‘স্বপ্নেও কখনো ভাবিনি, লন্ডনের মেয়র হব’
বাংলা সংলাপ ডেস্ক:
দীর্ঘ ৮ বছরের কনজারভেটিভ রাজত্বের অবসান ঘটিয়ে লন্ডনের প্রথম মুসলিম মেয়র হিসেবে শপথ নিলেন লেবার পার্টির সাদিক খান। সাউথওয়ার্ক ক্যাথেড্রালে এক অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যের রাজধানীর নগরপিতার দায়িত্ব আনুষ্ঠানিকভাবে বুঝে নিয়েছেন তিনি।
যুক্তরাজ্যের প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা সাদিক খান তার ওপর আস্থা রাখার জন্য লন্ডনবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শহরের আবাসিক সমস্যার সমাধান, পরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি না করা ও ভালো বেতনের চাকুরীর সুযোগ বাড়াতে নিজের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন।
শপথ অনুষ্ঠানে প্রবেশের সময় সবাই তাকে করতালি দিয়ে অভিনন্দন জানায়। শপথ নেয়ার পরে দেয়া বক্তব্যে সাদিক বলেন, আমার নাম সাদিক খান এবং আমি লন্ডনের মেয়র। আমি এখানেরই একটি কাউন্সিল এস্টেটে বড় হয়েছি কিন্তু কোনো দিন স্বপ্নেও ভাবিনি যে আমি এখানে লন্ডনের মেয়র হিসেবে দাঁড়াতে পারবো। আমি এখানে আসতে পেরেছি কারণ এই শহর আমাকে এবং আমার পরিবারকে সেটার সুযোগ দিয়েছে।
আমার তীব্র আকাঙ্ক্ষা, যে শহর আমাকে এই সুযোগ দিয়েছে সেই সুযোগ এর বাসিন্দাদের জন্য নিশ্চিত করা। আমি চাইব, লন্ডনে চমৎকার বাড়ি আর বেশি বেতনের চাকুরীর সুযোগ বাড়ুক। তিনি বলেন, লন্ডন ইসলামোফোবিয়ার বিপক্ষে রায় দিয়েছে এবং কাজের জন্য উপযুক্ত লোককেই বেছে নিয়েছে। সাদিক আরো যোগ করেন, আমি সবচেয়ে স্বচ্ছ ও জনসংযুক্ত ও সহায়ক প্রশাসনের নেতৃত্ব দিতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। লন্ডনের মেয়র হিসেবে নগরের সব প্রত্যেকটি ছোট সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিও আমি।
পাকিস্তানি বাস ড্রাইভারের আট সন্তানের একজন সাদিক খানের জন্ম ১৯৭০ সালে দক্ষিণ লন্ডনে। ভাইবোনদের মাঝে পঞ্চম সাদিক সাউথ লন্ডনের টুটিং এলাকায় বেড়ে উঠেন। রাজনীতিতে যুক্ত হবার আগে, একজন মানবাধিকার আইনজীবী হিসেবে কাজ করেছেন সাদিক খান। নির্বাচনী প্রচারণার সময় কনজারভেটিভ পার্টির পক্ষ থেকে সাদিক খানের মুসলিম পরিচয়কে সামনে এনে নেতিবাচক প্রচারণা চালানো হয়েছিল। এমনকি তার সঙ্গে উগ্রপন্থীদের যোগাযোগ আছে এমন অভিযোগ তোলা হলেও নির্বাচনে এর কোন প্রভাব পড়েনি।
শপথ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন লেবার পার্টির সাবেক নেতা এড মিলিব্যান্ড ও থেসপিয়ান স্যার ইয়ান ম্যাককেলেন। লেবার পার্টির এমপি ডেভিড ল্যামি বলেছেন, আমরা যদি কখনো অশ্বেতাঙ্গ প্রধানমন্ত্রী পাই, সেটা কেবল সম্ভব হবে সাদিক যা অর্জন করেছে তার জন্য। এই বিজয়কে গত বছর পার্টির দায়িত্ব নেওয়া জেরেমি কারবিনেরও বিজয় হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে।