মিশরের ফারাও তুতেনখামুনের সমাধিতে প্রথমবার ঢুকে যা দেখা গিয়েছিল

Spread the love

উনিশশো বাইশ সালে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলির একটি, মিশরের কিশোর সম্রাট ফারাও তুতেনখামুনের সমাধিস্থল খুঁজে পাওয়া যায়। সম্পূর্ণ সোনায় মোড়া এই সমাধি আবিষ্কারের প্রথম মুহূর্তগুলো কেমন ছিল?

উনিশশো বাইশ সালের নভেম্বর মাস। লাক্সরের কাছে প্রাচীন মিশরের রাজাদের উপত্যকা।

প্রাণহীন শুষ্ক পাথরের নিচে এক জায়গায় ৩০০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে রৌদ্রের তীব্র খরতাপ থেকে লুকিয়ে রয়েছে প্রাচীন মিশরের কিশোর সম্রাট ফারাও তুতেনখামুনের দেহাবশেষ।

বছরের পর বছর ধরে অনুসন্ধানের পর ইংরেজ প্রত্নতত্ত্ববিদ হাওয়ার্ড কার্টার একদিন টের পেলেন তিনি যা খুঁজছিলেন শেষ পর্যন্ত তিনি তা পেয়েছেন।

তার সেই অভিজ্ঞতার কথা তিনি লিখেছেন তার জার্নালে।

তিনি জানালেন, “খুবই আস্তে কাজ এগুচ্ছিল। আর আমার অধীর হয়ে তা দেখছিলাম।

“সমাধির প্রধান দরজার নীচের অংশে প্যাসেজে পাথরের টুকরার ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে ফেলা হলো।

“ধীরে ধীরে পুরো দরজার পথটি শেষ পর্যন্ত আমাদের সামনে পরিষ্কার হয়ে গেল। এসে গেল সেই চরম মুহূর্ত।”

সোনার তৈরি এই সারকোফ্যাগাসের মধ্যে রাখা ছিল তুতেনখামেনের কফিন
সোনার তৈরি এই সারকোফ্যাগাসের মধ্যে রাখা ছিল তুতেনখামুনের কফিন

হাওয়ার্ড কার্টার সেই ১৯১৪ সাল থেকে প্রাচীন ফারাওদের সমাধিতে খনন কাজ চালাচ্ছিলেন।

কিন্তু সে সময় অনেক লোক মনে করতো, মিশরীয় রাজাদের বিশাল সমাধিক্ষেত্র ‘ভ্যালি অফ দ্য কিংস’-এর সবগুলো সমাধিই খুঁজে পাওয়া গেছে। আর কিছু বাকি নেই।

এই আবিষ্কারের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত এমনকি হাওয়ার্ড কার্টারকে যিনি টাকা-পয়সা দিয়ে সাহায্য করছিলেন সেই লর্ড কার্নারভনও এনিয়ে সন্দিহান ছিলেন।

কিন্তু তিনি মি. কার্টারকে শেষবারের মতো একটি সুযোগ দিতে চেয়েছিলেন।

মি. কার্টার তার জার্নালে লিখেছেন, ভ্যালি অফ দ্য কিংস-এ এটি ছিল আমাদের খনন কাজ চালানোর শেষ মৌসুম।

পর পর ছয়টি মৌসুমের পুরোটা জুড়ে আমরা খনন কাজ চালিয়েছি এবং মৌসুমের পর মৌসুম ফলাফল ছিল শূন্য।

“কয়েক মাস ধরে আমরা টানা কাজ করেছি, কিন্তু কিছুই পাইনি। কেবল একজন খননকারীই টের পাবেন যে কতটা মরিয়া হয়ে উঠেছিলাম আমরা। কতটা হতাশাজনক পরিস্থিতি ছিল।”

“প্রায় ধরেই নিয়েছিলাম যে আমরা হেরে গেছি, এবং ঐ উপত্যকা ছেড়ে অন্য কোথাও গিয়ে আমাদের ভাগ্য পরীক্ষা করার জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম।”

“সেই রকম হতাশাজনক পরিস্থিতিতে শেষবারের মতো আমরা যখন মাটিতে কোদাল চালালাম তখনই আমরা এমন একটা কিছু আবিষ্কার করলাম যা ছিল আমাদের স্বপ্নেরও অতীত।”

তারিখটা ছিল ৪ঠা নভেম্বর। হাওয়ার্ড কার্টার লিখেছেন, “খনন কাজ বন্ধ হওয়ার অস্বাভাবিক নীরবতার মাঝে আমি বুঝতে পারলাম যে অস্বাভাবিক কিছু একটা ঘটেছে, এবং আমাকে জানানো হলো যে পাথরের মধ্যে কাটা একটি সিঁড়ির প্রথম ধাপ খুঁজে পাওয়া গেছে।”

অনেকটা হঠাৎ করেই সিঁড়ির প্রথম ধাপটা আবিষ্কৃত হয়েছিলো।

এটি খুঁজে পেয়েছিল এক তরুণ যে সমাধিক্ষেত্রের কর্মীদের জন্য পানি নিয়ে আসতো।

মি. কার্টার বুঝতে পেরেছিলেন যে ঐ সিঁড়ি তাদের নিয়ে যাবে কোনো এক ভূগর্ভস্থ সমাধিতে।

তিনি লিখেছেন, “একটা ভয়ঙ্কর সম্ভাবনা ছিল যে সমাধিটি হয়তো অসমাপ্ত। সেটার নির্মাণ হয়তো কখনই সম্পূর্ণ হয়নি, কিংবা হলেও সেটি কখনও ব্যবহার করা হয়নি।”

“যদি এর নির্মাণ সমাপ্ত হয়েও থাকে, তাহলেও আরেকটা হতাশাজনক সম্ভাবনা ছিল যে এর সব সম্পদ হয়তো প্রাচীনকালেই সম্পূর্ণভাবে লুঠ হয়ে গিয়েছিল।”

“এর বিপরীতে আরও একটা সম্ভাবনা ছিল যে এই সমাধিক্ষেত্রটিতে হয়তো কেউ এখনও ঢুকতে পারেনি, কিংবা ঢুকলেও এটি হয়তো আংশিকভাবে লুণ্ঠিত হয়েছে।”

“যাহোক, অদম্য উত্তেজনার সাথে আমরা দেখলাম সিঁড়ির নিচের ধাপগুলি থেকে একের পর এক ইট-পাথর সরিয়ে ফেলা হলো এবং অন্ধকার সিঁড়িটি একটু একটু করে আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে উঠলো।”

“সন্ধ্যার দিকে সিঁড়ির ১২টি ধাপ পার হওয়ার পর একটি দরজার ওপরের অংশ দেখা গেল, যেটি ছিল বন্ধ করা, প্লাস্টার করা এবং সিল-গালা করা। সমাধিক্ষেত্রে ছিল একটি বন্ধ দরজা। তার মানে সত্যিই সেটা ছিল এমন একটি সমাধি যেখানে কেউ আগে ঢুকতে পারেনি।”

তুতেনখামুনের সিংহাসন
তুতেনখামুনের সিংহাসন

প্রচণ্ড উত্তেজনায় হাওয়ার্ড কার্টার দিশেহারা হয়ে গিয়েছিলেন।

কিন্তু সে সময় লর্ড কার্নারভন যেহেতু ইংল্যান্ডে ছিলেন, তাই তিনি লুঠপাটের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য সমাধিক্ষেত্রটি ঘিরে ফেলার ব্যবস্থা করেন এবং লর্ড কার্নারভনের আসার জন্য প্রায় তিন সপ্তাহ সময় অপেক্ষা করেন।

শেষ পর্যন্ত তার মেয়েকে সাথে নিয়ে লর্ড কার্নারভন মিশরে এসে হাজির হলেন। ২৬শে নভেম্বর তারা সবাই একসাথে দরজা পেরিয়ে একটি ভূগর্ভস্থ পথের মাথায় এসে দাঁড়ালেন, যেটি থেকে সব জঞ্জাল আগেই পরিষ্কার করা রাখা হয়েছিল।

সেই অভিজ্ঞতার কথা মি. লিখেছেন তার জার্নালে, “বিকেলে মাঝমাঝি সময়ে বাইরের দরজা থেকে মাটির ৩০ ফুট নিচে আমরা দ্বিতীয় একটি বন্ধ দরজার সামনে এসে পৌঁছালাম।”

“এই দরজার ওপর যেসব সিলমোহর লাগানো ছিল তা ছিল কিছুটা অস্পষ্ট, কিন্তু তারপরও সেগুলি যে সম্রাট তুতেনখামুনের তা ঠিকই বোঝা যাচ্ছিল।”

“কাঁপা কাঁপা হাতে দরজার চৌকাঠের ওপরে বামদিকের কোণে হাতুড়ি মেরে আমি একটি ছোট ফাটল তৈরি করলাম।”

মেয়েকে সাথে নিয়ে লাক্সরে হাজির হয়েছিলেন লর্ড কার্নারভন (বাঁ থেকে দ্বিতীয়)
মেয়েকে সাথে নিয়ে লাক্সরে হাজির হয়েছিলেন লর্ড কার্নারভন (বাঁ থেকে দ্বিতীয়)

“লোহার রডটি যতদূর পর্যন্ত যেতে পারে সেই জায়গা দিয়ে দেখা গেল ভেতরে অন্ধকার এবং ফাঁকা। সেখানে যে প্যাসেজ ছিল সেটি ছিল ফাঁকা। আমাদের পথের আগের প্যাসেজটির মতো এটিকে ইট-পাথর দিয়ে ভরে দেয়া হয়নি।

“সম্ভাব্য বিপজ্জনক গ্যাসের বিরুদ্ধে সতর্কতা হিসাবে একটি মোমবাতি জ্বালিয়ে পরীক্ষা চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হলো। এবং তারপর গর্তটি একটু প্রশস্ত করে মোমবাতিটি ঢুকিয়ে আমি ভেতরে উঁকি দিলাম।

“প্রথমে আমি কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না। বন্ধ চেম্বার থেকে গরম বাতাস বেরিয়ে আসছিল, আর তার ফলে মোমবাতিটি দপদপ করছিল। এরপর আমার চোখ স্বল্প আলোয় অভ্যস্ত হওয়ার সাথে সাথে মনে হলো ধীরে ধীরে কুয়াশার ভেতর থেকে ঘরের ভেতরের দৃশ্য ফুটে উঠছে।”

“অদ্ভুত ধরনের প্রাণী, নানা ধরনের মূর্তি, আর সোনা – সবকিছু সোনায় ঝলমল করছে।”

“পাশে দাঁড়িয়ে থাকা অন্যরা মনে করছিল আমি যুগ যুগ ধরে গর্তের মধ্যে মাথা দিয়ে রয়েছি। সত্যি, বিস্ময়ে আমি একেবারে বোবা হয়ে গিয়েছিলাম।”

“লর্ড কার্নারভন যখন এই সাসপেন্স আর সহ্য করতে পারছিলেন না, তখন তিনি উদ্বিগ্নভাবে আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন: আপনি কি কিছু দেখতে পাচ্ছেন?”

“আমার মুখ থেকে কথা সরছিল না। আমি শুধু বলতে পেরেছিলাম: হ্যাঁ, চমৎকার সব জিনিস। বিস্ময়কর সব জিনিস।”

তুতেনখামেনের সমাধিকক্ষে ঢোকার রাস্তা পরীক্ষা করছেন হাওয়ার্ড কার্টার (সামনে হাঁটু গেড়ে বসা)
তুতেনখামুনের সমাধিকক্ষে ঢোকার রাস্তা পরীক্ষা করছেন হাওয়ার্ড কার্টার (সামনে হাঁটু গেড়ে বসা)

হাওয়ার্ড কাটার একটু কমিয়ে বলেছিলেন। তিনি এমন একটি মিশরীয় পুরাকীর্তির সংগ্রহের দিকে তাকিয়ে ছিলেন যা ছিল আগের যেকোনো আবিষ্কারের চেয়েও বেশি চমৎকার।

পরে প্রমাণিত হয়েছিল, সে ছিল নিছক একটি অ্যান্টে-চেম্বার, প্রধান ঘরের বাইরে ছোট একটি ঘর।

এটি পেরিয়ে আরও একটি ছোট ঘর ছিল। সেটিও ছিল ধন-রত্নে পরিপূর্ণ।

শুধু এই ঘর দুটির জিনিসপত্রের তালিকা তৈরি করতে এবং ছবি তুলতেই তিন মাস সময় লেগে গিয়েছিল।

শুধু তাই না। প্রত্নতাত্ত্বিকদের দলটি তখন বুঝতে পেরেছিল যে তারা নিশ্চিতভাবেই কোন ফারাওয়ের চির-বিশ্রামের জায়গাটি খুঁজে পেয়েছে।

ঐ ছোট ঘরের একপাশের দেয়ালে ছিল আরেকটি সিল করা দরজা।

তুতেনখামেনের সমাধিকক্ষের গোপন দরজা। এটা দিয়েই হাওয়ার্ড কার্টার মূল কক্ষের ভেতরে ঢুকেছিলেন
তুতেনখামুনের সমাধিকক্ষের গোপন দরজা। এটা দিয়েই হাওয়ার্ড কার্টার মূল কক্ষের ভেতরে ঢুকেছিলেন

মি. কার্টার তার জার্নালে লিখেছেন, “আমার প্রথম কাজ ছিল যত্নের সাথে দরজার ওপরে কাঠের চৌকাঠটি শনাক্ত করা। তারপরে খুব সাবধানে আমি সেখানকার প্লাস্টার সরিয়ে ফেললাম এবং তারপর ওপর থেকে ছোট ছোট পাথরগুলিকে এক এক করে তুলে ফেললাম।

“প্রত্যেকবার থেমে গিয়ে ভেতরে উঁকি মেরে দেখার লোভ আমি আর সম্বরণ করতে পারছিলাম না। প্রায় দশ মিনিট ধরে কাজ করার পরে আমি উঁকি মারার মতো যথেষ্ট বড় একটি গর্ত তৈরি করলাম এবং একটি বৈদ্যুতিক টর্চ ভেতরে ঢুকিয়ে দিলাম।”

“সেই আলোয় একটি আশ্চর্যজনক দৃশ্য দেখা গেল। সেখানে দরজা থেকে এক গজের মধ্যে যতদূর দেখা গেল, মূল চেম্বারের প্রবেশদ্বারটি আটকানো রয়েছে এবং একটি সোনার প্রাচীর দিয়ে চারিদিক ঘেরা রয়েছে।”

তুতেনখামেনের সমাধির চারপাশে দাঁড়ানো সোনার মূর্তি
তুতেনখামুনের সমাধির চারপাশে দাঁড়ানো সোনার মূর্তি

প্রত্নতাত্ত্বিকের দলটি কিশোর ফারাওয়ের মূল কবরস্থানে এসে হাজির হলো, যার মধ্যে নিশ্চিতভাবে ছিল তার সারকোফ্যাগাস এবং মমি করা দেহাবশেষ।

তিনি লিখেছেন, “আমরা যে মূল সমাধি কক্ষে হাজির হয়েছি তা নিয়ে কোনও সন্দেহই ছিল না। কারণ, সেখানে আমাদের মাথা ছাড়িয়ে দাঁড়িয়ে ছিল সোনার গিল্টি করা বেশ কতগুলি মন্দির।”

“তারই একটির নিচে বালক সম্রাটকে শুইয়ে রাখা হয়েছিল। এই সারকোফ্যাগাসটি এতটাই বিশাল ছিল যে সেটি পুরো জায়গাটিকে ঢেকে ফেলেছিল।”

চেম্বারের ওপর থেকে নীচ পর্যন্ত সবকিছু ছিল সোনায় মোড়ানো। এর চারপাশে ছিল উজ্জ্বল নীল ফিয়নের প্যানেল।

