গুজরাটের দাঙ্গা : গুলবার্গ গণহত্যায় ২৪জন দোষী সাব্যস্ত
বাংলা সংলাপ ডেস্ক:
এক যুগেরও বেশী সময় পূর্বে ভারতের গুজরাটে মুসলিমবিরোধী দাঙ্গা চলাকালীন আহমেদাবাদ শহরের গুলবার্গ সোসাইটিতে নৃশংস গণহত্যার ঘটনায় ২৪ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন দেশটির বিশেষ আদালত। একইসঙ্গে এ মামলায় অভিযুক্ত ৩৬ জনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়৷ বৃহস্পতিবার আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। আগামী সোমবার দোষীদের বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণার কথা রয়েছে।
বিশেষ আদালতের রায়ে বলা হয়, দোষীদের মধ্যে ১১ জনের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। ২০০২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি একদল উন্মত্ত জনতা গুলবার্গ সোসাইটি আবাসনে আগুন ধরিয়ে দেয়। গোধরা-পরবর্তী এই হামলায় প্রাণ হারান কংগ্রেস দলের সাবেক সংসদ সদস্য এহসান জাফরিসহ ৬৯ জন। এহসান জাফরির স্ত্রী জাকিয়া বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ ৬৩ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতে চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানান। গুজরাট দাঙ্গার সময় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন মোদি।
এই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন অসরভা আসনের বর্তমান বিজেপি কর্পোরেটর বিপিন পটেল। তাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সময়ও তিনি কর্পোরেটর ছিলেন।
জাকিয়ার আবেদনের পর তদন্তে নামে সুপ্রিম কোর্ট গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দল- সিট। তবে, এই ঘটনায় নরেন্দ্র মোদির কোনও হাত নেই বলে রিপোর্টে দাবি করেন তদন্তকারীরা। আর সিটের সে রিপোর্টটি যথাযথ বলে রায় দেন নিম্ন আদালত। সিট তাদের রিপোর্টে ৬৬ জনকে অভিযুক্ত হিসেবে দেখায়।
গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর মামলার শুনানি শেষ হয়। এর প্রায় আট মাস পরে মামলায় রায় ঘোষণা করলেন বিশেষ আদালতের বিচারক পিবি দেশাই। তবে আদালতের দেওয়া রায়ে অসন্তোষ জানিয়েছেন জাকিয়া।
উল্লেখ্য, ২০০২ সালে গুজরাটে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। সেসময় বিভিন্ন জায়গায় হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা হয়। গুজরাট দাঙ্গায় প্রাণ হারান ১ হাজারেরও বেশি মানুষ। নিহতদের বেশিরভাগই মুসলিম। ২০০২ সালের হামলার পর থেকে গুলবার্গ আবাসিক এলাকা এখনো পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে।