সিরিয়ায় শরণার্থী শিবিরে বিমান হামলায় নিহত ২৮, জাতিসংঘ বলছে যুদ্ধাপরাধ
বাংলা সংলাপ ডেস্ক:
সিরিয়ায় বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত উত্তরাঞ্চলীয় এলাকায় একটি শরণার্থী শিবিরে বিমান হামলায় অন্তত ২৮ জন নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস। বৃহস্পতিবারের এই হামলায় আরও অন্তত ৫০ জন আহত হওয়ার দাবি করছে তারা। তবে বিমান হামলাটি ঠিক কারা চালিয়েছে সে ব্যাপারটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এরইমধ্যে হামলার নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র। সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর ডাকা আংশিক অস্ত্রবিরতিকে যুদ্ধবিধ্বস্ত আলেপ্পো পর্যন্ত বিস্তৃত করার একদিন পরই এ হামলা হলো।
সিরিয়ান অবজারভেটরির বরাতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়, বৃহস্পতিবার ইদলিব প্রদেশের সারমাদা এলাকার কাছে কামৌনা শরণার্থী শিবিরে বিমান হামলা হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে শরণার্থী শিবিরের বেশ কিছু তাঁবু ধ্বংস হয়ে গেছে বলে দেখা গেছে।
কোনও কোনও খবরে বলা হচ্ছে সিরীয় কিংবা রুশ যুদ্ধবিমানের মাধ্যমে হামলাটি চালানো হয়েছে। তবে এ খবরের ব্যাপারে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। অবজারভেটরি বলছে, নিহত ব্যক্তির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে, কেননা ওই হামলায় অনেক লোক গুরুতর আহত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্র আর রাশিয়ার চাপের মুখে সিরিয়ায় আংশিকভাবে ঘোষিত অস্ত্রবিরতিকে বুধবার যুদ্ধবিধ্বস্ত আলেপ্পো নগরী পর্যন্ত বিস্তৃত করে দেশটির সরকারি বাহিনী। স্থানীয় সময় বুধবার মধ্যরাত থেকে ৪৮ ঘণ্টার জন্য এ অস্ত্রবিরতি বহাল থাকবে বলে সরকারি বাহিনীর পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়।
এদিকে, শরণার্থী শিবিরে বিমান হামলায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ। বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জাতিসংঘের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা স্টিফেন ও`ব্রায়েন বলেন, শরণার্থী শিবিরে বিমান হামলা যুদ্ধাপরাধের সামিল।
এর আগে, গত ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যস্থতায় সিরিয়ায় একটি অস্ত্রবিরতি কার্যকরে সম্মত হয় দুই বিবাদমান পক্ষ। তবে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে দেশটির সরকার ব্যাপকভাবে এ অস্ত্রবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করছে বলে অভিযোগ করেন বিদ্রোহীরা। সরকারও বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘনের পাল্টা অভিযোগ আনে। সরকারের বিরুদ্ধে অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে এবং রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ইস্যু গুরুত্ব সহকারে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে শান্তি আলোচনায় অংশগ্রহণ স্থগিত করে প্রধান বিরোধী জোট। এমন অবস্থায় জেনেভায় দুই পক্ষের মধ্যে চলমান শান্তি আলোচনা নিয়ে সংকট দেখা দেয়।
উল্লেখ্য, সিরিয়ায় গত ৫ বছর ধরে চলমান গৃহযুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছে আড়াই লাখেরও বেশি মানুষ। লাখ লাখ মানুষ হয়েছেন ঘরহারা।