সেখানে খোদাই করা ছিল নানা ধরনের যাদুর প্রতীক, যা প্রয়াত সম্রাটের শক্তি এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

“সমাধির চারপাশে মাটিতে রাখা ছিল অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় প্রয়োজন হয় এমন বেশ কিছু জিনিসপত্র। ফারাওয়ের জন্য উত্তর প্রান্তে রাখা ছিল সাতটি জাদুর বৈঠা যেগুলো সম্রাট ব্যবহার করবেন পরলোকের নদী পার হওয়ার কাজে।”

ফারাও তুতেনখামেনের সোনার তৈরি ছুরি। এটি আনুষ্ঠানিকতার জন্য ব্যবহৃত হতো
ফারাও তুতেনখামুনের সোনার তৈরি ছুরি। এটি আনুষ্ঠানিকতার জন্য ব্যবহৃত হতো

হাওয়ার্ড কার্টার লিখেছেন, “আপনি যে মেঝেতে দাঁড়িয়ে আছেন সেই মেঝেতে মানুষের সর্বশেষ পদচিহ্ন পড়ার পর হয়তো তিন হাজার, চার হাজার বছর কেটে গেছে।

“এবং তারপরও আপনি দেখতে পাচ্ছেন চারপাশের সাম্প্রতিক জীবনের লক্ষণ – দরজা তৈরির জন্য সুরকির আধা খালি বালতি, কালো হয়ে যাওয়া প্রদীপ, কাঁচা রঙের ওপর মানুষের আঙুলের ছাপ, দোরগোড়ায় রাখা বিদায়ের মালা।”

“দেখে আপনার মনে হবে ঘটনাটা ঘটেছে মাত্র গতকাল। আপনি যে বাতাসে শ্বাস নিচ্ছেন তা হাজার হাজার বছর ধরে অপরিবর্তিত রয়েছে। অন্তিম শয়ানের জন্য যারা মমিটিকে সেখানে এনেছিলেন সেই বাতাস আপনি তাদের সঙ্গে ভাগ করে নিচ্ছেন।”

“এসব ছোটখাট জিনিসের মধ্যে দিয়ে মহাকালের থাবা যেন ব্যর্থ হয়ে গিয়েছে। তখন নিজেকে আপনার একজন অনুপ্রবেশকারী বলে মনে হবে।”

প্রয়াত সম্রাটের গলায় শেষবারের মতো পরানো হয়েছিল ফুলের মালা
প্রয়াত সম্রাটের গলায় শেষবারের মতো পরানো হয়েছিল ফুলের মালা

ফারাও তুতেনখামুনের এসব ধন-সম্পদ ১৯২২ সাল থেকে সারা বিশ্বে প্রদর্শন করা হয়েছে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ তা দেখেছে।

কিন্তু মরুভূমির বালি আর পাথরের নিচে যারা প্রথমবারের মতো এই দৃশ্য দেখেছিলেন তাদের মতো এতটা আন্দোলিত বোধহয় কেউ হতে পারেননি।

তার জার্নালে মি. কার্টার লিখেছেন, “অ্যান্টে-চেম্বারের মধ্যে দাঁড়িয়ে আমি দেখছিলাম তাদের মুখ যারা একের পর এক সমাধি কক্ষের দরজা দিয়ে বেরিয়ে আসছিলেন। তাদের প্রত্যেকের চোখে ছিল বিস্মিত, বিহ্বল দৃষ্টি।”

“এবং তারা প্রত্যেকে বাইরে আসার পর বিস্ময়ের ধাক্কা সামাল দেয়ার জন্য অবচেতনভাবেই হাত দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলছিলেন। সেই দৃশ্য ছিল সত্যিই অবর্ণনীয়।”

“সমাধিস্থলের দৃশ্য আমাদের মনে যে আবেগ জাগিয়ে তুলেছিল তা প্রকাশ করার মতো কোন ভাষা আমাদের ছিল না।”

“আমি নিশ্চিত, সেটা ছিল এমন একটি অভিজ্ঞতা যা উপস্থিত আমাদের কারোরই ভুলে যাওয়ার নয়।”


Spread the love

Leave a Reply