সুপার এইটে কী অপেক্ষা করছে?

Spread the love

বাংলা সংলাপ ডেস্কঃ রোমাঞ্চকর ম্যাচ দিয়ে শুরু। নাটকীয়তায় শেষ। ছিল বড় অঘটনও। রাশিয়া বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে সবই দেখলো ফুটবল বিশ্ব। আট ম্যাচের মধ্যে তিনটির নিষ্পত্তি হয় টাইব্রেকারে। অতিরিক্ত সময়ে ম্যাচের ফলাফল হয়নি একটিতেও।
যেখানে ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপে ত্রিশ মিনিটের অতিরিক্ত সময়ে তিন ম্যাচের ফল দেখেন দর্শকরা। টাইব্রেকারে গড়ায় দুই ম্যাচ। ফেভারিট বলতে যে কিছু নেই তার বড় প্রদর্শনী হয়ে গেছে এবারের আসরে।

টাইব্রেকারে গড়ানো তিনটি ম্যাচেই ছিল নাটকীয়তা। স্পেনকে বিদায় করে বড় অঘটনের জন্ম দেয় স্বাগতিক রাশিয়া। এবার অঘটনের শুরুটা হয় গ্রুপ পর্বে শিরোপাধারী জার্মানির বিদায়ের মধ্য দিয়ে। স্পেনের দুইটি পেনাল্টি শট ঠেকিয়ে নায়কের আসনে বসেন রাশিয়ান গোলরক্ষক ইগোর আকিনফিয়েভ। তার আগে ১-১ গোলে শেষ হয় ১২০ মিনিটের খেলা। ক্রোয়েশিয়া-ডেনমার্ক ম্যাচটি ছিল আরো নাটকীয়। খেলা শুরুর চার মিনিটের মধ্যে দুই গোল দেখেন দর্শকরা। পরে আরো দুই ঘণ্টার লড়াই শেষে ১-১ সমতাতেই ম্যাচ গড়ায় পেনাল্টি শুটআউটে। টাইব্রেকারে দুই দলই শট মিসের মহড়ায় নামে। ডেনমার্কের তিনটি শট প্রতিহত করেন ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক দানিয়েল সুবাসিচ। ডেনিশ গোলরক্ষক ক্যাসপার স্মাইকেলের দুর্ভাগ্যই বলতে হবে। ম্যাচের ১১৬তম মিনিটে লুকা মদ্রিচের পেনাল্টি ঠেকিয়ে ম্যাচ টাইব্রেকারে নিয়ে যান তিনি।

টাইব্রেকারে ক্রোয়েশিয়ার দুইটি শট ফিরিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি স্মাইকেল। নাটকীয়তার মধ্য দিয়েই শেষ হয় দ্বিতীয় রাউন্ড। কলম্বিয়ার বিপক্ষে ১-০ গোলে এগিয়ে জয়ের পথে ছিল ইংল্যান্ড। ৯৩ মিনিটের গোলে ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে নেন কলম্বিয়ান ডিফেন্ডার ইয়েরে মিনা। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারের খেলার নিষ্পত্তি হয়। ইংল্যান্ডের তৃতীয় শট ডেভিড ওসপিনা ফিরিয়ে দিলে পাল্লা ঘুরে যায় কলম্বিয়ার দিকে। কিন্তু নাটকের তখন শুরু মাত্র। কলম্বিয়ার চতুর্থ শট বারে লেগে ফিরে আসে। কার্লোস বাকার শেষ শটটি রুখে দিয়ে সতীর্থদের উদযাপনের মধ্যমণি বনে যান ইংলিশ গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ড।

