সিটি ব্যাংক কর্মকর্তাদের যোগসাজশে এটিএম জালিয়াতি : বিদেশীসহ ৪ জন রিমান্ডে

Spread the love

The-City-Bank-Limitedনিজস্ব প্রতিবেদক

সিটি ব্যাংকের তিন কর্মকর্তার যোগসাজশেই ঢাকায় বেশ কয়েকটি এটিএম বুথ থেকে গ্রাহকদের বিপুল পরিমান টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এ ঘটনার মূল হোতা পোল্যান্ডের নাগরিক পিটার ও সিটি ব্যাংকের তিন কর্মকর্তাকে গ্রেফতারের পর ৬ দিন করে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে এ ঘটনার সিসি টিভি ফুটেজে যে বিদেশিকে দেখা গেছে সেই ব্যক্তি পিটার স্কেজেফান মাজুরেক। তবে আরেকটি সূত্র বলছে, পোল্যান্ডের ভুয়া পাসপোর্ট নিয়ে বাংলাদেশে আসা পিটার আসলে ইউক্রেইনের নাগরিক।

রোববার সন্ধ্যায় গুলশান এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশের একটি দল। আর তাকে সহযোগিতার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় সিটি ব্যাংকের তিন কর্মকর্তা- রেজাউল করিম শাহীন, রেফাত আবেদিন রনি ও মোকসেদ আলি মাকসুদ। সোমবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিংএ ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।

এটাই বাংলাদেশে এটিএম কার্ড জালিয়াতির প্রথম ঘটনা। স্বভাবতই দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হন সিসি টিভির ফুটেজে ধরা পড়া ওই বিদেশি নাগরিক। গত ৭ ও ৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে কার্ড জালিয়াতির মাধ্যমে ইবিএল, ইউসিবি আর সিটি ব্যাংকের গ্রাহকদের অর্থ লোপাটের ঘটনা ঘটে। এটিএম বুথে স্ক্যামিং ডিভাইস বসিয়ে এই তিনটি ব্যাংকের ৩৬ জন গ্রাহকের ২০ লাখ ৬০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি।

১৪ ফেব্রুয়ারি ইউসিবি কর্তৃপক্ষ বনানী থানায় একটি মামলা দায়েরের ৭ দিনের মাথায় গ্রেফতার হলো ওই ঘটনার মূল হোতা। গ্রেফতার হওয়া এই ব্যক্তির কাছ থেকে পোল্যান্ডের পাসপোর্ট ছাড়াও জার্মানির পরিচয়পত্র উদ্ধার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

পাসপোর্ট অনুযায়ী তার নাম পিটার সিজোফেন। অন্যের পাসপোর্ট চুরি করে ব্যবসায়ীর মিথ্যা পরিচয় দিয়ে একবছর আগে বাংলাদেশে ঢোকা এই জালিয়াতের প্রকৃত নাম এবং জাতীয়তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে গোয়েন্দাদের। গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, এরই মধ্যে বাংলাদেশি এক নারীকে বিয়ে করে সন্তানের জনক হওয়া পিটারের এ দেশে এটাই প্রথম জালিয়াতির ঘটনা নয়।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, ইতোপূর্বেও সে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। কিন্তু সেগুলো আন্তর্জাতিক কার্ড ব্যবহার করে বিদেশিদের অ্যাকাউন্ট থেকে নিয়েছে। ফলে সেই দেশে ম্যাসেজ গেছে। যে কারণে বাংলাদেশের কোন ব্যাংকে টাকার কোনো ঘাটতি হয়নি। সে আমাদের কাছে স্বীকারও করেছে যে, বাংলাদেশিদের অ্যাকাউন্টে টাকা তুলে নেওয়ায় সে ধরা পড়েছে।

গোয়েন্দা পুলিশ আরো জানিয়েছে, জালিয়াতিতে জড়িত আরো ২ বিদেশি নাগরিক এ ঘটনা জানাজানি হওয়ায় দেশ ছেড়ে পালিয়েছে।

এদিকে, এটিএম বুথে কার্ড জালিয়াতির ঘটনায় গোয়েন্দা পুলিশের হাতে আটক সিটি ব্যাংকের তিন কর্মকর্তার বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে বলে জানিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।


Spread the love

Leave a Reply