের সংগঠনকে নিয়ে বিগত তিন দশকের ইতিহাসে প্রথম বারের মতো জনমনে হিংসা-বিদ্ধেষ, বিভ্রান্তি, অপপ্রচার, কুৎসা রটানো এবং সংগঠনের দায়িত্বরত শীর্ষ নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে যে গুজব ছড়াচ্ছেন তারই তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আমরা প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছি ।
আমরা মনে করেছিলাম-সারা বছর জুড়ে সংগঠনের বেশিরভাগ অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকা এসব কতিপয় নির্বাচনকেন্দ্রিক নেতারা এবারের ইলেক্শনের আগে তাদের মিথ্যাচার বন্ধ করবেন (প্রতিবার যেভাবে মিথ্যাচার করেন), কিন্তু এবার তাঁরা সকল শিষ্টাচার ছাড়িয়ে গেলে আমরা আপনাদের সামনে সত্য তুলে ধরা দায়িত্ব মনে করি-
আমরা আমাদের এই লিখিত বক্তব্যে তাঁদের অভিযোগ খণ্ডন ও আমাদের সাফল্য একে একে তুলে ধরবো পয়েন্ট আকারে-
১. জিএসসি বিলেতের গতানুগতিক বাংলাভাষী অন্যান্য সংগঠন থেকে ভিন্ন। ১২টা অঞ্চল ও ১৪ টা শাখা ও প্রায় ১২ হাজার সদস্য নিয়ে পুরো বিলেতে এই সংগঠন বিস্তৃত। প্রতিটি অঞ্চল ও শাখার সম্মেলন ও কমিটি হওয়ার পর তাঁদের পাঠানো ডেলেগেটের মাধ্যমে ও তাদের সরাসরি ভোটে সেন্ট্রাল কমিটি নির্বাচিত হয়। আমরা ২০১৯ সালে (কভেন্ট্রি এজিএম) সেন্ট্রাল কমিটির সম্মেলন করার পর অঞ্চল ও শাখাগুলোকে তাঁদের সম্মেলন করার নির্দেশনা দেয়া হয় কিন্তু পেন্ডামিকের কারণে প্রায় দুই বছর সবকিছু বন্ধ থাকার পর ও শাখা এবং অঞ্চলগুলোর নির্বাচন সম্পন্ন না হওয়ায় আমরা তিন বার তারিখ দেয়ার পরও কেন্দ্রীয় বিজিএম সমাপ্ত করতে পারিনি এবং সংবিধানের ১৪ ধারা ও বিভিন্ন উপধারার আওতায় আমাদের ভোটার তালিকা ও বর্তমান কমিটি নতুন কমিটি না হওয়া পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। এটা সম্পূর্ণ সাংবিধানিক।
আমাদের গত কমিটির কয়েকজন নেতা তথা সাবেক সভাপতি নুরুল ইসলাম মাহবুব, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আব্দুল কাইয়ুম কায়সার ও মুজিবুর রহমান বিভিন্ন মিডিয়াতে আমাদের কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণের কথা বললে ও তাঁদের কমিটি পেন্ডেমিক ছাড়া ও দুই বছরের জায়গায় প্রায় ৫ বছর অতিবাহিত করলে এ ব্যাপারে তাঁরা টু শব্দ ও করেন নি। আমরা সম্মানিত সাংবাদিক ভাইদের এ ব্যাপারে অনুসন্ধানের আকুল আবেদন জানাই।
২. আমাদের সম্মানিত পেট্রনরা সাউথ ইস্ট রিজিওন এর দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে (২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২২) অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকলে ও তখন মেম্বারশিপ অবৈধ বলে কোন প্রশ্ন না তুললে ও এখন মিডিয়াতে তাঁদের বক্তব্য দেখে আমরা স্তম্ভিত। আমরা তাঁদের কাছে নূন্যতম নিরপেক্ষতা আশা করেছিলাম।
আমাদের সম্মানিত পেট্রনদের আমরা কেন্দ্রীয় কমিটি মধ্যস্ততা (সালিসি নয়) করার দায়িত্ব দিলে তাঁরা তা আমাদের কাছে প্রকাশ না করে সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্য মিডিয়ার কাছে তুলে ধরে আমাদের বিশ্বাসকে চরম অপমান করেছেন এবং মুখে প্রাণের সংগঠন বললে ও তাঁদের একপেশে ও মিথ্যা রিপোর্ট প্রকাশ করে তাঁদের নিরপেক্ষতা হারিয়েছেন এবং বিলেতের পুরো সিলেটবাসীকে অপমান করেছেন। উল্লেখ যে, জিএসসি এর সংবিধান অনুযায়ী কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমোদন ছাড়া তাঁরা কোন সালিসি বা মধ্যস্ততা করার অধিকার নাই। আমরা কেন্দ্রীয় কমিটি তাঁদের যে দায়িত্ব দিয়েছিলাম, তাঁরা সবাইকে নিয়ে বসে তা করার প্রতিশ্রুতি দিলে ও তা করেন নি।
জিএসসি এর প্যাট্রন হাসানাত মোহাম্মদ হোসাইন এমবিই এবং কে এম আবু তাহের চৌধুরীর অনুসন্ধানকালে-আমরা সর্বাত্মক সাহায্যে সহযোগীতা তথ্য-উপাত্ত সহ বিগত ২৯ শে ডিসেম্বর জিএসসি’র হেড অফিসে পেট্রন কে এম আবু তাহের চৌধুরী, (পেট্রন ডঃ হাসনাত এম হোসাইন- অনুপস্থিত)ও জিএসসি’র উপদেষ্টা জনাব এম এ মান্নান সাহেবকে বিস্তারিত প্রদান ও অবহিত করা হয়। যেখানে দায়িত্বশীল ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কাউন্সিলের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে উপস্থাপন করলে পেট্রন জনাব কে এম আবু তাহের চৌধুরী ও মান্নান সাহেব সন্তুষ্ঠি প্রকাশ করেন। কিন্তু এর পরে ও ত্রুটিপূর্ণ ভোটিং ডেলিগেট, মেম্বারশিপসহ নির্বাচনী তফসিল আর্থিক অনিয়ম, সংবিধান লঙ্ঘন ও জিএসসি’র বর্তমান দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের স্বেচ্ছাচারিতা’র যে অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিন্দুমাত্র ও সত্যতা পাওয়া যায়নি।
৩. জিএসসি এর নিয়ম অনুযায়ী দুই বছরের জন্য সাধারণ সদস্যরা যে ১০ পাউন্ড মেম্বারশিপ ফিস দিয়ে থাকেন এর মধ্যে যেসব এলাকাতে ব্রাঞ্চ আছে, তাদের রিজিওনগুলো চার পাউন্ড, ব্রাঞ্চ ২ পাউন্ড রেখে ৪ পাউন্ড কেন্দ্রীয় কমিটিতে জমা রাখেন। সংগঠনের কাঠামো না জানায় অনেকে এ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ান।
৪. সাউথ ইস্ট রিজিওনের দ্বি-বার্ষিক সভায় আর্থিক বিষয়ে সকল সদস্য সম্মতি জানালে একজন সম্মানিত সদস্য হারুনুর রশিদ অডিটেড একাউন্ট না থাকার কারণ ও আরও কিছু হিসাব চাইলে রিজিঅনের ট্রেজারার সূফী সুহেল আহমদ বিষয়টি ব্যখ্যা করলে ও রিজিওন নয়, কেন্দ্রীয় কমিটির হিসাব অডিট হয় জানালে সর্বসম্মতিক্রমে হিসাব পাস হলে ও আজকে প্রায় একবছর পরে কেন্দ্রীয় ইলেকশন এর আগে আর্থিক অনিয়ম এর অভিযোগ তোলা দুর্ভসন্ধিমূলক। ওই অনুষ্ঠানে দুই সম্মানিত পেট্রন উপস্থিত থেকে হিসাব নিয়ে কোন আপত্তি না জানালে ও এখন মিডিয়াতে এ নিয়ে অভিযোগ তোলা খুবই দুঃখজনক।
৫. নর্থ ইস্ট রিজিওনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান রানা মুঠোফোনে সুন্দর ও নির্ভেজাল নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানালে ও এখন এ ব্যাপারে প্রশ্ন তোলা নিজেকে নিজে অস্বীকার করার মতো।
ঠিক তেমনি সাউথ ওয়েলস ও কেন্দ্রীয় নেতা মকিস আহমদ মনসুর টিভি ও পত্রিকাতে তাঁদের রিজিওন এর নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়েছে বলে প্রকাশ করলে ও এখন কেন্দ্রীয় নির্বাচনের আগে তাঁদের স্থানীয় নির্বাচনের ব্যাপারে অভিযোগ আনা হাস্যকর।
৬. ২০১১ সালে চ্যারিটি কমিশনের আইনবিদের নির্দেশনা মোতাবেক সংবিধানের কিছু ধারা পরিবর্তন করা হলে এবং এ ব্যাপারে সকল সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় নেতারা অবহিত থাকলে ও এখন এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা অবান্তর এবং কেন্দ্রীয় নির্বাচন আসলেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কিছু নেতার সলিসিটার নোটিশ দেয়া অভ্যাসে পরিণত হয়েছে. এসব বিষয়ে কোন মেরিট নাই বলে তাঁরা কোর্ট এ যাওয়ার সাহস করেন না. তাঁরা সংগঠনকে কাজ করতে দিতে রাজি নয়।
এই কমিটির সাফল্য:
১. ৪২ পাউন্ড বনাম ৫৮,৫৩৪.৬০ পাউন্ড
গত কমিটি (মাহবুব, কায়সার, ড মুজিব গং ) তাদের মেয়াদের শেষে মাত্র ৪২ পাউন্ড তহবিলে রেখে যান উপরন্তু ২ মাসের অফিস ভাড়া বাকি ছিল।
কিন্তু বর্তমান কমিটি কালে ৩০ ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত একাউন্ট এ আছে ৫৮,৫৩৪.৬০ পাউন্ড। আমাদের সাফল্যে তাই তাদের এত গাত্রদাহ।
২. ১৩,৩৩৭ পাউন্ড বনাম ৫৩,৩১০ পাউন্ড
গত কমিটি মেম্বারশিপ বাবদ (২০১৩-২০১৮) মাত্র ১৩,৩৩৭ পাউন্ড সংগ্রহ করে এবং আমাদের কমিটি (২০১৮-বর্তমান পর্যন্ত) ৫৩,৩১০ পাউন্ড সংগ্রহ করে। সাফল্য বিচারের ভার আপনাদের হাতে।
৩. গত পাঁচ বছরে আমাদের কমিটি ঈদ স্মাইল, কাগজপত্রবিহীন বিলেতে বসবাসরত বাংলাদেশিদের সাহায্য, পেন্ডামিকের সময় মাস্ক, সানিটাইজার ও দেশে বন্যায় অসহায় মানুষের মধ্যে প্রায় তিন কোটি টাকা বিতরণ করে।
৪. পেন্ডামিকের সময় যখন ভয়ে কেউ ঘর থেকে বের হন নি, তখন আমাদের বর্তমান সভাপতি আতাউর রহমান নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সশরীরে স্থানীয় টিভিতে কয়েক হাজার পাউন্ড অনুদান সংগ্রহ করেন এবং আমাদের নেতারা রাস্তায় রাস্তায় স্বাস্থ্য সামগ্রী বিতরণ করেন।
আজকের সংবাদ সম্মেলনকারীদের আপনারা কোথায় দেখেছিলেন কিনা, আপনারা মিডিয়া কর্মীরা ভালো বলতে পারবেন।
আমরা জিএসসি এর কেন্দ্রীয় কমিটি সহ সকল সাধারণ সদস্যরা এই তিন দশকের পুরোনো সংগঠনের ঐক্য ও সম্মান রাখতে ঐক্যবদ্ধ ।
ধন্যবাদান্তে
ব্যারিস্টার আতাউর রহমান
চেয়ারপারসন
খসরু খান
সাধারণ সম্পাদক
সালেহ আহমদ
কোষাধ্যক্ষ