নকআউট পর্বের পাঁচটি ম্যাচের নিষ্পত্তি হয় নির্ধারিত ৯০ মিনিটে। এর মধ্যে সবচেয়ে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচটি হয়ে যায় জাপান ও বেলজিয়ামের মধ্যে। নিজেদের ফুটবল ইতিহাসে প্রথমবার কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার সুবর্ণ সুযোগই হাতছাড়া করে জাপান। দুই গোলে এগিয়ে থেকেও শেষ রক্ষা হয়নি নীল সামুরাইদের। দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়ানো বেলজিয়াম ৯৪ মিনিটের গোলে জাপানের স্বপ্ন ভাঙে। প্রথম ম্যাচে ৭ গোলের থ্রিলারে ফ্রান্সের বিপক্ষে ৪-৩ গোলের হার দেখে মেসির আর্জেন্টিনা। দ্বিতীয় ম্যাচে রোনালদোর পর্তুগালকে ২-১ গোলে হারায় সুয়ারেজ-কাভানির উরুগুয়ে। এক রাতেই সময়ের দুই সেরা ফুটবলারের বিদায় দেখে রাশিয়া বিশ্বকাপ। নকআউট পর্বে সবচেয়ে উজ্জ্বল বলা যায় নেইমারের ব্রাজিলকে। মেক্সিকোর বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচে শেষ পর্যন্ত ২-০ গোলের সহজ জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা। সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ১-০ গোলে শেষ আটের টিকিট কাটে সুইডেন। গত দুই আসরের বাছাইপর্বে বাদ পড়া সুইডিশরা এবার প্রতিপক্ষের জন্য বড় হুমকি বললেও ভুল হবে না।

এবার ২০১৪ বিশ্বকাপের নকআউট পর্বের কথায় আসি। স্বাগতিক ব্রাজিল ও চিলির মধ্যকার প্রথম ম্যাচটি ছিল বেশ উত্তেজনাপূর্ণ। পিছিয়ে থেকেও ১-১ সমতায় ফেরে আলেক্সিস সানচেজের চিলি। ম্যাচের নিষ্পত্তি হয় টাইব্রেকারে। প্রথম পাঁচ শটেই ব্রাজিল দুইটি ও চিলি তিনটি মিস করে। স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে সেলেসাওরা। সেই চিলি এবারের বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব উতরাতে পারেনি। কোস্টারিকার বিপক্ষে (১-১) ইনজুরি সময়ের গোলে ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে নেয় গ্রিস। পেনাল্টি শুটআউটে ৫-৩ ব্যবধানে জয় পায় কোস্টারিকা। তিনটি ম্যাচ শেষ হয় নির্ধারিত ৯০ মিনিটে। মেক্সিকোর বিপক্ষে ইনজুরি সময়ের গোলে ২-১ ব্যবধানের রোমাঞ্চকর জয় পায় নেদারল্যান্ডস। উরুগুয়েকে ২-০ গোলে হারায় কলম্বিয়া। নাইজেরিয়ার বিপক্ষে ইনজুরি সময়ের আত্মঘাতী গোলে ২-০ ব্যবধানের জয় কুড়ায় ফ্রান্স।
অতিরিক্ত সময়ে নিষ্পত্তি হওয়া তিন ম্যাচের প্রথমটি জার্মানি ও আলজেরিয়ার মধ্যকার। ৯০ মিনিটের খেলা থাকে গোলশূন্য। ৯২ ও ১২০ মিনিটে গোল আদায় করে জার্মানি। যোগ করা সময়ে একটি গোল পরিশোধ করে ম্যাচ জমিয়ে তোলে আলজেরিয়া। অল্পের জন্য ম্যাচ টাইব্রেকারে যায়নি। সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ১১৮ মিনিটে করা অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়ার একমাত্র গোলেই জয় দেখে আর্জেন্টিনা। বেলজিয়াম-যুক্তরাষ্ট্র ম্যাচেও ৯০ মিনিটে কোনো গোল হয়নি। অতিরিক্ত সময়ে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে এক গোল পরিশোধ করে যুক্তরাষ্ট্র। শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বেলজিয়াম।

কোয়ার্টার ফাইনাল লাইনআপ:
৬ই জুলাই উরুগুয়ে বনাম ফ্রান্স (বিকেল ৩টা) নিঝনি নভগোরোদ স্টেডিয়াম
৬ই জুলাই ব্রাজিল বনাম বেলজিয়াম (বিকেল রাত ৭টা) কাজান অ্যারেনা
৭ই জুলাই সুইডেন বনাম ইংল্যান্ড ( বিকেল ৩টা) সামারা অ্যারেনা
৭ই জুলাই রাশিয়া বনাম ক্রোয়েশিয়া (বিকেল ৭টা) ফিস্ট অলিম্পিক স্টেডিয়াম


Spread the love

Leave a Reply