জয়কে হত্যার ষড়যন্ত্রে গ্রেফতার শফিক রেহমান পাঁচদিনের রিমান্ডে
বাংলা সংলাপ ডেস্ক:
প্রধানমন্ত্রীর পূত্র ও তথ্য বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে সিনিয়র সাংবাদিক শফিক রেহমানকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। শনিবার সকালে রাজধানীর ইস্কাটনে তার বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) দক্ষিণ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাশরুকুর রহমান খালেদ জানান, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যার ষড়যন্ত্রের ঘটনায় পল্টন থানায় একটি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে শফিক রেহমানের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে পুলিশ। তাই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পল্টন থানায় ২০১৫ সালের ৩১ মে ডিবি পুলিশের রমনা জোনের পরিদর্শক মো. ফজলুর রহমান এ বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। সেই জিডিটি ওই বছরের ৩ আগস্ট মামলা হিসেবে গ্রহণ করেন পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদ আলম।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে প্রাপ্ত স্মারক নং-এস/-২৮-২০১৩ (অংশ-৩)/২৬৩৫(২) তারিখ ২৭ এপ্রিল ২০১৫ খ্রি. এর আলোকে, যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রাপ্ত পত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, আমেরিকায় বাংলাদেশের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সম্পর্কে তথ্য ও অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত দলিল সংগ্রহের জন্য ঘুষের ঘটনায় এফবিআই এর এক সাবেক স্পেশাল এজেন্টসহ আরও দুজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। সাবেক এফবিআই স্পেশাল এজেন্ট রবার্ট লাস্টিক তার বন্ধু জোহান্স থ্যালার’কে এবং জোহান্স থ্যালারের পরিচিত রিজভী আহমেদ সিজারদেরকে গোপনীয় ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিষয়ক দলিল এবং তথ্য সংগ্রহের বিনিময়ে অর্থ সংগ্রহের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। সাংস্কৃতিক বিষয়ক সংগঠন জাসাস এর সহ-সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনের ছেলে রিজভী আহমেদ।
অন্যদিকে, শফিক রেহমানের স্ত্রী তালেয়া রেহমান জানান, সকালে একটি টেলিভিশনের সাংবাদিক পরিচয়ে বাসায় ঢোকেন তিন-চারজন লোক। এরপর তারা নিজেদের গোয়েন্দা পুলিশের সদস্য পরিচয়ে তাকে তুলে নিয়ে যান।
সকালে গ্রেফতার হবার পর দুপুর দুইটার দিকে তাকে সিএমএম কোর্টে মহানগর হাকিম মো. মাজহারুল ইসলামের আদালতে হাজির করা হয়। এসময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির সহকারী কমিশনার হাসান আরাফাত শফিক রেহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। আসামিপক্ষ রিমান্ড বাতিল চেয়ে করা আবেদন নাকচ করে দিয়ে আদালত এ আদেশ দেন।
এদিকে, বিশিষ্ট সাংবাদিক শফিক রেহমানকে গ্রেফতারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে, তার মুক্তি দাবি করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তাকে গ্রেফতার সরকারের চরম স্বেচ্ছাচারিতারই বহিঃপ্রকাশ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে খালেদা জিয়া আরও বলেন, শফিক রেহমান সত্য উচ্চারণে অবিচল ও সাহসী এক কলমযোদ্ধা। সেই কারণে তাকে কব্জা করতে না পেরে গ্রেফতার করা হয়েছে, এটি সরকারের চরম স্বেচ্ছাচারিতারই বহিঃপ্রকাশ। দেশে আজ সম্মানী ব্যক্তি ও সুধীজনদের মানহানী, গ্রেফতার করে কণ্ঠরোধ এবং নির্যাতনের মাধ্যমে তাঁদের নির্বাক করার হীন অপচেষ্টার কোনো অন্ত নেই। এটাই বর্তমান সরকারের সাধারণ বৈশিষ্ট্য।